রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য গাছ কাটার বিরোধিতাকারী পরিবেশবাদীদের তিরস্কার করলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ঘিরে বিভিন্ন সময় ক্ষতিকর প্রকল্প নিয়ে পরিবেশবাদীদের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন তিনি। আজ শনিবার (৮ মে) সকালে নিজের সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংকালে এমন অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, অতীতে ঘটে যাওয়া ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধেও সোচ্চার হতে হবে পরিবেশবাদীদের।
এ সময় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের স্থান ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সারেন্ডার (আত্মসমর্পণ) করার স্মৃতি ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার জন্যই জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে রাষ্ট্রপতি হয়ে এই উদ্যানের অধিকাংশ জায়গাজুড়ে শিশুপার্ক করেছিলেন। পরিবেশবাদীরা তখন প্রশ্ন তোলেন নাই কেন? কারো মুখে একটা কথাও সেদিন আমরা শুনতে পাইনি।’
ইতিহাস তুলে ধরে কাদের বলেন, ‘রেসকোর্স ময়দানে প্রথম গাছ লাগিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এটিকে উদ্যান হিসেবে বঙ্গবন্ধুই চালু করেছিলেন।
‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সারেন্ডার (আত্মসমর্পণ) করার জায়গা দর্শনীয় করে তোলার জন্য এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আগের সরকারগুলোর সময় সৌন্দর্য বাড়ানোর নামে এই ঢাকা শহরে রাস্তার পাশ থেকে অনেক সুন্দর সুন্দর গাছ কেটে ফেলা হয়েছিল, উজাড় করে ফেলা হয়েছিল এই নগরীর সৌন্দর্য। সেইসব নিয়ে পরিবেশবাদীদের তোড়জোড় নেই।’
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ওই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বেশ কিছু গাছ ইতোমধ্যে কাটা পড়েছে। কাটার জন্য আরও কিছু গাছ চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে ‘রেস্তোরাঁ ও হাঁটার পথ’ নির্মাণের জন্য গাছ কাটা হচ্ছে অভিযোগ করে এর প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে বিভিন্ন সংগঠন। গত কয়েকদিন ধরেই সেখানে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন প্রতিবাদকারীরা।
অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বলেছে, ঐতিহাসিক এই উদ্যানে ‘আন্তর্জাতিক মানের স্মৃতিকেন্দ্র’ গড়ে তোলার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ‘কিছু গাছ’ কাটা হয়েছে। গাছ কাটা নিয়ে ‘খণ্ডিত তথ্য’ প্রচার হওয়ায় জনমনে ‘বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে’।
এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, “উদ্বিগ্ন হবেন না। সরকার এ ব্যাপারে যথেষ্ট সজাগ রয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবসম্মত উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।”
এর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঢাকা সড়ক জোন, বিআরটিসি ও বিআরটিএর কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি মতবিনিময় সভায় যুক্ত হন।
এ সময় মন্ত্রী ঈদকে সামনে রেখে ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টের বিষয়টি সমন্বয় করে জনভোগান্তি লাঘবে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।
সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বর্ষার আগেই রাস্তা মেরামতের কাজগুলো শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, চলমান গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজগুলো অগ্রাধিকারভিত্তিতে শেষ করতে হবে। পাশাপাশি, পুরনো কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নতুন কোনো প্রকল্প হাতে না নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টের নির্দেশনা দেন মন্ত্রী।
তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর নির্মাণকাজ ধীর গতিতে এগোচ্ছে উল্লেখ করে এ কাজের গতি বাড়াতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেন ওবায়দুল কাদের।
বিআরটিসিকে লাভের ধারায় ফিরে আসতে হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বারবার লোকসানের কথা আর শুনতে চাই না। তিনি বিআরটিসির কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন।
গত কয়েকদিনে ফেরিঘাটে ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উদাসীনতা লক্ষ্য করা গেছে,শপিংমল মার্কেটগুলোতেও একই অবস্থা। বেঁচে থাকলে ভবিষ্যতে অনেক আনন্দ উৎসব করা যাবে, কাজেই এবার অন্তত সবাই মিলে ত্যাগ স্বীকার করি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে যার যার অবস্থানে থেকে ঈদ উদযাপন করতে সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আসুন সকলে মিলে প্রাণঘাতী এই করোনাকে প্রতিরোধ করি।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৮০১
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ