যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়া ১০ জনের মধ্যে ভারতফেরত সাতজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। এদিকে ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় ২৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
৭ করোনা রোগী গ্রেপ্তার
সোমবার (১০ মে) সকালে হাসপাতালে ভর্তির পর পালিয়ে যাওয়া সাতজনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত সাতজন হলেন, যশোর শহরের পশ্চিম বারান্দিপাড়া এলাকার বিশ্বনাথ দত্তের স্ত্রী মণিমালা দত্ত (৪৯), সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপপাড়া গ্রামের মিলন হোসেন (৩২), রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর গ্রামের নাসিমা আক্তার (৫০), খুলনা সদর উপজেলার বিবেকানন্দ (৫২), পাইকগাছা উপজেলার ডামরাইল গ্রামের আমিরুল সানা (৫২), রূপসা উপজেলার সোহেল সরদার (১৭) এবং যশোর সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা (১৯)।
এ ছাড়া ভারতফেরত সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার শেফালি রানী সরদার (৪০) এবং স্থানীয় যশোর সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের একরামুল কবীরের স্ত্রী রুমা (৩০) ও যশোর শহরের ওয়াপদা গ্যারেজ এলাকার ভদ্র বিশ্বাসের ছেলে প্রদীপ বিশ্বাস (৩৭) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ জানায়, ভারতফেরত ও স্থানীয় ১০ জন করোনায় সংক্রমিত রোগী হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে জানায়।
এরপর গত শনিবার (৮ মে) যশোর কোতোয়ালি থানার পুলিশ ২০১৮ সালের সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইনের ২৫ (২) ধারায় আদালতে আবেদন দাখিল করে। গতকাল রোববার আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। আজ সোমবার সকালে হাসপাতাল থেকে সাতজনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। এ ছাড়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত অপর তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার পর তাদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে পুলিশ জানায়।
গত ২৩ ও ২৪ এপ্রিল ভারত ফেরত করোনা আক্রান্ত কয়েক পাসপোর্ট যাত্রী যশোর জেনারেল হাসপাতালে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। এরপর হাসপাতাল থেকে ৭ ভারত ফেরত করোনা আক্রান্ত ও স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত তিনজন মোট ১০ জন পালিয়ে যান। বিষয়টি ২৬ এপ্রিল সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হওয়ায় তোলপাড় শুরু হয়। এরপর ওইদিন দিবাগত রাতের মধ্যে পলাতক সবাইকে শনাক্ত করে হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়।
এ ঘটনায় গত শনিবার যশোর কোতোয়ালি থানার পুলিশ ২০১৮ সালের সংক্রামক রোগপ্রতিরোধ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইনের ২৫ (২) ধারায় পলাতকদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দাখিল করে। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ওই ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্তের মাটিলা ও সামন্তা দিয়ে অবৈধ ভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় ২৭ জন আটকে করেছে বিজিবি। সোমবার (১০ মে) ভোরে ওই উপজেলার সীমান্ত থেকে তাদের আটক করা হয়।
মহেশপুর বিজিবি ৫৮ ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্ণেল কামরুল আহসান জানান, অবৈধ অনুপ্রবেশে করেছে এমন খবর পেয়ে বিজিবির সদস্যা ওই এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় মাটিলা সীমান্ত থেকে ১৯ জন ও সামন্তা এলাকা থেকে আট জনকে আটক করা হয়। আটকদের বাড়ি খুলনা, বরিশাল, বাগেরহাটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বলে জানা যায়।
এ ঘটনায় মহেশপুর থানায় পাসপোর্ট অধ্যাদেশ ১৯৭৩ এর ১১(১) (গ) ধারায় আইনে তাদের নামে মামলা হয়েছে।
সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশের কারণে করোনার সংক্রমণের আশংকা করছে সীমান্তের বাসিন্দারা। তারা জানায় ভারতে করোনার ভয়াবহ অবস্তা চলছে ফলে তারা যে ভারতের নতুন ধরনের ভাইরাস নিয়ে আসছেনা তার গ্যারান্টি কে দেবে ?
মহেশপুর থানার ওসি বলেন, করোনা নিয়ে আমাদেরও আশংকা আছে তবে আমাদের দায়িত্ব আদালতে চালান দেয়া !তবে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন সরকার সীমান্ত যখন সীল গালা করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে সেখানে এত মানুষ আনুপ্রবেশ করলো কি ভাবে ?
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৯০৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ