মানবাধিকারের পক্ষে দাঁড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ কেবল যে নীতিগত বিষয় তা নয়, এটি দেশটির জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এমন মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি জে ব্লিঙ্কেন।
আজ (সোমবার) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের অফিসিয়াল পেইজ থেকে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য সংবলিত একটি পোস্ট করা হয়েছে।
এন্টনি জে ব্লিঙ্কেন বলেছেন, যেসব সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তারা প্রায় সবসময় একই ধরনের কাজ করে। যেমন: (অন্যকে) হামলা করা, জবরদস্তি করা এবং অন্যান্য দেশকে হুমকি দেওয়া বা বাণিজ্যের নিয়ম ভঙ্গ করা।
যুক্তরাষ্ট্র সকলের জন্য মানবাধিকারের পক্ষে তার অবস্থান বহাল রাখবে বলেও প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র কোনো নির্দিষ্ট দলের পক্ষে নয় জানিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আওয়ামী লীগ নেতাদের বলেছেন, তার দেশ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি সহিংসতামুক্ত অবাধ-সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়।
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
এ সময় বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়ার কথা জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে পিটার হাস সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার এ বৈঠক, তিনি বাংলাদেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধিদের সঙ্গে যে সিরিজ বৈঠক করেছেন তারই অংশ।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, অন্যান্য রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ, পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মতবিনিময় করেছি, এটা আমি করেছি আমেরিকান রাষ্ট্রদূত হিসেবে। প্রতিটি মিটিংয়ে একই বার্তার পুনরাবৃত্তি করেছি।
যুক্তরাষ্ট্রের নীতি অনুযায়ী-আমরা অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে সমর্থন করি; যেখানে কোনো পক্ষ থেকে সহিংসতা হবে না।
পিটার হাস বলেন, তারা বিশ্বাস করেন, অবাধ-সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে প্রত্যেকের ভূমিকা পালন করার আছে। সরকারের ভূমিকা আছে, গণমাধ্যমে ভূমিকা আছে, বিচার বিভাগ, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, নিরাপত্তা বাহিনী; অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রত্যেককে তার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র কোনো নির্দিষ্ট দলের পক্ষে নয় জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি পুনরাবৃত্তি করছি যুক্তরাষ্ট্র কোনো নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন করে না। আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করি, যেটি বাংলাদেশের জনগণকে আগামীতে তাদের সরকার নির্বাচনের সুযোগ করে দেবে।
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পিটার হাস বলেন, এটা রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয়। যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ শুধু সহিংসতামুক্ত অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন।
বৈঠকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নেতৃত্বে দলটির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা অংশ নেন। সকাল সোয়া ১১টা থেকে শুরু হওয়া এ বৈঠক চলে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত।
ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্ব আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে তাদের দূতাবাসের আরেকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
এসডব্লিউএসএস/১৮২০
আপনার মতামত জানানঃ