আগামী ৭ই জানুয়ারি পুনরায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে ওই নির্বাচনকে কিছু পর্যবেক্ষক ‘মঞ্চস্থ ভোট’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। দেশের প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এটিকে অভিহিত করেছে ‘ডামি নির্বাচন’ হিসেবে। অপরদিকে এটিকে ‘প্রহসন’ বলে বর্ণনা করেছে দ্য ইকোনমিস্ট।
সত্যিকারের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এড়াতে মরিয়া শেখ হাসিনা সরকার মাঠ থেকে তার একমাত্র প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বীকে সরিয়ে দিয়েছে। বিএনপির প্রধান বেশ কয়েকজন নেতাসহ দলটির বিশ হাজারেরও বেশি কর্মী এখন কারাগারে বন্দি। এমন অবস্থায় একটি অন্যায্য ভোটে অংশ নেয়ার চেয়ে, এই ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
বিভিন্ন ফ্যাক্ট দিয়ে এই বিষয়টি ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের সংসদে ৩০০ টি আসনের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ২৬৩ টি আসনে মনোনীত প্রার্থী দিয়েছে। এছাড়াও ২৬৯ জন দলীয় সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ভোটে দাঁড়িয়েছেন। যার অর্থ অনেক জায়গায় আওয়ামী লীগের দুই বা তার বেশি প্রার্থী রয়েছে।
নির্বাচনের এই সমস্ত বৈশিষ্ট্যগুলো ভোটের কয়েক সপ্তাহ আগে সামনে এসেছে। নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে ভোট নিয়ে বিতর্ক বাংলাদেশে নতুন কিছু নয়। কিন্তু নির্বাচনের আগেই এত এত সমালোচনা সত্যিই ব্যতিক্রম।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে কিছু পশ্চিমা দেশ বাংলাদেশে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পক্ষে জোর দিয়ে আসছে। গত সেপ্টেম্বরে মার্কিন সরকার ঘোষণা করেছে যে, এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িতদের উপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করছে। ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কাও রয়েছে৷ এই ধরনের চাপ প্রদানের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল, বাংলাদেশের শেষ দুটি জাতীয় নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি এড়ানো। ওই নির্বাচনগুলি অবাধ বা সুষ্ঠু নয় বলে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়।
ওই দুটি নির্বাচন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এর আগে শেখ হাসিনা একতরফাভাবে নির্বাচন আয়োজনের জন্য একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের বাধ্যতামূলক সাংবিধানিক বিধান বাতিল করেন।
এই ব্যবস্থাটি প্রথম সফলভাবে চালু করা হয় ১৯৯১ সালে। সেসময় বাংলাদেশ সামরিক শাসন থেকে মুক্তি পেয়েছিল। ১৯৯৬ সালে সংবিধানে এই নিয়ম লেখা হয়। সেসময় টানা দুই বছর এর দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন শেখ হাসিনা। এরপর আবার যখন সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাকে বিলুপ্ত করা হয়, তখন তা নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। সেসময় সংবিধান অনুযায়ী প্রয়োজনীয় গণভোটের সুযোগ রাখা হয়নি। শেখ হাসিনা সংসদে তার বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা ব্যবহার করে একই সংশোধনীর মাধ্যমে সাংবিধানিক পরিবর্তনের জন্য গণভোটের প্রয়োজনীয়তাও সরিয়ে দেন। এরপর থেকে তিনি একটানা ক্ষমতায় আছেন।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ নয় এমন বেশিরভাগ দলই তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছে। ২০১৪ সালে তারা সংসদ নির্বাচন বয়কট করেছিলেন। ওই বছর শেখ হাসিনার দল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অর্ধেকেরও বেশি আসন জিতে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরেছিল।
সম্ভবত বিব্রত বোধ করে তিনি আরেকটি নির্বাচন আয়োজনের প্রাথমিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিরোধীদের অভিযোগগুলো নিবৃত্ত করার জন্য। কিন্তু ভারত ও চীন তাকে দৃঢ় সমর্থন দিলে তিনি এই প্রতিশ্রুতি থেকে দ্রুত পিছু হটেন। যদিও অন্য আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো এই নির্বাচন নিয়ে তাদের অসন্তোষের কথা জানিয়েছিল।
২০১৮ সালেও আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। তা সত্ত্বেও বিএনপি এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলো শেখ হাসিনার সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনার পর নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। শেখ হাসিনা ভোট পরিচালনার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
কিন্তু হাজার হাজার বিরোধী কর্মীকে দ্রুত গ্রেপ্তার বা আটক করা হয়, বিরোধী দলগুলিকে সভা করার অনুমতি থেকে বঞ্চিত করা হয় এবং নির্বাচনী এজেন্টদের অপহরণ করার ও বিরোধী প্রার্থীদের বাড়িতে বন্দী করার খবর পাওয়া যায়। শেষ পর্যন্ত বেসামরিক কর্মচারী এবং পুলিশের সহায়তায় ব্যাপক ব্যালট স্টাফিং আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগীদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৩ আসনে জয় নিশ্চিত করে।
এইভাবে জালিয়াতি এবং ভোটাধিকার থেকে মানুষকে বঞ্চিত করার বিষয়টি পশ্চিমা দেশগুলির মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করে। তারা এই অনিয়মের স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছিলো। কিন্তু ভোটের ফলাফল নিয়ে তারা নিজেরাও বিশেষভাবে বিব্রত ছিল, কারণ বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি করাতে পর্দার আড়ালে তাদেরও কিছু ভূমিকা ছিল। পুনর্নির্বাচনের পর পশ্চিমারা শেখ হাসিনাকে কী বার্তা দিয়েছিল তা নিয়ে নীরব ছিলো সব পক্ষই। তবে ভারত ও চীন আবারও শেখ হাসিনার প্রতি তাদের দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করে।
২০২৪ সালের নির্বাচনকে ওই পুরানো নাটকের পুনরাবৃত্তি বলে মনে করছেন অনেকে। আগের নির্বাচনে বিভিন্ন দেশ যে ভূমিকায় ছিল, এবারও অনেকে তার পুনরাবৃত্তি করছে। ২০২২ সালের প্রথম দিকে মার্কিন চাপ হাসিনার সরকারকে এতটাই বিপর্যস্ত করেছিল যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে লবিংয়ের জন্য নয়াদিল্লির সাহায্য চাইতে বাধ্য হয়েছিলেন।
দিল্লি দুইভাবে এই সাহায্য করেছে। প্রথমত, শেখ হাসিনার বিরোধীদের শক্তিশালী কর অন্য দেশের দেয়া বিবৃতিগুলোর বিরোধিতা করেছে ভারত। দ্বিতীয়ত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সর্বোচ্চ দ্বিপাক্ষিক স্তরে ভারত এ বিষয়টি উত্থাপন করেছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছে যে, বর্তমান শাসনের ধারাবাহিকতা কীভাবে নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উভয় ক্ষেত্রেই ওয়াশিংটনের ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠ মিত্র ভারতকে সাহায্য করতে পারে ।
ঢাকা ও নয়াদিল্লিতে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার কারণে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক প্রায় সব ক্ষেত্রেই নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এই সময়ে বাংলাদেশে ভারতীয় রপ্তানি তিনগুণ বেড়েছে, বাণিজ্যের ভারসাম্যও ভারতের পক্ষে প্রশস্ত হয়েছে। কয়েক দশক ধরে চীন থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানির পর বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকেও অস্ত্র কিনেছে। ভারতের মিডিয়া এবং বিশ্লেষকরাও তাদের সরকারের বক্তব্য তুলে ধরছেন এবং বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের আহ্বান জানানোর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার সমালোচনা করছেন।
তারা এটিকে অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযৌক্তিক হস্তক্ষেপ বলে অভিহিত করছেন। যদিও তারা একটি বিষয় হয়তো ভুলে গেছেন। ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় নরেন্দ্র মোদি মার্কিন ভোটারদের জো বাইডেনের পরিবর্তে ডনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, ‘আবকি বার, ট্রাম্প সরকার’।
চীনও শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। আসন্ন নির্বাচন নিয়ে তাদের অবস্থানও ভারতের মতোই।
নয়াদিল্লি এবং বেইজিংয়ের এভাবে কোনো ইস্যুতে এক অবস্থানে আসার ঘটনা বেশ বিরল। দুই দেশই একে অপরের শক্ত আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এবং অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অবকাঠামো পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ঋণ প্রদান করে চীন। এর মধ্য দিয়ে দেশটি শেখ হাসিনার সাথে একটি বিশেষ সম্পর্ক গড়ে তুলতে শুরু করেছে। এটি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে এসেছিল, যখন বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগে ওই প্রকল্পে অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি থেকে সরে গিয়েছিল।
তারপর থেকে চীন উৎসাহের সাথে অন্যান্য অবকাঠামোর পাশাপাশি বাংলাদেশের মেগা প্রকল্পগুলোতে অর্থায়ন করে আসছে। ২০১৬ সালে এক রাষ্ট্রীয় সফরের সময় চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দুই দেশের সংস্থাগুলির মধ্যে স্বাক্ষরিত ১৩ বিলিয়নেরও বেশি মূল্যের চুক্তি ছাড়াও মূল প্রকল্পগুলির জন্য ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বাংলাদেশে চীনের রপ্তানি বার্ষিক ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। যদিও বাংলাদেশ থেকে চীনের আমদানি এক বিলিয়ন ডলারেই রয়ে গেছে।
অবকাঠামো প্রকল্পে চীনা অর্থায়নের উপর ঢাকার নির্ভরশীলতা বেশ কিছুদিন ধরে ভারতের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নয়াদিল্লির প্রধান উদ্বেগ হলো চীন বাংলাদেশে দৃঢ় অবস্থান নিতে চলেছে। ঢাকার দুটি সংস্কারকৃত চীনা সাবমেরিন ক্রয় এবং বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বে কুতুবদিয়ায় তাদের জন্য বিলিয়ন ডলারের ঘাঁটি নির্মাণ সেই উদ্বেগ আরো বাড়িয়েছে।
যদিও শেখ হাসিনা এখন পর্যন্ত চীন এবং ভারত উভয়ের সাথে তার ভূ-রাজনৈতিক সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রেখে চলেছেন। নয়াদিল্লি যুক্তি দিয়েছে যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি মার্কিন চাপ শেষ পর্যন্ত তাকে দৃঢ়ভাবে চীনের দিকে ঠেলে দিতে পারে। এতে বৃহত্তর ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল ক্ষতিগ্রস্তহতে পারে। এই কৌশলই মার্কিন-ভারত অংশীদারিত্বের প্রধান ভিত্তি।
বাইডেন প্রশাসন অবশ্য জোর দিয়ে বলেছে যে, শেখ হাসিনার দীর্ঘমেয়াদে ভিন্নমত দমন এবং গণতান্ত্রিক চর্চা বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতার জন্য আরও বড় হুমকি। এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচনের তিন মাস আগে ভিসা বিধিনিষেধের ঘোষণা এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের তরফে। জিম্বাবুয়ের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, বাংলাদেশেও নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে সে ধরণের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে সতর্কতা জারি করেছে দেশ ও দেশের বাইরে থাকা কোম্পানিগুলো। অপরদিকে শেখ হাসিনা বলছেন, বিএনপি এবং কিছু বিদেশি শক্তি বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির চক্তান্ত করছে।
অনেকে উল্লেখ করেছেন যে, আরেক বড় বৈশ্বিক খেলোয়াড় ইউরোপীয় ইউনিয়ন নির্বাচনের বিষয়ে কিছুটা নরম পথে হাটছে। তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো ততটা সোচ্চার হয়নি। জল্পনা রয়েছে যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুটি প্রধান বাণিজ্যিক স্বার্থ এক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংস্থা ‘বিমান’- এর কাছে এয়ারবাস জেট বিক্রি করতে একটি বড় চুক্তিতে যুক্ত আছে ফ্রান্স ও জার্মানি।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন এবং বিরোধীদের নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে উত্থাপিত প্রস্তাবটি ইঙ্গিত দেয় যে, বড় আকারের বিতর্ককে উপেক্ষা করা ইউরোপীয় কমিশনের জন্যেও কঠিন হবে।
ভূ-রাজনৈতিক ধাঁধায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে বাংলাদেশের বিষয়ে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান আগ্রহ। ২০২৪ সালের প্রথমদিকে চালু হতে যাওয়া ১২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের অর্থায়ন এবং নির্মাণে সম্মত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের সাথে রাশিয়ার অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা কম ছিল।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যেকার সম্পর্ক তলানিতে চলে যায়। এমন অবস্থায়, মস্কোর সরকারি মুখপাত্র অভিযোগ করে, আগামী ৭ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর বাংলাদেশে ‘আরব বসন্তের মতো অস্থিরতার’ পরিকল্পনা করছে ওয়াশিংটন।
নিজস্ব নানা বৈচিত্র্যপূর্ণ স্বার্থের জন্য বিশ্বের প্রধান ভূ-রাজনৈতিক খেলোয়াড়রা ক্রমাগত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে চলেছে। বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরেও তাদের মধ্যে এক ধরণের যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এখানে ভারতের অবস্থান বেশ অনন্য এবং পরস্পরবিরোধী।
কারণ এটি তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে তার ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের সঙ্গে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এই দেশগুলো কি অন্যায্য নির্বাচনের জন্য কোনো জবাবদিহিতার বিরোধিতা করে বাংলাদেশকে সম্ভাব্য মার্কিন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা থেকে উদ্ধার করতে পারবে? তারা কি বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ পোশাক শিল্পের বিকল্প রপ্তানি গন্তব্য হতে পারবে কিংবা বিনিয়োগের প্রধান উৎস হতে পারবে?
আপনার মতামত জানানঃ