পাকিস্তানে সিন্ধু প্রদেশে যাত্রীবাহী দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত আরও ৫০ জন। সোমবার (৭ জুন) সকালে সিন্ধু প্রদেশের গোটকি জেলায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ খবর দিয়েছে সংবাদ মাধ্যম ডন।
পাকিস্তানের রেলওয়ে বিভাগের মুখপাত্র জানিয়েছেন, করাচি থেকে সারগোদা নামক গন্তব্যে যাওয়ার সময় মিল্লাত এক্সপ্রেস ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে পার্শ্ববর্তী লাইনে উঠে যায়। পাশের ওই লাইনে এসময় রাওয়ালপিন্ডি থেকে ছেড়ে আসা স্যার সাইয়েদ এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে মিল্লাত এক্সপ্রেস ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। ধারকি শহরের কাছে রাইতি রেলওয়ে স্টেশনের একটু আগে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে বলেও জানান তিনি।
দ্য ডন জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় মিল্লাত এক্সপ্রেস ট্রেনটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এখনও ট্রেনটির ভেতরে ১৫ থেকে ২০ জন যাত্রী আটকা পড়ে রয়েছেন।
ঘোটকি জেলার এসএসপি ওমর তোফায়েল জানিয়েছেন, ট্রেনের ভেতরে আটকা পড়া যাত্রীরা সাহায্যের জন্য কান্নাকাটি করছেন এবং তাদের উদ্ধারের কাজ চলছে। দুর্ঘটনার পর পরিস্থিতি বিবেচনায় ঘোটকি, ধারকি, ওবারো ও মিরপুর মাথেলো এলাকার হাসপাতালগুলোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে এবং চিকিৎসক ও প্যারা-মেডিকেল স্টাফদের সবাইকে হাসপাতালে ডাকা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৩০ জন নিহত এবং ৫০ জন আহত হয়েছেন। তাছাড়া দুর্ঘটনায় ট্রেনের বগিগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধারে বেগ পেতে হচ্ছে। নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
পাকিস্তানি টেলিভিশন চ্যানেল জিও নিউজ’কে উসমান আবদুল্লাহ আরও বলেন, দুর্ঘটনায় ট্রেনের ১৩ থেকে ১৪টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এছাড়া ছয়টি থেকে আটটি বগি ‘সম্পূর্ণ ভাবে ধ্বংস’ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, আটকে পড়া যাত্রীদের বের করে আনা উদ্ধারকারীদের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ।
এখনো আটকা পড়ে থাকা লোকজনকে বের করে আনা উদ্ধারকারী কর্মকর্তাদের জন্য ‘চ্যালেঞ্জ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান তিনি। রোহরি থেকে একটি রিলিফ ট্রেন রওনা হয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসন ও উদ্ধারকারী দলগুলো দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, ভয়াবহ এই ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে ধন্দে পাকিস্তান প্রশাসন। কেন ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছিল এবং কীভাবেই বা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলো তা এখনও পর্যন্ত পরিষ্কার নয়। তবে একাংশের অভিযোগ, পাকিস্তানে ট্রেন দুর্ঘটনা অহরহ ঘটে। কারণ, গোটা পাকিস্তানে রেলের সিগন্যালিং সিস্টেম এবং রেললাইনের প্রয়োজনীয় উন্নয়নে নজর দেয় না পাক সরকার।
যেভাবে অন্য দেশগুলিতে আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে রেল ব্যবস্থা মসৃণ করার চেষ্টা হয়, তেমন উদ্যোগ চোখে পড়ে না পাকিস্তানে। এমনকী রেল ট্র্যাকগুলির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণও হয় না বলে অভিযোগ। ফল স্বরূপ প্রায়শই পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রান্তে ছোটো-বড় রেল দুর্ঘটনা ঘটেই থাকে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১২২০
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ