যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ফাইজার ও জার্মান জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানি বায়োএনটেকের তৈরি করা করোনাভাইরাস প্রতিষেধক টিকার প্রথম চালান দেশে আসা নিয়ে তথ্য বিভ্রাট তৈরি হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন কর্মকর্তা রোববার (৩০ মে) সকালে জানান, আজ রাতেই কোভ্যাক্সের এক লাখ ৬ হাজার ডোজ টিকার প্রথম চালান আসছে। তবে আরেক কর্মকর্তা দুপুরে জানান, আজ টিকার চালান আসছে না। টিকা আসতে আরও ১০ থেকে ১২ দিন দেরি হতে পারে।
এদিকে ফাইজারের ১ লাখ ৬২০ ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা রোববার রাতে বাংলাদেশে পৌঁছবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম। রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এক সভা শেষে তিনি এই তথ্য জানান।
ফাইজার টিকা আসতে আরো সময় লাগবে কিনা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, টিকা রাত সাড়ে ১১টায় আসবে। টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে এই টিকা পাচ্ছে বাংলাদেশ। কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে এসব টিকা ঢাকায় আসবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এদিকে ভারত সীমান্তবর্তী কিছু এলাকায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় আরও সাতটি জেলায় লকডাউনের কঠোর বিধিনিষেধ জারির বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, জেলাগুলোর লকডাউনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি। অধিদপ্তরের একটি মিটিং চলছে। গত সাত দিনের সংক্রমণের পরিসংখ্যান তুলে ধরেছিলাম। উনারা বলেছেন আমাকে জানানো হবে। সম্ভবত স্থানীয় পর্যায়ে লকডাউন জারি করা হবে। এটার কোনো সঠিক সিদ্ধান্ত হয়নি।
এর আগে ফ্লাইট সিডিউল পাওয়া না যাওয়ায় ফাইজারের টিকা আসতে দেরি হবে বলে রোববারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বুলেটিনে বলা হয়েছিল।
এই বিষয়ে পরে অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিন গণমাধ্যমকে বলেন, তথ্যের ভুলে টিকা আসছে না বলা হয়েছিল। এখন কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে এই টিকা আসবে। তিনি বলেন, এই টিকা আসার পর আমাদের টিকা বিতরণ সংক্রান্ত কমিটি ঠিক করবেন ওই টিকা কখন কাকে দেওয়া হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র হিসেবে কারও মুখের কথা শুনে যাচাই-বাছাই না করে এভাবে তথ্য প্রচার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এভাবে তথ্য বিভ্রাটে শুধু দেশে নয় আন্তর্জাতিকভাবেও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ ডিসেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ফাইজারের টিকা জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন করে। এই টিকা ১২ বছরের উপরের বয়সীদের ব্যবহারের উপযোগী। এটি সংরক্ষণ করতে হিমাঙ্কের নিচে ৬০ থেকে ৯০ ডিগ্রি তাপমাত্রা প্রয়োজন হয়। তবে ২ থেকে ৮ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ৫ দিন সংরক্ষণ করা সম্ভব।
দেশের করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এ নিয়ে চারটি টিকা ইমারজেন্সি ইউজ অথরাইজেশন প্রদান করেছে। প্রথমেই ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্র্যাজেনেকা টিকার অনুমোদন দেয়া হয়। পরে জরুরি ব্যবহারের জন্য রাশিয়ার উৎপাদিত টিকা ‘স্পুটনিক’-এর অনুমোদন দেয়া হয়। তারপরেই চীনের সিনোফার্মের টিকার অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/২০১১
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ