বেসরকারি খাতের প্রথম প্রজন্মের ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে বড় পরিবর্তন হয় ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই। ওই বছরে ব্যাংকটির কর্তৃত্ব চলে যায় সিকদার গ্রুপের চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদারের কাছে। নিজের স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, আত্মীয়স্বজন ও দলীয় নেতাদের পর্ষদে যুক্ত করে ব্যাংকটির একক নিয়ন্ত্রণ নেয় সিকদার পরিবার। শুরু হয় অনিয়ম, ব্যাংক ছাড়েন ভালো উদ্যোক্তারা। এর আগপর্যন্ত এটির পরিচিতি ছিল একটি শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক হিসেবে।
সিকদার পরিবারের হাতে ন্যাশনাল ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ যাওয়ার পর পরিচালনা পর্ষদের অযাচিত হস্তক্ষেপ ও বেনামি ঋণের নানা ঘটনা বেরিয়ে আসে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে। পর্ষদে পটপরিবর্তনের প্রায় ৬ বছর পর ২০১৪ সালে ন্যাশনাল ব্যাংকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে আর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। কারণ, সিকদার পরিবার ও তাদের পক্ষে যেসব সংস্থা প্রভাব বিস্তার করে আসছিল, একাধিক নিয়ন্ত্রক সংস্থাও তাতে সুর মেলায়। ফলে আরও খারাপ হয় ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিস্থিতি।
২০০৯ সালে যে ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪০০ কোটি টাকার কম, এখন তা বেড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে পাঁচটি ব্যাংককে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত দিয়েছে, তাদের মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণই সবচেয়ে বেশি। সর্বশেষ হিসাবে, ন্যাশনাল ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের ২৯ শতাংশই খেলাপি। গত দুই বছরে তাদের নিট লোকসান ৪ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। এমন পরিস্থিতিতে গত তিন বছর যাবৎ বড় অঙ্কের ঋণ প্রদান বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
দেশের দুর্বল ব্যাংকগুলোর একটি এখন ন্যাশনাল ব্যাংক। ব্যাংকটিকে বেসরকারি খাতের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) সঙ্গে একীভূত করার পরামর্শ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে ন্যাশনাল ব্যাংক তাতে সায় দেয়নি। হঠাৎ করে গত রোববার এর পর্ষদ পুনর্গঠন করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকটিকে সম্পূর্ণভাবে সিকদার পরিবারমুক্ত করা হয়েছে। নতুন পর্ষদে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের বেশির ভাগ চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি। ফলে ব্যাংকটির মালিকানা নতুন করে কার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
মিলেমিশে ব্যাংকটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন সময় এতে নীতি সহায়তা দিয়েছে। ফলে বড় এই ব্যাংকের পরিস্থিতি এতটা খারাপ হয়েছে।
ব্যাংকটির জ্যেষ্ঠ কয়েকজন কর্মকর্তার অভিযোগ, সিকদার পরিবার নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে ব্যাংকটিকে শেষ করেছে। একইভাবে সরকারঘনিষ্ঠ বড় কিছু ব্যবসায়ী বড় অঙ্কের ঋণ নেওয়া, সুদ মওকুফ করানো ও টাকা পাচারের জন্য ন্যাশনাল ব্যাংককে বেছে নিয়েছেন। তাঁরা প্রভাব খাটিয়ে নানা রকম সুবিধা নিয়েছেন। এভাবে মিলেমিশে ব্যাংকটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন সময় এতে নীতি সহায়তা দিয়েছে। ফলে বড় এই ব্যাংকের পরিস্থিতি এতটা খারাপ হয়েছে।
ওই কর্মকর্তারা জানান, তারল্য-সংকটের কারণে মাঝেমধ্যেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাহিদামতো নগদ জমা (সিআরআর) রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে ন্যাশনাল ব্যাংক। ফলে জরিমানাও গুনছে ব্যাংকটি।
ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে প্রায় দুই বছর দায়িত্ব পালন শেষে গত ডিসেম্বরে অবসরে গেছেন মেহমুদ হোসেন। ব্যাংকের এই পরিণতি সম্পর্কে তিনি বলেন, এমন সুদ মওকুফ করা হয়েছে, যার মুনাফার ওপর সরকারকে আগেই কর দেওয়া হয়েছে। আবার যার চাহিদা ছিল ২০ কোটি টাকার ঋণ, তাকে দেওয়া হয়েছে ১৫০ কোটি টাকা। এসব অর্থ কোনো উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ হয়নি। উচ্চ সুদে আমানত এনে কম সুদে ঋণ দেওয়া হয়েছে। এসব ঋণের টাকা ফেরত আসেনি কিন্তু ঠিকই উঁচু হারে সুদ ও আমানতের অর্থ ফেরত দিতে হয়েছে গ্রাহককে। এতে তারল্য-সংকট হয়েছে, জরিমানা গুনতে হয়েছে। যা সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে।
মেহমুদ হোসেন আরও বলেন, ন্যাশনাল ব্যাংককে ঘুরে দাঁড়াতে হলে দক্ষ পরিচালনা পর্ষদ ও চৌকস ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন, যারা কোনো গোপন অ্যাজেন্ডা ছাড়া ব্যাংকের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংককে নীতি ও তারল্য সহায়তা দিতে হবে। সরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানও ব্যাংকটি থেকে টাকা তুলে নিয়ে গেছে। এসব টাকা ব্যাংকে ফেরাতে হবে। বড় ঋণ বন্ধ আছে, এটি বহাল রাখতে হবে। এ ছাড়া ব্যাংকটিকে ভালো করা কঠিন।
বিভিন্ন নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, শুধু দেশে নয়, বিদেশেও গ্রুপের ব্যবসা বিস্তৃত হয়েছে। অর্থ বিনিয়োগ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ডসহ আরও কিছু দেশে।
যেভাবে খারাপ হলো ব্যাংকটি
বেসরকারি খাতের প্রথম প্রজন্মের ব্যাংকগুলোর একটি ন্যাশনাল ব্যাংক। ১৯৮৩ সালে কার্যক্রম শুরু করা এ ব্যাংকের প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আজিজুর রহমান মল্লিক। ব্যাংকটিতে তাঁর কোনো শেয়ার না থাকার পরও উদ্যোক্তারা তাঁকে শুরুতে ১০ বছর চেয়ারম্যান পদে রেখেছিলেন। এরপর শেয়ারধারীরা ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন। তখনো ভালো ব্যাংক হিসেবেই ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচিতি ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি পরির্বতিত হয় ২০০৯ সালে।
ওই বছর ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন জয়নুল হক সিকদার। এরপর অন্য উদ্যোক্তারা ব্যাংকটি ছাড়তে একরকম ‘বাধ্য’ হন বলে অভিযোগ রয়েছে। খারাপ হতে শুরু করে ব্যাংকটির অবস্থা। কিন্তু ওই সময় থেকেই ফুলেফেঁপে উঠতে শুরু করে সিকদার পরিবারের সম্পদ। ব্যাংক ছাড়াও বিমা, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আবাসন, নির্মাণ, হোটেল, পর্যটন, এভিয়েশনসহ বিভিন্ন খাতে গ্রুপটির ব্যবসা বিস্তৃত করে।
বিভিন্ন নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, শুধু দেশে নয়, বিদেশেও গ্রুপের ব্যবসা বিস্তৃত হয়েছে। অর্থ বিনিয়োগ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ডসহ আরও কিছু দেশে।
ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিস্থিতি সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের করা এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ব্যাংকটির বিতরণ করা ঋণের অনেকগুলোই সিকদার পরিবার ও তাদের প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে জমা হচ্ছে। আবার বেনামি ঋণ সৃষ্টি করেও পরিবারটি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে।’
জানা গেছে, এসব টাকা আর ব্যাংকে ফেরত আসছে না। পাশাপাশি ব্যাংকটি এমন অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়েছে, যেসব ঋণের আদায় নেই বললেই চলে। তারপরও এসব ঋণ খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে না।
ব্যাংকের নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০০৯ সালে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ছিল ৩৮৮ কোটি টাকা, গত ডিসেম্বরে যা বেড়ে হয়েছে ১২ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে ব্যাংকটির বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ৪২ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা।
সিকদার পরিবারের দিকে ইঙ্গিত করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বৃহস্পতিবার এক বক্তৃতায় বলেন, ‘জগন্নাথ কলেজে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতাকে ব্যাংক দেওয়া হয়েছিল। তাঁর ছেলে জনসমক্ষে একটি ব্যাংকের এমডিকে গুলি করে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। তারা কত টাকা যে বিদেশে নিয়ে গেছে, তার হিসাব নেই। এই ব্যাংক একীভূত করে, না আলাদা রেখে শায়েস্তা করা হবে, এটা সিদ্ধান্তের বিষয়। একীভূত করা ভালো সিদ্ধান্ত, তবে এটা নতুন করে সংকট তৈরি করতে পারে।’
সুদ মওকুফের পর বড় লোকসানে
সংকটে থাকার পরও ২০২১ সালে ৭ গ্রাহকের ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করে ন্যাশনাল ব্যাংক। বিভিন্ন শর্ত দিয়ে এক দিনেই বড় অঙ্কের সুদ মওকুফ করার বিষয়ে অনাপত্তি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব সুদ আগের ১০ বছরে আরোপ করা হয়েছিল। সাতটি প্রতিষ্ঠানই চট্টগ্রামের। ন্যাশনাল ব্যাংকের চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ও ঢাকার গুলশান শাখা ২০০৩ সাল থেকে বিভিন্ন সময় এই সাত প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংকের বিভিন্ন নথি বিশ্লেষণে দেখা যায়, যেসব সুদ মওকুফ করা হয়, তা আরোপ করা হয়েছিল ২০১০ সাল থেকে। এই সুদ ন্যাশনাল ব্যাংক প্রতিবছর আয় হিসেবে দেখিয়েছে। আয়ের বিপরীতে মুনাফা থেকে ব্যাংকটি সরকারকে কর দিয়েছে, আবার শেয়ারধারীদের লভ্যাংশও বিতরণ করেছে। এরপর এসব সুদ মওকুফ করা হয়। এখন প্রতিবছরের আয় থেকে এই সুদ মওকুফ বাবদ অর্থ বাদ দিতে হবে।
কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংকটি দুই বছর ধরে লোকসানে পড়ার এটাও অন্যতম কারণ। ২০২২ সালে ব্যাংকটির লোকসান হয় ৩ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা, আর ২০২৩ সালে লোকসান দাঁড়ায় ১ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা। এর আগপর্যন্ত কমবেশি মুনাফা করেছে ব্যাংকটি। ২০১৮ সালে ব্যাংকটি ৪১০ কোটি টাকা, ২০১৯ সালে ৪১৬ কোটি টাকা, ২০২১ সালে ৩৪৮ কোটি টাকা ও ২০২১ সালে ১৯ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছিল।
বড় গ্রাহক ও বড় খেলাপি যারা
ব্যাংকটির গত ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী, বিতরণ করা ৪২ হাজার কোটি টাকা ঋণের অর্ধেকই ২০টি গ্রুপের কাছে সীমাবদ্ধ। তারাই ব্যাংকটির একরকম নিয়ন্ত্রক। এর মধ্যে কেউ কেউ খেলাপি হয়ে আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে ভালো গ্রাহকের তালিকায় রয়েছেন। আর এই সুযোগে ব্যাংকটি খেলাপি ঋণ কম দেখানোর সুযোগ পাচ্ছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রয়াত সংসদ সদস্য আসলামুল হকের মাইশা গ্রুপের ঋণ স্থিতি ২ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা, যার ওপর আদালতের স্থগিতাদেশ আছে।
এ ছাড়া বসুন্ধরা গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঋণের স্থিতি ৩ হাজার ৬১২ কোটি টাকা; বেক্সিমকো এলপিজি ও বেক্সিমকো গ্রুপের ঋণ স্থিতি ২ হাজার ১১৭ কোটি টাকা; চট্টগ্রামের মো. ইয়াসীন চৌধুরীর এফএমসি গ্রুপের ঋণ ১ হাজার ৬১০ কোটি টাকা; সাইফ পোর্ট হোল্ডিং ও সাইফ পাওয়ারটেকের ঋণ ১ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা; ফুওয়াং ফুড ও এসএস স্টিলের ঋণ ৬৯৮ কোটি টাকা; কর্ণফুলী গ্রুপের ঋণ ৬৭৫ কোটি টাকা।
অন্যদিকে ব্যাংকটির খেলাপি গ্রাহকদের তালিকা পর্যালোচনায় দেখা যায়, শীর্ষ ২০ খেলাপি গ্রাহকের কাছে আটকা পড়েছে ৮ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্লুম সাকসেস ইন্টারন্যাশনালের খেলাপি ঋণ ৮৩৬ কোটি টাকা, ব্রডওয়ে রিয়েল এস্টেটের ৬৬৮ কোটি টাকা, নুরজাহান গ্রুপের ৫৯৬ কোটি টাকা, ডাইকিং স্মার্ট ব্যাটারির ৫৩১ কোটি টাকা ও এহসান গ্রুপের খেলাপি ঋণ ৬১৯ কোটি টাকা। এ ছাড়া মিলেনিয়াম গ্রুপের খেলাপি ঋণ ৫৪৭ কোটি টাকা, ওপেক্স সিনহা গ্রুপের ৫৩১ কোটি টাকা, মরিয়ম কনস্ট্রাকশনের ৪৭৯ কোটি টাকা, আরএসএ ক্যাপিটালের ৪৩১ কোটি টাকা, কেয়া কসমেটিকের ৩৭৬ কোটি টাকা, ইনডিপেনডেন্ট টিভির ৩৩৩ কোটি টাকা ও জিএমজি এয়ারলাইনসের ২৩৮ কোটি টাকা।
ন্যাশনাল ব্যাংকের যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, তাতে ক্ষুব্ধ সাবেক ব্যাংকাররাও। অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূরুল আমিন বলেন, ‘সবার চোখের সামনে প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংস করা হলো, কেউ কিছু করল না। ব্যাংকটিতে নিয়ম না মেনে নির্দেশিত ঋণ দেওয়া হয়েছে, অন্য সব সিদ্ধান্তও হয়েছে পর্ষদের নির্দেশে। আইনকানুন মানার কোনো বালাই ছিল না। সুশাসনের প্রচণ্ড রকম ঘাটতি ছিল ব্যাংকটিতে।’
মোহাম্মদ নূরুল আমিন আরও বলেন, এমন প্রতিষ্ঠান খারাপ করার জন্য যে ধরনের কর্মকাণ্ড করা প্রয়োজন, তার সবই এই ব্যাংকে ছিল। ফলে ব্যাংকটি খারাপ হয়ে পড়বে, এটাই স্বাভাবিক ছিল। যারা এসব করেছে, এখন পর্যন্ত তাদের কোনো জবাবদিহিও করতে হয়নি। দোষীদের বিচার না হলে ও জবাবদিহি না থাকলে অন্য ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
আপনার মতামত জানানঃ