ভুল তথ্য ছড়ানো প্রতিরোধে ও অনলাইনে প্রাপ্ত খবরের গুণগত মান উন্নয়নে চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাংলাদেশে থার্ড পার্টি ফ্যাক্ট চেকিং প্রোগ্রামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এর আন্তর্জাতিক পার্টনার এএফপি ও বাংলাদেশভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ফ্যাক্ট ওয়াচ। আজ সোমবার (২৪ মে) গণমাধ্যমে ফেসবুক থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
২০২০ সালে বাংলাদেশে বুম-এর সঙ্গে প্রথম এই প্রোগ্রামটি শুরু করে ফেসবুক। এখন যুক্ত হলো এএফপি ও ফ্যাক্ট চেক।
২০২০ সালের ১৯ এপ্রিল ফেসবুকে ভুয়া তথ্য ছড়ানো ঠেকাতে থার্ড পার্টি ফ্যাক্ট-চেকিং কর্মসূচি চালু করার ঘোষণা দেয় ফেসবুক। পয়েন্টার ইনস্টিটিউটের নিরপেক্ষ অঙ্গসংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাক্ট চেকিং নেটওয়ার্ক (আইএফসিএন) অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান বিওওএম (বুম)-এর সঙ্গে অংশীদার হয়ে ফেসবুক ফ্যাক্ট-চেকিং শুরু করে।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বুম বাংলাদেশের ফেসবুক কমিউনিটিতে বিদ্যমান ছবি ও ভিডিওসহ ফেসবুক স্টোরিগুলোর যথার্থতা পর্যালোচনা করবে এবং সঠিক কিনা তার রেটিং দেবে।
যখন থার্ড পার্টি ফ্যাক্ট-চেকাররা কোনো পোস্টকে অসত্য বা ভুয়া হিসেবে রেটিং দেবে তখন সেটি নিউজ ফিডে কম বা একেবারে নিচের দিকে প্রদর্শিত হবে। এতে পোস্টটির ছড়িয়ে পড়া উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে।
গণমাধ্যমে ফেসবুক থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, থার্ড পার্টির ফ্যাক্ট-চেকাররা যদি কোনও কনটেন্ট বা স্টোরিকে অসত্য, পরিবর্তিত কিংবা আংশিক অসত্য হিসেবে চিহ্নিত করে তখন তা নিউজফিডে কম প্রদর্শিত হবে।
ইনস্টাগ্রামও এ ধরনের স্টোরি এক্সপ্লোর ও হ্যাশট্যাগ পেজগুলোতে ফিল্টার করে দেখাবে এবং তা ফিডের নিচের দিকে থাকবে।
যদি কোনও পেজ বা ডোমেইন বারবার ভুয়া খবর শেয়ার করে তাহলে তার পোস্ট ডিস্ট্রিবিউশন কমে আসবে এবং তাদের পেইজের মনিটাইজেশন ও বিজ্ঞাপনগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এছাড়া ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামে থাকা যেসব কনটেন্টকে ভুয়া কিংবা সত্য থেকে কিছুটা পরিবর্তিত হিসেবে চিহ্নিত করা হয় সেগুলোর উপরে বিশেষ লেবেল দেওয়া হয়। যাতে করে এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীরা নিজেরাই ঠিক করতে পারেন তারা কী পড়বেন, বিশ্বাস করবেন এবং শেয়ার করবেন। ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত অসত্য ও বানোয়াট ছবি, ভিডিও এবং স্টোরির উপরের অংশে এই লেবেলটি প্রদর্শিত হয়। এছাড়া ফ্যাক্ট-চেকাররা কী যাচাই করেছে তার লিংকও দেওয়া থাকে।
ফেসবুক এশিয়া প্যাসিফিকের নিউজ পার্টনারশিপের পরিচালক অঞ্জলি কাপুর বলেন, ‘ভুয়া খবর শেয়ার করা প্রতিরোধে ফেসবুকের চলমান প্রচেষ্টার একটি অংশ হিসেবে এএফপি ও ফ্যাক্ট ওয়াচের সঙ্গে এই পার্টনারশিপ। ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ, আইএফসিএন ও আমাদের ফ্যাক্ট-চেকিং পার্টনাররা এ উপলক্ষে সোমবার (২৪ মে) এক আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করছেন। তারা মহামারির সময়ে তথ্য যাচাইকরণের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করবেন। সবার সম্মিলিত এই উদ্যোগটিকে আমরা স্বাগত জানাই। বাংলাদেশে তথ্য সচেতন সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।’
থার্ড পার্টি ফ্যাক্ট-চেকাররা যখন কোনো পোস্ট নিয়ে লেখেন, ফেসবুকের নিউজ ফিডে সে পোস্টের ঠিক নিচে রিলেটেড আর্টিকেলস অংশে সেটি দেখায়। ফেসবুকের বিদ্যমান পেজগুলোর অ্যাডমিন বা কোনো সদস্যও যদি কোনো অসত্য তথ্য পোস্ট করার চেষ্টা করেন তাদের কাছে নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে। এর ফলে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা কী ধরনের পোস্ট পড়বেন, কোন তথ্যটি বিশ্বাস করবেন আর কী শেয়ার করবেন তা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
ফেসবুকের ফ্যাক্ট চেকিং কর্মসূচি ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়। বর্তমানে ৫০ টির বেশি ভাষায় ফ্যাক্ট চেক করা হচ্ছে। ফেসবুক কমিউনিটির প্রতিক্রিয়াগুলো পর্যালোচনা করার মাধ্যমেও ফ্যাক্ট-চেকাররা কিছু মিথ্যা তথ্য উদঘাটন করে। ভুয়া খবর প্রতিরোধের জন্য ফেসবুকের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার মধ্যে এটি সর্বশেষ সংযোজন এবং সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারে এমন একটি কমিউনিটি গঠনে ফেসবুকের এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
ফেসবুক বুমের সঙ্গে ভারত এবং মিয়ানমারেও কাজ করছে।
বুম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাংলাদেশে এই কার্যক্রম শুরু হওয়ায় ফেসুবক কমিউনিটি যাচাইকরা তথ্য পেতে সহায়ক হবে। এছাড়া কি ধরণের তথ্য উপাত্ত প্রচার বা আদান প্রদান করা যায় তারও একটা ধারণা পাবেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৮০৭
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ