মাহবুব আরিফ কিন্তু
তসলিমা নাসরিনের নাগরিক অধিকারকে ও তাঁর দেশে ফিরে আসার অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখার কোন ব্যাখ্যা সরকারের পক্ষ থেকে আজ পর্যন্ত দেয়া হয় নাই। কিছুদিন আগেই তসলিমা নাসরিনের একটি জটিল অপারেশান হয়ে গেল আর এমত অবস্থায় একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন নাগরিককে তার জন্মগত নাগরিক অধিকার দেয়া থেকে বিরত রাখা নিশ্চয়ই চরম একটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ঘটনা। মানবাধিকার প্রতিটি মানুষের এক ধরনের অধিকার; যা জন্মগত ও অবিচ্ছেদ্য।
প্রশ্ন হচ্ছে কিছুদিন আগেই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের প্রধান বাংলাদেশ ভ্রমণের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল নাগরিক সমাজের সাথে বৈঠক করলেও কেউই আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন তসলিমা নাসরিনের উপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি নিয়ে টু শব্দটি পর্যন্ত করলেন না, এ বিষয়টি অন্তত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের প্রধান ও আমেরিকার পক্ষ থেকে তুলে ধরা উচিত ছিল !!!
কোন কোন দেশ কতটুকু মানবাধিকার লঙ্ঘন করলো সেটার উপর ভিত্তি করে তো আর মানবাধিকারের আইন সাজানো হয়না, আমেরিকা, ব্রিটেন, রাশিয়া কোথায় কখন মানবাধিকার লঙ্ঘন করলো সেটা বাংলাদেশের চিন্তার কারণ হতে পারে তাই বলে তো বাংলাদেশের নাগরিক তার নিজ দেশের ভেতরে মানবাধিকার লঙ্ঘন মেনে নিতে পারে না। মানবাধিকারকে সমুন্নত রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে যতোই হম্বিতম্বি করা হোক না কেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের কিছু ধারা নিয়ে নাগরিক সমাজের অনেকে আপত্তি তুলেছেন আর মাননীয় আইনমন্ত্রী সেসব সংশোধনের ওয়াদা করেছেন বারংবার কিন্তু হায় আজ পর্যন্ত এই পরিবর্তনের কোন সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় নাই।
বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্নে শুধু মাত্র যুক্তরাষ্ট্র কেন বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো বেশ উচ্চ স্বরেই কথা বলছে, বাইডেন তাঁর ‘গণতন্ত্র’ সম্মেলনে বাংলাদেশকে ডাকেননি। বাংলাদেশের র্যাবের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে! অর্থাৎ মানবাধিকার প্রশ্নে হিতোপদেশ দেওয়ার অধিকার আমেরিকা কেন পৃথিবীর সব মানুষেরই আছে।
খুবই দুঃখের সাথেই জানাতে হচ্ছে ধর্মের কাছে এ জাতি এতটাই ভিতু ও নতজানু হয়ে আছে যে বাংলাদেশের দেশের সুশীল নামধারী শিক্ষিত ও বুদ্ধিজীবী সমাজ, সকল রাজনৈতিক দল, ডান বাম, অতি-বাম দল, কেউই তসলিমা নাসরিনের পক্ষ নিয়ে রা পর্যন্ত করার সাহস পোষণ করে না। আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন একজন তসলিমার নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে আজ সকলেই নীরব। তবে সহসাই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনে আগুনে ঘি ঢালার ব্যবস্থা করতেই হবে, এখনো কলম থেমে যায়নি।
আপনার মতামত জানানঃ