উন্নত বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশের প্রায় ৫৭ শতাংশ মানুষ বিদ্যুতের সুফল থেকে বঞ্চিত। মাত্র ৪৩ শতাংশ মানুষের বিদ্যুৎ-সুবিধা দিতেই হিমশিম খাচ্ছে সরকার। এ দেশের বিদ্যুতের প্রধান উৎস প্রাকৃতিক গ্যাস। দেশের মোট বিদ্যুতের সিংহভাগ আসছে ভূগর্ভস্থ জীবাশ্ম থেকে। প্রাকৃতিক সম্পদ সীমাহীন নয়। মজুত জীবাশ্ম দ্রুতই হ্রাস পাচ্ছে। তাই সরকার এই সমস্যা নিরসনে পদক্ষেপ নেবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেটা করতে গিয়ে মানুষের প্রাণ ও স্বাস্থ্য নিয়ে ঝুঁকি নেয়াটা কতখানি সঠিক, তা-ও বিবেচনায় নিতে হবে৷
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পটি একদিক দিয়ে যেমন অত্যন্ত ব্যয় সাপেক্ষ, তেমন এর আছে মারাত্মক ঝুঁকি। বিভিন্ন সূত্র মতে, ইতিমধ্যেই নির্ধারিত ব্যয় বেড়েছে চিন্তাতীতভাবে। আবার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের পরও পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তবে এমন অসংখ্য সংশয়, সমালোচনার নাকে দড়ি পরিয়ে রেখেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ এগিয়ে চলেছে এবং ২০২৩ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করবে বলে জানা যায়।
সুফল ভোগ করবে ৬ কোটি মানুষ
আমাদের অর্থনীতির মূল শক্তি কৃষি ও শিল্প কারখানা চালু রাখা, নতুন শিল্প কারখানা স্থাপন, সর্বোপরি আমাদের প্রতিদিনের জীবন যাত্রা ঠিক রাখার জন্য বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে সরকার ২০৩০ সাল থেকে দেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ১০% পারমাণবিক শক্তি থেকে উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়েছে।
দেশে সামগ্রিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে। কিন্তু সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। ২০৩০ সালে বাংলাদেশের সর্ব মোট বিদ্যুতের চাহিদা দাঁড়াবে ৪০ হাজার মেগাওয়াট।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হলে উৎপাদিত ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে। যার সুফল ভোগ করবে দেশের ৬ কোটি মানুষ। রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প থেকে ৬০ বছর নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় কম হবে।
উল্লেখ্য, সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে রাশিয়ান প্রযুক্তিতে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে থ্রি প্লাস জেনারেশনের ভিভিইআর-১২০০ মডেলের দুটি রিয়্যাক্টর বসানো হবে। ২০২৩ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে প্রকল্পের ইউনিট-১ এবং ইউনিট-২ এর উৎপাদন শুরু হবে ২০২৪ সালে।
কেন লাভজনক পারমাণবিক প্রযুক্তি?
বিশ্বে পারমাণবিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে। ৩০টিরও বেশি দেশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। পারমাণবিক প্রযুক্তির আর্থিক, কারিগরি ও পরিবেশগত সুবিধাদি বিবেচনায় ঘনবসতিপূর্ণ ও স্বল্প জ্বালানি সম্পদের অধিকারী রাষ্ট্রগুলো পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কর্মসূচিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অন্যতম বিকল্প হিসেবে গ্রহণ করেছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে পারমাণবিক প্রযুক্তি নির্ভরতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ার মূল কারণ হল, আন্তর্জাতিক বাজারে নিয়মিতভাবে তেল-গ্যাস সরবরাহ ও মূল্য সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা এবং উন্নত দেশগুলোতে তেল-গ্যাসের মজুদ দ্রুত হ্রাস পেতে থাকার পেক্ষাপটে পারমাণবিক বিদ্যুৎ জ্বালানি শক্তির আমদানি নির্ভরতা হ্রাস করে।
গ্রীন হাউজ গ্যাসের নিঃসরণ হ্রাসের মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে বড় ভূমিকা রাখে। এছাড়া ৪৫ টন উচ্চগ্রেডের কয়লা থেকে যে শক্তি পাওয়া যায়, তা মাত্র ১ কেজি ইউরেনিয়াম থেকে তা পাওয়া সম্ভব। এ সমস্ত বিষয় বিবেচনায় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চাহিদা বিশ্বজুড়ে ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
ছেলের হাতের মোয়া নয় পারমাণবিক শক্তি!
পাবনার ঈশ্বরদীতে যে স্থানে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মিত হচ্ছে তার মাত্র ১০ বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ৩ লক্ষ মানুষের বসবাস। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সময় পাওয়া যায়। কিন্তু পারমাণবিক বিস্ফোরণ বা পারমাণবিক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে এ সময় মাত্র ২ থেকে ৩ ঘন্টা। অনাকাঙ্ক্ষিত এমন কোন ঘটনা যদি বাংলাদেশে ঘটে যায় তাহলে তা সামাল দেওয়ার মতো সক্ষমতা কি আমাদের আছে?
কিছুটা পেছনে ফিরে যাই। ১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল। স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ পারমাণবিক দুর্ঘটনায় এ দিনে তাৎক্ষণিকভাবে নিহত হয় ৩১ জন। এছাড়া তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে। পরবর্তী তিন মাসের মধ্যেই মারা যায় কয়েকশ’ মানুষ। পরবর্তী সময়ে এই অঞ্চলে বসবাসকারী হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হয় থাইরয়েড ক্যান্সারে। বলছিলাম চেরনোবিলের কথা, যা এখন পরিণত হয়েছে এক পরিত্যক্ত শহরে।
পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশের বিদ্যুতের চাহিদা পারমাণবিক শক্তিনির্ভর। তবে তাদের আছে দুর্ঘটনা মোকাবিলার সামর্থ্য ও দক্ষতা। তবুও বিশ্বের বিখ্যাত পদার্থবিদেরা এই পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করছেন প্রতিনিয়ত। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে হঠাৎ পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার পরিকল্পনা কতটুকু যথার্থ তা হয়তো মানুষের সীমাহীন দুর্দশা দিয়েই প্রমাণ করতে হবে।
একজন বিখ্যাত পদার্থবিদ তার গবেষণাপত্রে বলেছিলেন, ‘পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা মানে কলেরা দূরীকরণে ডায়াবেটিসের ওষুধ সেবন করা।’
দুর্ঘটনা না ঘটলেও যুগ যুগ ধরে ভুগতে পারে মানুষ
আমরা প্রচলিত বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থাকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতেই এখনও হিমশিম খাই। সেখানে তেজস্ক্রিয়তাযুক্ত পারমাণবিক শক্তি পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া কতটা সঠিক এই জোরালো প্রশ্ন থেকেই যায়!
পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের উপজাত সামগ্রীর ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো প্রতিনিয়ত এই তেজস্ক্রিয় পদার্থ নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, পারমাণবিক শক্তি পরিচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে নির্গত বর্জ্য যদি সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা না যায় তাহলে সেটি দুর্যোগে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা প্রকট হয়ে ওঠে।
রাসায়নিক প্রতিক্রিয়ার ব্যর্থতা টেনে নিয়ে আসতে পারে হিরোশিমার মতো অভিশাপ, সামান্য ভুলের মাশুল দিতে হতে পারে লাখো প্রাণের বলিদানে। কারণ, পারমাণবিক ফিউশন ইমপ্যাক্ট অনেক দীর্ঘস্থায়ী এবং যুগে যুগে এর ক্ষত বহন করতে হতে পারে বাংলার নিরীহ মানুষের।
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র যে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, চেরনোবিল আর ফুকুশিমার ঘটনায় সেটা প্রমাণিত হয়েছে৷ তবে শুধু দুর্ঘটনা হলেই যে পরমাণু কেন্দ্রের ক্ষতির দিকটি সামনে আসে তা নয়৷ সবকিছু ঠিকঠাকভাবে চললেও সেখান থেকে তেজস্ক্রিয়তা বের হতে পারে, যেটা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, এমনকি প্রাণঘাতীও হতে পারে৷
টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোর আশেপাশে গত ২০ বছরে যত মানুষ মারা গেছেন, তাদের প্রায় ৭০ ভাগেরই মৃত্যুর কারণ ক্যানসার৷ তথ্যটি দিয়েছে ভারতের পরমাণু শক্তি বিভাগের অধীন সংস্থা ‘ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার’৷
শুধু তাই নয়, গত ২০ বছরে নাকি এসব কেন্দ্রে কাজ করা ২৫৫ জন দীর্ঘকাল রোগে ভুগে বা পারিবারিক অন্যান্য সমস্যার কারণে আত্মহত্যা করেছেন৷
গরীবের ঘোড়ারোগ কি এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র?
রাশিয়ার সঙ্গে সই হওয়া সাধারণ চুক্তি (জেনারেল কন্ট্রাক্ট) অনুযায়ী প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারিত হয়েছিল ১ হাজার ২৬৫ কোটি মার্কিন ডলার বা ১ লাখ ১ হাজার কোটি টাকা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই ঘোড়ারোগ বহনের ক্ষমতা আমাদের দেশের আছে কি না!
প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ-সমীক্ষা, ভূমি উন্নয়ন, নকশা প্রণয়ন, কতিপয় ভৌত অবকাঠামো তৈরি প্রভৃতির জন্য ব্যয় হয় ৫৫ কোটি ডলার বা প্রায় ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এটা হিসাবে ধরে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৩২০ কোটি ডলার বা ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি।
রাশিয়া এই ১ হাজার ৩২০ কোটি ডলারের ৯০ শতাংশ ঋণ হিসেবে বাংলাদেশকে দিচ্ছে। অবশিষ্ট ১০ শতাংশ জোগান দেবে সরকার। সুদে-আসলে জনগণকে কি রাশিয়ার এই ঋণ শোধ করতে হবে না এক দিন?
এদিকে মন্ত্রণালয়ের সূত্রে, রূপপুর প্রকল্পের ভারী যন্ত্রপাতি ও মালামাল আনার জন্য পাকশী থেকে প্রকল্প এলাকা পর্যন্ত একটি বিশেষায়িত রেললাইন করা হচ্ছে। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ কোটি ডলার (প্রায় ৪০০ কোটি টাকা)। নৌপথে প্রকল্পের ভারী মালামাল পরিবহনের জন্য আরিচা থেকে পাকশী পর্যন্ত নদী খননে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫০ কোটি ডলার (প্রায় ১২শ কোটি টাকা)। রূপপুর থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য স্থিতিশীল লাইন তৈরি করতে হবে। এ জন্য একটি সমীক্ষা করা হয়েছে। তাতে এই কাজের জন্য ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ২৫০ কোটি ডলার (প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা)।
এসব মিলে ব্যয় দাঁড়ায় প্রায় ১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার, যা প্রতি ডলার ৮০ টাকা হিসাবে টাকার অঙ্কে দাঁড়ায় ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকার মতো। অবশ্য এই রেললাইন স্থাপন, নদী খনন ও সঞ্চালন লাইন নির্মাণের ব্যয় রূপপুর প্রকল্পের ব্যয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত না হয়ে রেল, নৌপরিবহন ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের খাতেও যেতে পারে।
এদিকে, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনা করতে যদি ভুল হয়, তাহলে অর্থনৈতিক ক্ষতিটা কেমন হতে পারে তার ছোট্ট একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। ২০১৪ সালে আমেরিকার নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যে একটি পারমাণবিক কেন্দ্রের নিউক্লিয়ার উপজাত দুর্ঘটনার শুধু বর্জ্য সরাতে খরচ পড়েছে মাত্র ২ বিলিয়ন ডলার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রূপপুরে বড় কোনও বিস্ফোরণ ঘটলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আশপাশে কমপক্ষে ৩০ কিলোমিটার এলাকার প্রায় ৩ লাখ মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, উদ্বাস্তু হতে হবে ৩০ লাখেরও বেশি মানুষকে। বিস্ফোরণের তেজস্ক্রিয়তার ফলে স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত ঝুঁকির বিষয়ে বলার অপেক্ষা রাখে না। এ রকম কোনও বিস্ফোরণ ঘটলে চরম বিপর্যয় নেমে আসবে পাবনা, কুষ্টিয়া, নাটোরসহ বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোয়, যার প্রভাব ছড়িয়ে পড়বে গোটা বাংলাদেশে। যুক্তরাষ্ট্র, জাপান বা ইউক্রেনের মতো উন্নত প্রযুক্তির দেশগুলো যেখানে পারমাণবিক বিস্ফোরণের ভয়াবহতায় হিমশিম খেয়েছে, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল জনবহুল একটি দেশের পক্ষে পারমাণবিক বিস্ফোরণের বিপর্যয় সামাল দেয়া প্রায় দুঃসাধ্য হয়ে উঠবে।
এসডব্লিউ/এসএস/২০৫৮
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ