নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভয়াবহ আগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হাশেম ফুডস লিমিটেডের কারখানা পরিদর্শনে গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বিএনপির দুই পক্ষ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার হাসেম ফুডস কারখানার সামনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এ সংঘর্ষে অন্তত ২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড লিমিটেড কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল। ঘটনাস্থলে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে অবস্থান নেয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের দুপক্ষে সংঘর্ষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুর প্রায় আড়াইটার দিকে বিএনপির প্রতিনিধি দল হাসেম ফুড লিমিটেডের মুল গেইটের সামনে উপস্থিত হয়। সেখানে কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশে অবস্থান নেয়াকে কেন্দ্র করে তাদের সামনেই বিএনপির দু’পক্ষ হাতাহাতি ও বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। সেখানে কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে শান্ত হয় পরিস্থিতি। এরপর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ চলে যান।
তারা যাওয়ার পর হাসেম ফুড লিমিটেড কারখানার সামনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বিএনপির দু’পক্ষের নেতাকর্মীরা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ইটপাটকেল ও সংঘর্ষে নিউজটোয়েন্টিফোর টিভির ক্যামেরাম্যান মাকসুদুল আলম তুষার, গ্লোবাল টেলির জাহাঙ্গীর মাহমুদ, বাংলাদেশ বুলেটিনের সাজেদুর রহমান, তারাব পৌর বিএনপির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন, ছাত্রদল নেতা মাসুম বিল্লাহ, পারেভজ, মামুনসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। এসময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল উপজেলার কর্নগোপ এলাকার হাসেম ফুড এন্ড বেভারেজ কারখানার ভবন পরিদর্শনে আসেন। এসময় কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে সামনের সারিতে দাঁড়ানো নিয়ে জেলা বিএনপির সহসভাপতি নাসির উদ্দিন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপুকে ধাক্কা মারেন বলে অভিযোগ করেন উপজেলা যুবদলের আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন।
এ নিয়ে গেইটের সামনে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে দুই গ্রুপের সদস্যরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সেজান জুস কারখানায় আগুনে পুড়ে ৫২জন শ্রমিক মৃত্যুবরণ করেছেন। আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও অনেকে। এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ ও আহতদের সুচিকিৎসার দাবি জানিয়েছে দলটি।
গতকাল দলটির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) সকাল ১১টায় বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে বিএনপি’র একটি প্রতিনিধি দল নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জে পুড়ে যাওয়া ফ্যাক্টরি পরিদর্শনে যাবেন।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের সেজান জুসের কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড কেড়ে নিয়েছে ৫২টি প্রাণ। বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেলে অগ্নিকাণ্ডের পর রাতে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও প্রায় ২০ ঘণ্টা পর শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুরে ওই ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও ৪৯ মরদেহ উদ্ধারের তথ্য জানায় ফায়ার সার্ভিস।
এসব মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। ডিএনএন পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করে মরদেহগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/২১৪৫
আপনার মতামত জানানঃ