দেশে সর্বাত্মক লকডাউন চললেও সীমিত পরিসরে চলছে ব্যাংকিং লেনদেন। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকে আইটি বিপর্যয়ের কারণে আন্তঃব্যাংক চেক লেনদেন ও অনলাইন ট্রান্সফার (ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার) বন্ধ রয়েছে। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের দুটি সার্ভারের একটি মতিঝিলে ও অন্যটি মিরপুরের বাংলাদেশ ব্যাংক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (বিবিটিএ)। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার একটিতে সংযোগে বিপত্তি ঘটে। এরপর থেকেই চেক নিষ্পত্তি ও অনলাইন অর্থ স্থানান্তর হচ্ছে না।
এর ফলে সোনালী ব্যাংকের চেক অন্য ব্যাংকে জমা দিলে এখনই তা নিষ্পত্তি হবে না। পাশাপাশি সোনালী ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে অনলাইনে তাৎক্ষণিক অর্থ স্থানান্তর করা যাচ্ছে না। এখন কেউ করলে পরে যখনই সিস্টেম চালু হবে তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা নিষ্পত্তি হয়ে যাবে।
তবে চালু আছে রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট বা আরটিজিএস। ফলে আন্তব্যাংক লেনদেন একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়নি।
জানা গেছে, গত ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংকের দুটি ডেটা সেন্টারের মধ্যে সংযোগকারী ফাইবার অপটিক্যাল কেবল বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এরপর মাইক্রোসফট ও ভিএমওয়্যার- এই দুইটি প্রযুক্তি টিম এই সমস্যা সমাধানে কাজ করছে। যে দুটি সার্ভিস বন্ধ রয়েছে, সেগুলোর মাধ্যমে দৈনিক গড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়ে থাকে। এই সমস্যার সমাধান কখন হবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম জাতীয় এক দৈনিককে বলেন, ‘বিষয়টি সমাধানে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিটিসিএলের লাইনে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ওই দৈনিককে বলছেন, ব্যাংক বন্ধ থাকবে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরুর আগে সরকারের এমন সিদ্ধান্তের কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ দুটি লেনদেন ব্যবস্থায় আগে থেকে আদেশ দিয়ে রাখতে হয় কবে কোন সময় লেনদেন হবে। সে হিসেবে ব্যাংক বন্ধের ঘোষণায় এ দুটি সিস্টেম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এখন দ্রুতগতিতে যাতে কাজ শুরু হয়, এ জন্য ডেটা আপলোডের কাজ চলে।
আন্তঃব্যাংক চেক লেনদেন ও ইএফটি— এই দুটিই ব্যাংকিং সেক্টরের আর্থিক খাতে লেনদেনের অন্যতম বড় দুটি মাধ্যম। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকে আইটি বিপর্যয়ের কারণে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। দ্রুত এই সংকট নিরসন করতে না পারলে ভোগান্তি আরো বাড়বে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ দিকে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান কঠোর বিধি-নিষেধে বাংলাদেশ ব্যাংক দিকনির্দেশনা দেয়। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি ছুটির দিন ছাড়া অন্য দিনগুলোতে ব্যাংক খোলা থাকবে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত। তবে লেনদেন চলবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত।
আরও বলা হয়, সিটি করপোরেশন এলাকায় ব্যাংকের প্রতিটি শাখা একদিন পরপর খোলা থাকবে। অর্থাৎ শাখাগুলো একদিন বন্ধ থাকলে পরের দিন খোলা থাকবে। এই নিয়মে চলবে উপজেলা পর্যায়ের শাখাতেও। জেলা পর্যায়ে সদর শাখা খোলা থাকবে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/ ১৪৪২
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ