দেশের যেকোন রাস্তার দেয়ালে কান পাতলে আপনি শুনতে পারবেন— ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’ ‘ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ ‘গো ব্যাক গো ব্যাক, গো ব্যাক ইন্ডিয়া’, ‘সাম্প্রদায়িক মোদি, গো ব্যাক গো ব্যাক’। এদিকে আজ শুক্রবার সকালে দুই দিনের সফরে ঢাকায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
কিন্তু কেন? কেন প্রতিবেশী দেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে তেঁতে উঠবে পুরো দেশ? কেন এই প্রতিবাদ, বিরোধিতাকে সরকার দমন করল শক্তহাতে?
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে এশিয়ার আরো ৬-৭টি দেশের প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতিরা আসছেন, তাদের নিয়ে দেশের মানুষের কোনও মাথাব্যথা নেই। কোন প্রতিবাদ মিটিং মিছিল নেই। পুলিশের সামনে বুক উঁচিয়ে দাঁড়ানো নেই। মোদির প্রতি এই বিদ্বেষ কেন? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই সফরের সাথে দেশের মানুষের সম্পৃক্ততা কোথায়? স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সাধারণ মানুষের অংশঅগ্রহণ কোথায়?
এদিকে মোদির প্রতি এই বিদ্বেষ প্রসঙ্গে ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন বলেন, ‘মোদির মতো একজন সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি, যার হাতে লেগে আছে মুসলমানদের রক্ত, তাকে আমরা ওয়েলকাম জানাতে পারি না। মোদিকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা মানে অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চেতনায় আঘাত হানা, আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা। মোদির মতো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাবাজকে এনে আমাদের সম্প্রীতি বিনষ্ট করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, এটা আমরা মেনে নিতে পারি না। আমরা তাকে মেনে নিতাম, যদি তিনি যদি সীমান্ত হত্যা করার জন্য এ দেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতেন, তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন করতেন, এ দেশের রাজনীতিতে তিনি যদি নাক না গলাতেন।’
মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা বিগত কিছু দিন ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ছাত্রসংগঠন প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। এদিকে আন্দোলন দমাতে মাঠে নেমেছে দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়ানো সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। আন্দোলনকারীদের উপর চড়াও হচ্ছে তারা। এক্ষেত্রে কাঠের পুতুলের মতো নীরব দর্শক ব’নে আছে পুলিশ। যদিও আন্দোলনকারীদের উপর লাঠিচার্জ, গ্রেফতার, আটক, হয়রানিতে তারাও রুদ্রমূর্তি ধারণ করছে।
এদিকে, নরেন্দ্র মোদি আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিমানবন্দরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। দেওয়া হয় গার্ড অব অনার।
মশাল মিছিলে ছাত্রলীগের হামলা
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের প্রতিবাদে আয়োজিত বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচিতে দিনভর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব হামলায় ঢাবিতে কর্মরত দুই সাংবাদিকসহ বিভিন্ন সংগঠনের ৩০ জনের মতো নেতাকর্মী আহত হন।
সূত্র মতে, কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের মারধর করে তাদের ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে যায়
এ হামলায় দৈনিক প্রথম আলোর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আসিফ হিমাদ্রী ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের দুই সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছে। তারা দু’জনই গণমাধ্যমদুটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাখাওয়াত ফাহাদ বলেন, ৯টি ছাত্রসংগঠনের মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনসমূহের ব্যানারে সন্ধ্যা ৬টার দিকে টিএসসি থেকে মশাল মিছিল বের হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে হাকিম চত্বরের সামনে অবস্থান নেয়। পরে সেখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতি চিরন্তনের দিকে যায়। স্মৃতি চিরন্তনের উল্টো দিকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন। মিছিলের শেষ পর্যায়ে আনুমানিক রাত ৮টার দিকে অতর্কিতে তাদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালায়।
রাত ৯টার দিকে টিএসসি এলাকায় লাঠিসোঁটা হাতে আবারও অবস্থান নেন ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। ওই অবস্থান থেকে তারা পরে মোটরসাইকেলে পুরো ক্যাম্পাসে মহড়া দেন।
পুলিশ— কাঠের পুতুল!
এ সময় ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি এপিসি, একটি জলকামান, একটি কার ও একটি জিপ দাঁড়ানো ছিল। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা রাজারবাগ থেকে এসেছেন বলে জানান।
কোনো হামলার ঘটনা ঘটেছে কি না জানতে চাইলে তারা বলেন, এ সম্পর্কে তারা কিছু জানেন না। এমন কোনো খবর পাননি। তাদের চারপাশে তখন বেশ কিছু লাঠিসোঁটা পড়ে থাকতে দেখা যায়। লাঠিসোঁটা পড়ে থাকতে দেখা গেছে স্মৃতি চিরন্তনের সামনেও। পাশাপাশি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নাম লেখা কিছু ফেস্টুনও পড়েছিল।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে এপিসি ও জলকামানকে ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে দেখা যায়। এদিকে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় উপাচার্যের অনুমতি ছাড়া পুলিশ ঢোকে না। কেউ কোনো অভিযোগ জানায়নি। তবে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছেন তারা।
আহত ডাকসুর সাবেক ভিপি নূর
বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর বিরোধী বিক্ষোভে মতিঝিল শাপলাচত্বরে পুলিশের ছোড়া টিয়ারগ্যাসে আহত হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।
মোদির আগমনের বিরোধিতা করে রাজধানীর মুক্তাঙ্গন এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদ। মিছিলটি মতিঝিল এলাকায় পৌঁছালে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ বাঁধে। এসময় পুলিশ ফাঁকা গুলি, টিয়ারগ্যাস, রাবার বুলেট ছোঁড়ে। টিয়ারগ্যাসে আহত হন নুর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘নুরুল হক নুর গুলিবিদ্ধ হননি। টিয়ার গ্যাসের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এখন সুস্থ আছেন।’
আহত ১৭, গ্রেফতার ৩৩
মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে রাজধানীতে যুব অধিকার পরিষদ ও বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের ঘটনায় ৩৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশের ওপর হামলাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় চার পুলিশ সদস্য রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর পল্টন থানার বিজয়নগর পানির ট্যাংকি থেকে মিছিল শুরু করে মুক্তাঙ্গনের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৩ জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক। আটকদের নাম-পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী অনেকেই পালিয়েছে তাদেরকে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে আইনের আওতায় আনা হবে।
রাজশাহীতে আটক ৫
বুধবার (২৪ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজশাহীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আসলে পুলিশ ও বামপন্থী নেতাদের মাঝে তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে তাদের আটক করে বোয়ালিয়া থাকায় নিয়ে যায় পুলিশ।
আটকরা হলেন-সিপিবি রাজশাহী জেলার সভাপতি কমরেড এনামুল হক, সাধারণ সম্পাদক কমরেড রাগিব হাসান মুন্না, বাসদ রাজশাহী জেলার আহ্বায়ক আলফাজ হোসেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফেডারেশনের আহ্বায়ক শাহরিয়ার, রাজশাহী মহানগর ছাত্র ফেডারেশনের সম্পাদক জিন্নাত আরা সুমু।
সিলেটে পুলিশের লাঠিচার্জ— আহত ১০, আটক ৭
মোদির বাংলাদেশে সফরের প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সিলেটের কালো পতাকা মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পণ্ড করে দিয়েছে। এসময় বাম নেতাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। মিছিল থেকে দুই নারী নেত্রীসহ সাতজনকে আটক করে পুলিশ।
বুধবার (২৪ মার্চ) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে সফরের প্রতিবাদে বিকেলে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতাকর্মীরা সিলেটে কালো পতাকা মিছিল বের করে। এসময় পুলিশ মিছিলে বাধা দেয়। বাধা উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা মিছিল করতে চাইলে পুলিশ মিছিলে লাঠিচার্জ করে।
এতে উদীচী সিলেটের নেতা সন্দ্বীপন রায়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি জুয়েল আহমদ, ছাত্র ইউনিয়ন সিলেট মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক কাউসার আহমদসহ বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্তত ১০ জন নেতাকর্মী আহত হন। পরে দুই নারীনেত্রী ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক উজ্জ্বল রায়সহ সাতজনকে আটক করে পুলিশ।
টিএসসিতে ছাত্রলীগের হামলা
২৩শে মার্চ মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে মোদির সফরের প্রতিবাদে প্রগতিশীল ছাত্র জোটের নেতৃত্বে বিক্ষোভ করে বেশ কয়েকটি বাম দলের ছাত্র সংগঠন। টিএসসি সংলগ্ন স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্ত্বরে মোদির কুশপুতুল দাহ করার সময় হামলা করে সরকারি দলের সহযোগী ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। এতে দু’জন সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ভর্তি করা হয়ে। হামলায় প্রগতি বর্মণ তমা, মেঘমল্লার বোস, অসমানী আশা, সুমাইয়া সেতু এবং দৈনিক মানব জমিনের জীবন আহমেদ এবং দৈনিক দেশ রূপান্তরের রুবেল রাশিদসহ প্রগতিশীল ছাত্র জোটের ২৫ জন নেতা-কর্মী রয়েছেন।
এর আগে ওইদিন সকালে মোদির আগমনের প্রতিবাদে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের বিক্ষোভ মিছিল ও কুশপুত্তলিকা দাহ কর্মসূচিতে বাধা দেয় ছাত্রলীগ। দাহ করার আগেই মোদির কুশপুতুল কেড়ে নেয় তারা।
ছাত্রফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি সালমান সিদ্দিক বলেন, “আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে ছাত্রলীগ হামলা করেছে। আমাদের কমপক্ষে ২০-২৫ জন ভাই আহত হয়েছেন এবং তাদের মধ্যে ১৫ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।”
নরেন্দ্র মোদি এখন ঢাকায়
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে দু’দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছান। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিমানবন্দরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসাবে মোদিকে বিমানবন্দরে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা তার সফরসঙ্গী হিসাবে যোগ দিয়েছেন। বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা সেরে মোদি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। রাজধানী ঢাকার যেসব রাস্তায় মোদি চলাচল করবেন, ওইসব রাস্তায় বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় পতাকা দিয়ে মনোরমভাবে সাজানো হয়েছে। মোদির সফর ঘিরে নেওয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল সীমিত করা হয়েছে। এ সফরে সীমান্ত হত্যা, ভারতের ঋণের বিভিন্ন প্রকল্পসহ সব ইস্যুতেই আলোচনা হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
প্রথম দিনের কর্মসূচি অনুযায়ী আজ বিকেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। পরে মোদি জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে সম্মানিত অতিথি হিসেবে ‘মুজিব চিরন্তন’ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এই অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে তিনি উদ্বোধন করবেন বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল প্রদর্শনী। এরপর নৈশভোজে যোগ দেবেন। সফরের দ্বিতীয় দিন কাল শনিবার সকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে যাবেন। এরপর টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে গিয়ে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। টুঙ্গিপাড়া থেকে নরেন্দ্র মোদি যাবেন গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দিতে। তিনি ওড়াকান্দিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন, হরিচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে পূজা দেবেন। সবশেষে নরেন্দ্র মোদি বঙ্গভবনে যাবেন। সন্ধ্যায় সেখানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে ঢাকা ছেড়ে যাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১৩০০
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ