কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী
দেশে কয়েকদিন পরপরেই শোনা যায়,ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের ঘটনা। ধর্মীয় অনুভূতির বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে আপেক্ষিক। এরপরেও যদি কেউ মনে করে যে কোন ঘটনা তার ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করেছে; তাহলে দেশের আইন আদালত সব আছে, তিনি আইনের দারস্থ হতে পারেন। কিন্তু গত কয়েকটি দশকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের কথা বলে বিভিন্ন সময়ে কথিত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নির্মমভাবে আক্রমণ সহ তার ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর সহ অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বিষয়টিতে দেশের মানুষের বাকস্বাধীনতা বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের বাকস্বাধীনতা দিনেদিনে হুমকির মুখে পড়ে যাচ্ছে। লক্ষ্য করলে দেখা যায়, হাটহাজারী, রামু, নাছিরনগর, রংপুরের গঙ্গাচড়া সহ অনুভূতির উত্তেজনা ছড়িয়ে দেশে অধিকাংশ সাম্প্রদায়িক আক্রমণের ঘটনাগুলো ঘটেছে শুক্রবারে। দেশের জাতীয় দৈনিকগুলোতে চোখ বুলালে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, শুক্রবারের সাপ্তাহিক দুপুরের নামাজের পরেই ঘটনাগুলো বেশি ঘটেছে। একশ্রেণীর মানুষ সাধারণ মানুষকে জড়ো করে ধর্মের দোহাই দিয়ে তাদের বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক আক্রমণ লুটপাটের এজেন্ডা চরিতার্থ করছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, কথায় কথায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে দেশের কিছু মানুষের। আমি ঠিক জানিনা, এদের অনুভূতির দণ্ডতা এত তীব্রতর কেন? প্রচলিত আইনে অনুভূতির সংজ্ঞা এখনও অস্পষ্ট বলে, অনেক আইনজ্ঞদের মতামত দিতে দেখেছি বিভিন্ন সময়ে। ২৯৫ ধারায় জেল -জরিমানার কথা বলা হয়েছে। ২৯৫ এর ‘ক’ ধরার অপরাধ অজামিনযোগ্য। আইনজীবীরা বলছেন, “সাম্প্রতিক সময়ে এই আইনের প্রয়োগ হচ্ছে প্রতিপক্ষকে ‘হয়রানির হাতিয়ার’ হিসেবে।”
“দণ্ডবিধির ২৯৫ এর ‘ক’ ধারা মতে, কোনও শ্রেণির ধর্মীয় বিশ্বাসকে অবমাননা করে ওই শ্রেণির ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্যে দুরভিসন্ধিমূলক কাজ করা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। ওই ধারায় আরও বলা হয়েছে, ম্যাজিস্ট্রেট মামলা আমলে নিতে পারবেন। আর এ ধারার অপরাধ জামিন-অযোগ্য।” কোন ধর্মীয় টেক্সটে যদি কোন বিষয়েয় উল্লেখ থাকে, সে বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি করলেও কি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হবে? বিষয়গুলি আমাদের কাছে সুস্পষ্ট নয়। এ কারণেই সমস্যাগুলো দিনেদিনে জট পাকিয়ে যাচ্ছে। জ্ঞানের চর্চা করা মানুষের মধ্যে হতাশা তৈরি হচ্ছে। নারী, অমানবিকতা, বর্বরতা, নৃশংসতার নির্দেশনা যদি কোন ধর্মীয় টেক্সটে থাকে, এরপরেও সে বিষয়টি নিয়ে কথা বলা যাবে কি যাবে না তা আমাদের কাছে পরিস্কার না। আমরা দেখলাম বিষয়গুলোর উপরে একটি অলিখিত নিষেধাজ্ঞা আছে।
দেশের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের বিষয়টি অনেকটাই একপাক্ষিক হয়ে যাচ্ছে। এ একপাক্ষিক ধর্মীয় অনুভূতির মর্মান্তিক স্বীকার হয়ে বহু সংখ্যালঘুদের জীবন বিপদগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছে। বহু মানুষের ঘরেবাড়ি, বসতভিটা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, ধ্বংস হচ্ছে। অনেকে ভয়ে দেশান্তরিত হচ্ছে। কিন্তু এর সমাধান কি? আমাদের মনে হয় এর সমাধান শুধু মুক্তভাবে কথা বলা এবং সোচ্চার হওয়া। রাত যত গভীর হয়, প্রভাত ততই কাছে আসে। শুধুমাত্র নিরবচ্ছিন্ন ইচ্ছা, একাগ্রতা এবং ধৈর্য থাকলেই হয়। তুষের আগুনের মত টিপটিপ করে না জ্বলে আম কাঠের মত দাউদাউ করে জ্বলতে হয়। আমাদের কে, কি, কখন, কোথায়, কিভাবে – এ জাতীয় পরিনামদর্শী আগপাছ চিন্তা না করে সাহস নিয়ে এগিয়ে গেলে অনেক বিপদ এমনিতেই ভয়ে পালিয়ে যায়। বিপদ দেখে যত বেশী পরিনামদর্শী হয়ে ঘরে বসে থাকব, বিপদ ততই আমাদের ঘর পর্যন্ত চলে আসবে।নিজেদের সমস্যার সমাধান নিজেদেরই করতে হয়, কেউ এসে করে দিবে, এইমনে বসে থাকাটা চরম বোকামি। কেউ যদি আপনার জন্যে হাটু পর্যন্ত জলে নামে, তাহলে আপনাকে গলা পর্যন্ত জলে নামতে হবে। জগতে, “ধরি মাছ না ছুই পানি” তত্ত্বে কোন সমস্যার সমাধান কোনদিন হয়নি; আর হবেও না।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের অভিমত, সুনির্দিষ্টভাবে কারও ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে মন্তব্য করলে তার শাস্তির বিধান রয়েছে দণ্ডবিধির ২৯৭ ধারাতেও। তবে সাম্প্রতিক সময় তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারাতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের বিষয়ে বলা হলেও সেখানেও কিছুই স্পষ্ট করে বলা হয়নি। ধর্মীয় অনুভূতির সুস্পষ্ট সংজ্ঞা দেয়া হয়নি । তাই তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় এ বিষয়ে কিছু করার নেই। তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ (১) ধারায় বলা হয়েছে, “কোনও ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েব সাইটে বা অন্য কোন ইলেক্ট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যাহা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেহ পড়িলে, দেখিলে বা শুনিলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হইতে উদ্বুদ্ধ হইতে পারেন অথবা যাহার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করিতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনও ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উস্কানি প্রদান করা হয়, তাহা ইহলে তাহার এই কার্য হইবে একটি অপরাধ।”
আমাদের দেশে বিগত বছরগুলোতে ধর্মীয় অনুভূতি বলতে কেবলমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠের অনুভূতিতেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। আইনের প্রয়োগের ক্ষেত্রে একটা প্রচণ্ড একচোখা দৃষ্টিভঙ্গি দেখি। সংখ্যাগরিষ্ঠের পক্ষ থেকে যদি কারও নামে ধর্মীয় অনুভূতির অভিযোগ করা হয়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা দেখেছি কথিত অভিযুক্ত ব্যক্তিটি অপরাধ করেছেন কি করেননি এটা যাচাই না করেই আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই তাকে সাথে সাথে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তিটি যদি সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের হয় তাহলেতো কোন কথাই নেই। বিষয়টি দিনে দিনে সংখ্যালঘুদের কাছে শ্বাসরুদ্ধকর হয়ে যাচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না বাংলা ট্রিবিউনকে (“ধর্মীয় অনুভূতির সংজ্ঞা নেই আইনে!”; ৭ জুন, ২০১৭) বলেন, ‘‘ধর্মীয় অনুভূতি কোনও সস্তা বিষয় নয় যে কারও কথাতে সেখানে আঘাত লাগবে। আর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত কনসেপ্টটাই ‘ব্যাকওয়ার্ড কনসেপশন’ বলে মনে হয় আমার। একটি গ্রুপই থাকে যারা কনফ্লিক্ট অথবা অরাজকতার জন্য বাহানা খোঁজে। তারা মুসলিম, হিন্দু কিংবা সেক্যুলার সব দেশে গিয়েই একই কাজ করবে, আমাদের দেশেও সেই একই কাজ হচ্ছে, এটা কোনও ইস্যুই না।জয়পুরহাটে কয়েকদিন আগে পাঁচ থেকে ছয়টি মন্দির ভাঙা হলো, সেটা নিয়ে তো ইস্যু হলো না। আসলে ইসলামসহ কোনও ধর্মই নাজুক নয়।… সবার ধর্মীয় অনুভূতি সমান এবং এখানে কাউকে ছোট করে দেখার অবকাশ নেই। আর কেউ কিছু বললেই ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত করেছে বলাটা চরম বোকামি, কারণ সেখানে প্রমাণ করে দেখাতে হবে কী করে অনুভূতিতে সে আঘাত করেছে, নয়তো এগুলো হবে ভেক (ভুয়া) অভিযোগ।”
এক অজানা ভয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় মুখ ফুটে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলছে না। মামলার ভয়।কিন্তু এভাবে আর কতদিন? একটি বিড়ালকে যখন মারা হয় তখন অন্ততপক্ষে একটি জানালা খুলে মারা হয়, যাতে বিড়ালটি মার খেয়ে জানালা দিয়ে চলে যেতে পারে। কিন্তু যখন সকল দরজা জানালা বন্ধ করে মারা হয় তখন বিড়ালটি মার খেতে-খেতে জীবন বাঁচাতে মরিয়া হয়ে যায়। সে সময়ে সামনে যাকে পায় তাকেই আক্রমণ করে বাঁচার চেষ্টা করে। পৃথিবীর ইতিহাস বলে, যে সকল দেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থা এ মার খাওয়া বিড়ালের মত হয়েছে; তারাই দিনের পরে দিন মার খেতে খেতে ঘুরে দাড়িয়ে পরবর্তীতে এক নতুন ইতিহাস তৈরি করেছে।
শীতের মৌসুমে ওয়াজ মাহফিলসহ ধর্মীয় জলসা নামে অন্য ধর্মাবলম্বী বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে প্রচণ্ডভাবে অশ্লীল কুরুচিপূর্ণ বিকৃতমস্তিষ্ক কথাবার্তা বলা হয়। এ কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তার মাত্রা এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে বিষয়টি নিয়ে বিষয় ৫ জানুয়ারি, ২০২০, রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও আলোচনা করা হয়। এ সময়ে কমিটির সভাপতি মো. হাফেজ রুহুল আমীন মাদানীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল, জিন্নাতুল বাকিয়া, তাহমিনা বেগম ও রত্না আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ওয়াজ মাহফিলসহ ধর্মীয় জলসা থেকে বিভিন্ন ধর্মীয় উসকানি এবং সরকারবিরোধী প্রচারণার সুস্পষ্ট অভিযোগ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে প্রচণ্ড উদ্বেগ প্রকাশ করে কমিটির পক্ষ থেকে ধর্মীয় উসকানি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে আলোচনা শেষে সারা দেশে ইসলামী জলসার নামে ধর্মীয় উসকানিমূলক বক্তব্য ও প্রচারণা বন্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে। কমিটির সদস্যরা দেশের বিভিন্ন স্থানে উসকানিমূলক ঘটনা তুলে ধরে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে এ পরিস্থিতি উত্তরণে ওয়াজ মাহফিলসহ ধর্মীয় জলসা আয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি বাধ্যতামূলক করে। এবং রাত ১১টার পর কোনো অনুষ্ঠান না রাখার পরামর্শ দেয়া হয়।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের বিষয়টি এখন একপাক্ষিক এবং অসহনীয় হয়ে গেছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে। দেশে গত কয়েকবছরের ঘটনাক্রমে দেখা যায়, অনুভূতিতে আঘাতের বিষয়টি শুধুই সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মীয় বিশ্বাসকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়েছে। রামু, নাসিরনগর, রংপুরের গঙ্গাচড়া, ভোলাসহ ফেসবুকে আজ পর্যন্ত যতগুলো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের ঘটনা ঘটেছে, প্রত্যেকটি ঘটনার ক্ষেত্রেই ঘটনাক্রমের কিছু কমন মিল দেখা যায়।দেখা যায়, কোন ফেইক আইডি থেকে একজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ব্যক্তির আইডিতে ধর্মীয় অনুভূতির বিষয়ে মিথ্যা পোষ্ট করে একটা বিশেষ গোষ্ঠী তাদের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার প্রচেষ্টা করেছে। অভিযোগের সাথেসাথেই সংখ্যালঘু কথিত অভিযুক্ত ব্যক্তিটিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একইসাথে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ঘরবাড়িতে হামলা করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করা হয়েছে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে দেশছাড়াতেও চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়; কিন্তু ভাঙচুর করা অবস্থায় ধরা পরলে সে হয়ে যায় মানসিক ভারসাম্যহীন দুষ্কৃতকারী। বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল থেকে সংখ্যালঘুদের নামে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়ানো হয়। বিষয়টি এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, বিষয়টি নিয়ে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও আলোচনা করা হয়। তবে বিষয়টিতে তেমন আইনগত কোন জোরালো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে খুব একটা দেখা যায় না। ফলশ্রুতিতে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য, সাম্প্রদায়িক উস্কানি ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টকারী মানুষগুলো প্রতিনিয়ত তাদের ব্যক্তিস্বার্থে, সাধারণ মানুষের মাঝে বিদ্বেষ ছড়িয়ে বিভ্রান্ত করেই ধর্মীয় মেরুকরণ করেই যাচ্ছে।
ধর্মীয় অনুভূতির যেহেতু সুস্পষ্টভাবে সংজ্ঞা নেই, তবে এ সংক্রান্ত আইন আছে। আমরা দেখছি, অন্য ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে ওয়াজ মাহফিলসহ ধর্মীয় জলসা থেকে যে কুরুচিপূর্ণ বিকৃত কথাবার্তা বলা হচ্ছে তা সরকারের জাতীয় সংসদের ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতেও গুরুত্বের সাথে আলোচিত হয়েছে। ধর্মীয় অনুভূতি একটি আপেক্ষিক বিষয়, কিন্তু এর বহুমাত্রিক অভিঘাতে প্রতিনিয়ত সংখ্যালঘু নির্যাতিত হচ্ছে। বিষয়টি সর্বজন স্বীকৃত, ব্যক্তিগুলোও চিহ্নিত, কারা এ সকল কাজ করছে। তাই রাষ্ট্রযন্ত্রকে অনুরোধ করবো, রোগ যখন চিহ্নিত হয়ে যায়, তখন শুধু বাকি থাকে ওষুধের প্রয়োগ, তবেই রোগী সুস্থ হতে পারে; নচেৎ নয়।
কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী, সহকারী অধ্যাপক, সংস্কৃত বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
মতামত ও বিশ্লেষন বিভাগে প্রকাশিত সকল মতামত লেখকের নিজস্ব এবং এটি State Watch এর সম্পাদকীয় নীতির আদর্শগত অবস্থান ধরে নেওয়া ঠিক হবে না। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, স্টেটওয়াচ কর্তৃপক্ষের নয়।
আপনার মতামত জানানঃ