করোনামুক্ত মানুষের ভ্রমণ তরান্বিত করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন জুলাই মাস থেকে অভিন্ন সার্টিফিকেট চালু করতে চলেছে। ফলে গ্রীষ্মের ছুটির মৌসুমে ভ্রমণের সুযোগ পেতে পারে ইউরোপের মানুষ।
ইউরোপে করোনা সংক্রমণের হার কমে আসায় ভ্রমণের অবাধ সুযোগ আবার সম্ভব করার লক্ষ্যে প্রথম পদক্ষেপ নিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা। করোনার টিকাপ্রাপ্ত, করোনাজয়ী ও করোনা পরীক্ষায় নেতিবাচক ফলের প্রমাণ হিসেবে অভিন্ন সার্টিফিকেট তৈরির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ও ২৭টি সদস্য দেশের সরকার। এমন সার্টিফিকেট সব সদস্য দেশেই স্বীকৃতি পাবে। জার্মানির টেলিকম সংস্থার টি-সিস্টেমস এবং এসএপি কোম্পানি এই সার্টিফিকেটের প্রযুক্তি তৈরি করেছে।
জুন মাসের মধ্যেই সেই সার্টিফিকেট প্রস্তুত হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ১ জুলাই থেকে নতুন এই কাঠামো চালু হয়ে যাবে। তার আগে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের মাধ্যমে গোটা ব্যবস্থায় ভুলত্রুটি দূর করার চেষ্টা করা হবে। ফলে গ্রীষ্মের ছুটির মৌসুমে পর্যটনের সুযোগ অনেকটাই উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
উল্লেখ্য, ইইউ দেশগুলোর প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ করোনা টিকার অনন্ত প্রথম ডোজ পেয়ে যাওয়ায় ভ্রমণের চাহিদা আবার বাড়তে শুরু করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোভিড সার্টিফিকেট বিনামূল্যেই পাওয়া যাবে। স্মার্টফোন অথবা কাগজে সেই কিউআর কোড দেখিয়ে যে কোনো মানুষ নিজেকে করোনা-মুক্ত হিসেবে প্রমাণ দিতে পারবেন।
এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়নে অনুমোদিত নয়, সার্টিফিকেটের জন্য এমন টিকাও গ্রহণযোগ্য হবে। তবে সেই সার্টিফিকেট স্বীকৃতি পেলেও যে কোনো সদস্য দেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী নতুন করে করোনা পরীক্ষা অথবা কোয়ারেন্টিনের মতো সাময়িক নিয়ম চালু করতে পারে। বিশেষ করে করোনাভাইরাসের নতুন কোনো মিউট্যান্ট ছড়িয়ে পড়ে গণস্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করলে এমনটা হতে পারে। করোনা পরীক্ষার ব্যয় কমাতে ইউরোপীয় কমিশন জরুরি তহবিল থেকে ১০ কোটি ইউরো অনুদান হিসেবে দেবে। প্রয়োজনে আরও অর্থ ধার্য করা হতে পারে। তবে বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষার প্রস্তাব ঐকমত্যের অভাবে নাকচ হয়ে গেছে।
করোনা সার্টিফিকে নিয়ে কোথায় কী করা যাবে ও যাবে না সে বিষয়টিও ইইউ সদস্য দেশগুলোর ওপর ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
বেশিরভাগ দেশ পর্যটন শিল্পকে চাঙ্গা করতে ভ্রমণের সুযোগ আবার খুলে দিতে আগ্রহী। গ্রিসসহ ইউরোপের দক্ষিণের কিছু দেশ এখনই কোয়ারেন্টাইনের মতো নিয়ম প্রত্যাহার করছে। ইইউ দেশগুলো ছাড়া শেনঝেনভুক্ত বাকি দেশও এই কাঠামোয় অংশ নিচ্ছে। আপাতত এক বছরের জন্য এই সার্টিফিকেট স্বীকৃতি পাবে। সেটির মেয়াদ বাড়াতে হলে ইইউ পার্লামেন্টকে নতুন করে আইন পাশ করতে হবে।
ইইউ বাসিন্দাদের জন্য ভ্রমণের এমন সুযোগের পাশাপাশি অন্য একটি কাঠামোর আওতায় অন্যান্য দেশের মানুষের ইইউ-তে প্রবেশের সুযোগ সহজ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এমনকি ইইউ’র করোনা সার্টিফিকেটের মানদণ্ড বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যান্য দেশ বা অঞ্চল একই মানদণ্ডের ভিত্তিতে নিজস্ব সার্টিফিকেট চালু করে আন্তর্জাতিক স্তরে ভ্রমণের সুযোগ আরও সহজ করে তুলতে পারে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৬০৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ