আগামী ১৯ জুন থেকে আবারও টিকা কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। চীনের উপহার হিসেবে দেওয়া সিনোফার্ম এবং ফাইজার টিকা দিয়ে প্রথম ডোজ দেওয়া শুরু হবে।
সোমবার (১৪ জুন) বিকেলে নিজের প্রয়াত মা ফৌজিয়া মালেকের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যে ভ্যাকসিন (টিকা) পাওয়া গেছে, তা দিয়ে ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম আবার চালু হবে।
জাহিদ মালেক বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে করোনা আবার বাড়ছে। এখন থেকেই সবাইকে আবার সচেতন হতে হবে। হাসপাতালে শয্যা কম। করোনা বাড়লে বেশি বাড়লে সেবাও ব্যাহত হবে। তাই প্রতিরোধের ওপর জোর দিতে হবে, নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তিনি বলেন, হাসপাতালের ছবি দেখিয়ে করোনা নিয়ন্ত্রণ হবে না। এসময় করোনার উৎপত্তিস্থলের ছবি টেলিভিশনে প্রচারের আহ্বান জানান তিনি।
চীন থেকে দুই দফায় উপহার হিসেবে দেশে ১১ লাখ ডোজ ও ফাইজার থেকে এক লাখ ৬২০ ডোজ টিকা এসেছে। সরকারের হাতে সব মিলিয়ে প্রথম ডোজ শুরু করার জন্য টিকা রয়েছে ১২ লাখ ৬২০ ডোজ।
এদিকে দেশে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি শুরুর পর এ পর্যন্ত টিকা দেওয়া হয়েছে এক কোটি ৭৩ হাজার ৫৪১ ডোজ। এগুলো পুরোটাই দেওয়া হয়েছে অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকার ফর্মুলায় ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন। সেরাম থেকে এ পর্যন্ত দেশে ১ কোটি ২ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন এসেছে। সেই হিসাবে এখন কোভিশিল্ডের টিকা মজুত আছে মাত্র ১ লাখ ২৬ হাজার ৪৫৯ ডোজ।
সোমবার (১৪ জুন) স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো টিকাদান বিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৮ লাখ ২০ হাজার ১৫ জন। আর দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৪২ লাখ ৫৩ হাজার ৫২৬ জন। এর মধ্যে সোমবার (১৪ জুন) দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ৩ হাজার ৩৫৯ জনকে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য মতে, প্রথম ডোজ নেওয়া ৫৮ লাখ ২০ হাজার ১৫ জনের মধ্যে ১৪ লাখের বেশি মানুষের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে সংকট। এদের সবাইকেই অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকার দ্বিতীয় ডোজ দিতে হবে। কেননা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনও দুই কোম্পানির দুই ডোজের টিকা গ্রহণের কোনও সিদ্ধান্ত দেয়নি।
উল্লেখ্য, দেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয়ভাবে করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলে। টিকা সংকট দেখা দেওয়ায় ২৬ এপ্রিল থেকে প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ ঘোষণা করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এরপর ২ মে’র পর থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় টিকার জন্য নিবন্ধনও।
২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ৫৪ জন মানুষ
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৪ জন মানুষ মারা গেছেন, যা গত এক মাসের বেশি সময়ের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। সর্বশেষ গত ৯ই মে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৫৬ জনের মৃত্যু ঘটেছিল। এছাড়া রবিবারও মারা গিয়েছিল ৪৭ জন।
গত এক মাসের বেশি সময় ধরে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল অপেক্ষাকৃত কম, যা গত কিছুদিন ধরে আবার একটু একটু করে বৃদ্ধি পাচ্ছিল। ৫০ জনই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। আর বাকি চার জন বাড়িতে মারা গেছেন। এদের মধ্যে ৩৯ জন পুরুষ এবং ১৫ জন নারী। মৃতদের অর্ধেকেরই বয়স ৬০ বছরের বেশি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া সর্বশেষ তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৩ হাজার ৫০ জন মানুষ শনাক্ত হয়েছেন।
এসডব্লিউ/এমএন/এফএ/২০২৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ