স্বল্পোন্নত দেশসমূহের জন্য বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট মেধাস্বত্ব (টিআরআইপিএস) বাতিলের সুবিধা আরও ১৩ বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছে। দীর্ঘ নয় মাস বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সদস্য দেশগুলোর মধ্যে দেন-দরবারের পর স্বল্পোন্নত দেশের এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব ট্রিপস কাউন্সিলে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেনেভাতে রাষ্ট্রদূত মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আপস-আলোচনাটি মোটেও মসৃণ ছিল না। উন্নত দেশসমূহ, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন স্বল্প সময়ের বেশি ছাড় দিতে কোনোভাবেই রাজি হচ্ছিল না। অবশেষে বাংলাদেশের নেতৃত্বে আগের তুলনায় পাঁচ বছরের অধিক সময় পাওয়া গেছে। সেই হিসেবে এই বিশেষ সুবিধা আগামী ১ জুলাই ২০৩৪ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এই অর্জনে আমি ও আমার সহকর্মীরা আনন্দিত।
উল্লেখ্য ১৯৯৫ এ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা কার্যক্রম শুরু করার সময় স্বল্পোন্নত দেশগুলির জন্য ১০ বছরের ট্রিপস অব্যহতি সুবিধা দেওয়া হয় যা পরবর্তীতে দুই দফায় ১৫ বছর বৃদ্ধি করে ২০২১ এর জুন ৩০ এ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশের নেতৃত্বের সবাই প্রশংসা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশগুলি আজকে সমাপনি বক্তব্যে- বাংলাদেশের সঙ্গে ভবিষ্যতে আরও কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করে।’
তিনি বলেন, ভারত,চীন, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো উন্নয়নশীল দেশগুলির সঙ্গে আমরা সবসময় যোগাযোগ রক্ষা করেছি এবং তারা আমাদের প্রথম থেকে সমর্থন দিয়েছিল।
বাংলাদেশ কতটুকু সুবিধা পাবে
২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ হবে। যেহেতু আজকের সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র স্বল্পোন্নত দেশগুলির জন্য প্রযোজ্য সেজন্য ২০২৬ এর পরে বাংলাদেশের এই সুবিধা পাওয়ার কথা নয়।
এ বিষযে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা হাল ছেড়ে দেইনি। বাংলাদেশ বা অন্য যেকোনো দেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ হলেই যেন সব সুবিধা বাতিল না করা হয় সেই বিষয়ে আলোচনার প্রস্তাব আমরা ইতিমধ্যেই দিয়ে রেখেছি।’
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা ভালো করে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে যাচ্ছি এবং সেজন্য যদি সব সুবিধা বাতিল করা হয় তবে সেটি হবে আমাদেরকে শাস্তি দেওয়ার সামিল। এই বিষয়টি নিয়ে জেনারেল কাউন্সিলে আলোচনার পরে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, নতুন প্রস্তাবের ওপর যে আলোচনা চলছে সেখানেও নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর দেবব্রত চক্রবর্তি বলেন, এই আলোচনার সিদ্ধান্ত কবে হবে সেটি বলা মুশকিল তবে আমাদের অগ্রাধিকার থাকবে আলোচনাটি জিইয়ে রাখা যাতে করে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে টেকসইভাবে উত্তরণ সম্ভব হয়।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১২৪১
আপনার মতামত জানানঃ