বাংলাদেশের আইটি অবকাঠামোয় তথ্য চুরির ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির কথা বলেছে বিজিডি ই-গভ সার্ট। তারা বলেছে, সম্প্রতি কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে এ ধরনের ম্যালওয়্যারের আলামত পাওয়া গেছে। তাই সতর্ক থাকতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিজিডি ই-গভ সার্ট এই সতর্কবার্তা দিয়েছে। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের প্রকল্প বিজিডি ই-গভ সার্ট সরকারের সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করে থাকে।
বিজ্ঞপ্তিতে তারা বলেছে, আইটি অবকাঠামো থেকে তথ্য চুরির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ম্যালওয়্যারগুলো সামগ্রিকভাবে ইনফো স্টিলার হিসেবে পরিচিত।
এ ধরনের ম্যালওয়্যার আইটি অবকাঠামোয় লগ ইনের তথ্য যেমন ব্যবহারকারীর নাম, আইডি, পাসওয়ার্ড ও সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহ করে তা সাইবার অপরাধীদের কাছে পাঠায়। অপরাধীরা এসব তথ্য বড় ধরনের সাইবার আক্রমণের পরিকল্পনায় ব্যবহার করে।
বিজিডি ই-গভ সার্ট বলেছে, ব্যক্তি পর্যায়ে সংক্রমণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানও এই ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত হতে পারে। সম্প্রতি এ ধরনের ম্যালওয়্যার সংক্রমণের মাধ্যমে একাধিক ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে আক্রান্ত হওয়ার আলামত পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে এ ধরনের ম্যালওয়্যারের অস্তিত্ব আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ম্যালওয়্যারের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে সন্দেহজনক কোনো লিংকে ক্লিক না করা, অচেনা প্রেরকের কাছ থেকে প্রাপ্ত ই-মেইলের সংযুক্তির বিষয়ে বিশেষভাবে সচেতনতা অবলম্বন করতের পরামর্শ দিয়ে সুরক্ষিত থাকতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা মেনে চলতে অনুরোধ করেছে বিজিডি ই-গভ সার্ট।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সরকারি দুটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে সংরক্ষিত তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর নাগরিকদের তথ্যের সুরক্ষা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগের তৈরি হয়।
সরকারি ওয়েবসাইটের এসব তথ্যের মধ্যে রয়েছে কোটি কোটি নাগরিকের নাম, ফোন নম্বর, ইমেইল বা আবাসিক ঠিকানা, জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন নম্বরের মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
এই তথ্যভাণ্ডারের সঙ্গে বিভিন্ন প্রকার সেবা দানকারী ১৭১টি প্রতিষ্ঠান সংযুক্ত রয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। মার্কিন প্রযুক্তি বিষয়ক সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চে এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ঘটনাটি নিয়ে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, বিশ্বজুড়েই হ্যাকিং বা তথ্যের সুরক্ষা একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ আরও বড় বিপদে রয়েছে, কারণ এখানে প্রযুক্তি নিয়ে অনেক কাজ চললেও সুরক্ষার দিকে মনোযোগ এখনো কম।
তথ্য প্রযুক্তিবিদ ও ফাইবার অ্যাট হোমের চিফ টেকনোলজি অফিসার সুমন আহমেদ সাবির বলছেন, ‘’আপনি যদি গত তিন-চার বছরের বিভিন্ন ঘটনা পর্যালোচনা করেন, তাহলেই দেখা যাবে আমাদের পুরো সাইবার সিকিউরিটি কাঠামোতে একটা বড় ধরনের গলদ আছে। যে কারণে আমরা বারবার এ ধরনের ঘটনার মুখোমুখি হচ্ছি।
তিনি মনে করেন, একদিকে যেমন সাইবার সিকিউরিটি কাঠামোতে সমস্যা রয়েছে, তেমনি নিয়মিত পরীক্ষা করা, আপডেট করা বা নজরদারি করার মতো সিকিউরিটি রক্ষণাবেক্ষণে বড় ধরনের গলদ তৈরি হয়েছে।
আপনার মতামত জানানঃ