সীমান্ত নিয়ে চীনের সঙ্গে ভারতের উত্তেজনা দীর্ঘদিন ধরে। চলমান উত্তেজনা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। সর্বশেষ বছরখানেক আগে প্রতিবেশী দেশ দুটি বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতেও জড়িয়েছে। এ নিয়ে বারবার আলোচনায় বসেও কোনো সমাধানসূত্র আসেনি। এমন সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যে ভারত-চীন সীমান্তে বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
ভারতীয় সেনাপ্রধান বলেন, সীমান্তে লালফৌজের কার্যকলাপের ওপরও নজর রাখা হচ্ছে। তিনি বলেন, এখনও লাদাখের প্যাংগং লেক থেকে সেনা সরানো হয়নি। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের অবস্থায় ফিরে আসুক দুই দেশের সম্পর্ক।
এম এম নারাভানে জানান, ভারত চীনকে স্পষ্ট করে জানিয়েছে উভয়পক্ষের পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমেই সেনা সরানো হতে পারে।
তিনি এও জানিয়েছেন, পূর্ব লাদাখ সীমান্তে ৫০ থেকে ৬০ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে চীন। এ অবস্থায় সেই অঞ্চলে পাল্টা সেনা মোতায়েন করছে ভারতীয় সেনাবাহিনীও। পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা অঞ্চল দেপসাং, গোগরা অন্যান্য পয়েন্টে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান চায় ভারত।
সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এম এম নারাভানে বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। কয়েকদিনের মধ্যে ১২তম বৈঠকে বসবে দুপক্ষ। করোনার কারণে এই বৈঠক পিছিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগে অরুণাচল প্রদেশ এবং চীন সীমান্ত পরিদর্শনে যান সেনা প্রধান নারাভানে। অরুণাচল প্রদেশের নর্দান বর্ডার নাগাল্যান্ডের দিমাপুরে গত ২০ মে যান তিনি। উত্তর পূর্ব অঞ্চলে সতর্কতা অবলম্বনে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা দেখতেই তার এই সফর।
লাদাখ সীমান্ত জুড়ে মহড়া চালাচ্ছিল চীনা সেনাবাহিনী। এর মধ্যেই লাদাখ সীমান্ত পরিদর্শন করেছেন ভারতের বিমান বাহিনীর প্রধান আর কে এস বাদোরিয়া। তিনি মূলত সীমান্তে ভারতের রণকৌশল ও পরিকাঠামো খতিয়ে দেখেছেন। বিমান বাহিনীর প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত বছর ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় চীনা সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ দিতে হয়েছে ২০ জন ভারতীয় জওয়ানকে। এছাড়া ভারতীয় সেনাবাহিনীর আরও ৭৬ জওয়ান আহত হন। এরপরই সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জরুরি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়। এই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং নিয়ন্ত্রণের পথ কী তা নিয়ে ইতোমধ্যেই একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এখনও কমেনি উত্তেজনা।
বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ বিতর্কিত সীমান্তের অংশীদার ভারত ও চীন। উভয়পক্ষই দীর্ঘদিন ধরে একে অপরের নিয়ন্ত্রণে থাকা বিশাল সব এলাকার মালিকানা দাবি করে আসছে।
দুই দেশের মধ্যবর্তী তিন হাজার ৪৪০ কিলোমিটার সীমান্ত নদী, হ্রদ ও তুষারঢাকা পবর্তমালার মধ্যে দিয়ে গেছে। প্রায়ই অনির্ধারিত সীমান্ত রেখার কারণে দুইপক্ষের সেনারা পরস্পরের মুখোমুখি হয়ে পড়েন, কখনও কখনও সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়েন।
সীমান্তে ছোটখাটো সংঘর্ষ সত্ত্বেও এই দুটি দেশ মাত্র একবার ১৯৬২ সালে যুদ্ধে জড়িয়েছিল, তখন ভারত শোচনীয় পরাজয় মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিল।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৮০১
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ