এবার ভারতে বসবাসরত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন আক্রান্ত হলেন করোনা ভাইরাসে। তবে তার করোনার নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ আসায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তিনি।
এক টুইট বার্তায় তসলিমা নাসরিন বলেন, ‘এক বছরের বেশি সময় ধরে ঘরের বাইরে পা দিইনি। কাউকে ঘরে আসতেও দিইনি। ঘরের ভেতর আমার বিড়াল আর আমি ছিলাম। এরপরও আমি কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত! যদি জানতে পারতাম, আমি কীভাবে আক্রান্ত হলাম।’ ঠিক কবে থেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা তার বর্তমান শারীরিক অবস্থা কী, সে সম্পর্কে ওই টুইট বার্তায় কিছু বলেননি তসলিমা নাসরিন।
এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় তসলিমার করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশিত হওয়ার পরই তা ভাইরাল হয়েছে। অনেকেই লেখিকার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। অনেকে আবার বলেছেন, লোকের সমালোচনা করতে করতে কখন কে বিপাকে পড়বে তা বোঝা যায় না!
ঠিক ১৮ ঘণ্টা আগে বাংলাদেশের ইদের কেনাকাটার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তসলিমা। লিখেছিলেন, ‘বাংলাদেশ। যেখানে ইদের কেনাকাটা ও এরওর বাড়ি যাওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই খারাপ সময়ে মানুষের প্রাণ বাঁচানোর থেকেও।’
এ সম্পর্কিত তসলিমা নাসরিনের স্ট্যাটাসটি
আমি চিরকালই বড় দুর্ভাগা। এই যে গত বছরের মার্চ মাস থেকে একা আছি ঘরে, একখানা ইন্ডোর ক্যাট সঙ্গী, কোথাও এক পা বেরোলাম না, কাউকে ঘরে ঢুকতে দিলাম না, রান্না বান্না বাসন মাজা কাপড় কাচা ঝাড়ু মোছা সব একাই করলাম, কী লাভ হল? কিছুই না। ঠিকই কোভিড হল। গত এক বছরে শুধু একবার এক ঘণ্টার জন্য বাইরে বেরিয়েছিলাম, তাও দু’মাস আগে, টিকার প্রথম ডোজ নিতে। ওই ডোজটি কিছু অ্যান্টিবডি তৈরি করেছিল বলে হয়ত এ যাত্রা বেঁচে গেছি।
আমি চিরকালই বড় দুর্ভাগা। এক এক করে যদি লিখি কী কী ঘটেছে জীবনে যা ঘটার কথা ছিল না, তাহলে তালিকা এত দীর্ঘ হবে যে পড়ে কেউ কূল পাবে না। আপাতত কোভিড হওয়ার দুঃখটাই থাক। দুঃখ থাকাও হয়তো ঠিক নয়। কারণ ধীরে ধীরে আমি সুস্থ হয়ে উঠছি। কিন্তু হাজারো মানুষ যারা সুস্থ হতে পারেনি! যারা শ্বাস নিতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছে কিন্তু পারেনি শ্বাস নিতে! দুঃখগুলো বরং তাদের জন্য থাক। এখন এইটুকু অন্তত ভালো লাগছে, এটি আর স্টিগমা নয় আগের মতো। কারো কোভিড হলে সে লুকিয়ে রাখতো খবর, কারণ কোভিড হওয়াটা অনেকটা ছিল এইডস হওয়ার মতো। সমাজ ব্রাত্য করে দিত। এক বছরে এত মানুষকে ধরেছে এই কোভিড, এতে স্টিগমাটা গেছে। কেউ আর বলতে দ্বিধা করেনা যে তার কোভিড হয়েছে।
উল্লেখ্য, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে আন্দোলনের মুখে ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন তসলিমা। তিনি সুইডেনের পাসপোর্টধারী হিসেবে দিল্লিতে বসবাস করছেন। বাংলাদেশের দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ইউরোপ থেকে ভারতে এসে বসবাস করছেন তিনি। মাঝে কিছু বছর কলকাতাতেও ছিলেন।
২০২১ বিধানসভা ভোটের আগে মোদী–শাহের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়েছিলেন, ‘২০০৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আমায় ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল সিপিআইএম। ২০০৯ সাল থেকে আমার পশ্চিমবঙ্গ প্রবেশ আটকে রেখেছে। বিজেপি যদি আসল পরিবর্তন আনে তবে এবার কি আমি বাংলায় ঘুরতে যেতে পারবো?’
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১৮৩০
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ