থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রাইয়ুথ চান ওচার পদত্যাগের দাবিতে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাজধানী ব্যাংককের রাজপথে বিক্ষোভ-মিছিল করেছেন। রাজতন্ত্র ও রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে এ বিরাট সমাবেশ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সরকারি বিধি নিষেধ উপেক্ষা করেই বিক্ষোভকারীরা রাজপথে সমবেত হন। বিক্ষোভকারীদের নেতা জাতুপাত পাই দাওদিন বলেন, সংবিধান অবশ্যই জনগণের কাছ থেকে আসতে হবে। প্রধানমন্ত্রী প্রাইয়ূথের কিছু সমর্থকও আজ বিক্ষোভ মিছিল করেন। ১৯৩২ সালে থাইল্যান্ডের সম্পূর্ণ রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বার্ষিকী উপলক্ষে তারা এই বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন।
রাজতন্ত্র সম্পর্কে জাতুপাত বলেন, ৮৯ বছর ধরে আমরা সম্পূর্ণ কর্তৃত্ববাদের অধীনে রয়েছি যেখান থেকে কাঙ্খিত উন্নয়ন আসেনি।
বিক্ষোভকারীরা থাইল্যান্ডে সামরিক শাসনের অধীনে রচিত খসড়া সংবিধানের পরিবর্তে একটি নতুন সংবিধানও দাবি করেছে। পাশাপাশি ডাক উঠেছে রাজতন্ত্র সংস্কারের। রাজতন্ত্র দেশের রাজনীতিতে কয়েকদশকের সামরিক প্রভাবকে আরও সুপ্রতিষ্ঠিত করতে সহায়ক হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিক্ষোভকারীরা।
করোনাভাইরাসের মহামারী ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতার অভিযোগে যখন প্রধানমন্ত্রী প্রাইয়ুথের সরকার জনগণের পক্ষ থেকে মারাত্মক সমালোচনার মুখে এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া ধীরগতিতে চলছে তখন বিক্ষোভ মিছিল হলো। করোনার ভ্যাকসিন নীতি-নিয়েও সরকার সমালোচনার মুখে। থাইল্যান্ড যে কোম্পানির ভ্যাকসিন ব্যবহার করছে তা রাজা মহা ভাজিরালংকর্নের মালিকানাধীন।
২০১৪ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে থাইল্যান্ডের ক্ষমতা দখল করেন তৎকালীন সেনাপ্রধান প্রাইয়ুথ চানওচা। এক বিতর্কিত নির্বাচনে জয় পেয়ে ২০১৯ সালে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। কিন্তু গত বছরের জুলাই থেকে শুরু হওয়া সরকারবিরোধী সমাবেশগুলো থেকে তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানানো হচ্ছে।
রাজতন্ত্রের ক্ষমতা খর্ব ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে থাইল্যান্ডে বিক্ষোভ চলছে। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রাইয়ুথ চান-ওচার পদত্যাগ চাইছেন বিরোধী দলের নেতারা। তারা একই সঙ্গে রাজার ক্ষমতা খর্ব করার দাবিও জানাচ্ছেন। বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার জন্য অনেকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
দেশের রাজনৈতিক অবস্থা নিয়েও চরম হতাশ বিক্ষোভকারীরা। তারা চাইছে এমন কোনও রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসুক, যারা গণতন্ত্রকে সমর্থন করে। ২০১৯ সালে সেই মতো নতুন কিছু রাজনৈতিক দলকে ভোটও দিয়েছিলেন তারা। ভোটের নিরিখে তৃতীয় হয়েছিল ফিউচার ফরোয়ার্ড পার্টি। গণতন্ত্র ফেরাতে চেয়েছিল এই দল। কিন্তু সেনা রচিত সংবিধান সেসব দলের অস্তিত্ব নস্যাৎ করেছে। বদলে তাদেরই ক্ষমতায় এনেছে, যাদের ওপর সেনা কর্তৃত্ব ফলাতে পারে। যুবসমাজের ক্ষোভ, নির্বাচিত না হয়েও সেনার সমর্থনের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন প্রাইয়ুথ।
যুবসমাজ মনে করে, প্রাইয়ুথ চান–ও–চা সরকার দেশের জন্য কিছুই করেনি। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কোনও পদক্ষেপ করেনি। গণতন্ত্রও প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি। শুধু প্রবীণ কয়েকজন রাজনীতিক নিজেদের পুরনো চিন্তাধারা দেশের মানুষের ওপর চাপিয়ে যাচ্ছেন। বংশ পরম্পরায় ক্ষমতা ভোগ করছেন এই রাজনীতিকরা।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৪৫৪
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ