সেতুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পেরিয়ে গেছে ৮৬ বছর। কিন্তু সেতুর ওপর দিয়ে রেল চলাচল বন্ধ হয়নি। এই সেতুটি যদিও এখন চরম ঝুঁকিপূর্ণ, তবু প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী ও মালপত্র নিয়ে আগের মতোই চলাচল করছে রেলগাড়ি। বলা হচ্ছে তিস্তা রেলসেতুর কথা। প্রায় দ্বিশতবর্ষী এ সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে মানুষের উপকার করে আসলেও এখন যেকোনো সময় এটি হয়ে উঠতে পারে বিরাট বিপর্যয়ের কারণ।
বর্তমানে সেতু দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১৫টির মতো ট্রেন লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে চলাচল করছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও এভাবে ব্যবহার হতে থাকায় যে কোনো মুহূর্তে এখানে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, রংপুরের সঙ্গে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রমের রেল যোগাযোগের জন্য তিস্তা রেল সেতু নির্মিত হয়েছিল ১৮৩৪ সালে। বর্তমানে এ সেতুর বয়স ১৮৬ বছর। নির্মাণের সময় সেতুটির মেয়াদ ধরা হয়েছিল ১০০ বছর। এ হিসাবে মেয়াদ শেষের পর ৮৬ বছর পার করেছে এ সেতু। এর একাংশ রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা এবং অপর অংশ পড়েছে লালমনিরহাট সদর উপজেলায়।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সেতুটিতে মিত্রবাহিনীর বোমায় একটি গার্ডার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে ১৯৭২ সালে সেতুটি পুনরায় চালু করা হয়। ১৯৭৮ সালে ট্রেনের পাশাপাশি সড়ক যোগাযোগ শুরু করা হয়। তখন থেকে সেতু দিয়ে ট্রেন ও যাত্রীবাহী বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। এভাবে ক্রমেই সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে থাকে।
২০০১ সালে রেল সেতুর পাশে তিস্তা সড়ক সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বতর্মান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তা সড়ক সেতু উদ্বোধনের পর তা যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। আর সড়ক সেতু চালু হওয়ার পর মেয়াদোত্তীর্ণ রেল সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হলেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়।
রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, মেয়াদোত্তীর্ণ তিস্তা রেল সেতুর পাশেই আরেকটি নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে। এরই মধ্যে সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা হতে নিয়েছে রেল বিভাগ। এ জন্য প্রাথমিক সমীক্ষাও করা হয়েছে। নকশা তৈরি হয়েছে। খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কাজ হাতে নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, সারা দেশের রেলপথ ব্রডগেজে রূপান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। পার্বতীপুর থেকে কাউনিয়া পর্যন্ত ব্রডগেজ লাইন স্থাপনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে রংপুরে ট্রেনের সংখ্যা বাড়বে।
Available for everyone, funded by readers. Every contribution, however big or small, makes a real difference for our future. Support to State Watch a little amount. Thank you.
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ