চলমান বৈশ্বিক মন্দার মধ্যে ভারতের অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে। গত পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ হয়েছে ভারতে মূল্যস্ফীতি।
বৈশ্বিক বিভিন্ন কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ভারতের অর্থনীতি। এরমধ্যে অন্যতম সমস্যা হলো রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দীর্ঘ যুদ্ধ। তাছাড়া দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপও রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এ তথ্য জানিয়েছে। খবর ব্লুমবার্গের।
আইএমএফ ইন্ডিয়া মিশন প্রধান নাদা চৌইরি বলেন, ভারতের অর্থনীতি যেসব সমস্যার সম্মুখীন তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ধারণা করছেন, এমন পরিস্থিতির মধ্যেই আরও কঠোর নীতি আসতে পারে। এদিকে ইউক্রেনে চলমান সংঘাত থামারও কোনো লক্ষণ নেই। এখন এই বিষয়গুলোই মূলত উদ্বেগের বিষয়।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থাটি এই বছেরর জন্য ভারতের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ পয়েন্ট কমিয়ে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ নির্ধারণ করে। সংস্থাটি মনে করছে ২০২২ সালে ভারতের গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়াতে পারে ৬ দশমিক ৯ শতাংশে।
চৌইরি বলেন, মূল্যস্ফীতি অর্থনীতির জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ধারণা করা হচ্ছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর হবে ব্যাংকটি। তবে আশা করা হচ্ছে, আগামী বছর মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে।
মূল্যস্ফীতি অর্থনীতির জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ধারণা করা হচ্ছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর হবে ব্যাংকটি।
ভারতের পরিসংখ্যান মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, এক বছর আগের চেয়ে গত মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। যদিও ব্লুমবার্গের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল এই সময় মূল্যস্ফীতি হতে পারে ৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
ভারত সরকারের তথ্য অনুযায়ী, আগস্টে খাদ্যের দাম ৭.৬২ শতাংশ বেড়েছে। একই সময়ে জ্বালানি তেল ও বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ১০.৭৮ শতাংশ।
পোশাক ও জুতার দাম বেড়েছে ৯.৯১ শতাংশ, এছাড়াও আবাসনের দাম বেড়েছে ৪.০৬ শতাংশ।
৩০ সেপ্টেম্বর দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার ৫০ বেসিসি পয়েন্টে বাড়িয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে এ নিয়ে পরপর চারবার সুদের হার বাড়ায় ব্যাংকটি।
দেশটির মুদ্রানীতি কমিটি মূল ঋণের বিপরীতে সুদের হার বা রিপো রেট বাড়িয়ে পাঁচ দশমিক নয় শতাংশ করেছে।
মূলত চলতি মৌসুমে অস্বাভাবিক বৃষ্টি ও রেকর্ড তাপপ্রবাহ দেখছে ভারত। এতে দেশটির ফসল উৎপাদনে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে।
দেশটির বিশ্লেষকরা বলেন, সরকারের উচিত কৃষিকে সাধ্যের মধ্যে আনা ও লাভজনক করতে আরও অর্থ ব্যয় করা। নগদকরণ সাপ্লাই চেনকে ধ্বংস করেছে আর জিএসটি ২০১৭ সালে মূল্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। আবার কোভিড লকডাউন-জনিত অর্থনৈতিক ব্যথা উপশমে সরকার কমই কাজ করেছে বলে মনে করেন তারা।
তারা বলেন, সমাধান কিছুটা কৃষির বাইরে। অন্য খাতগুলো উদ্বৃত্ত শ্রমিকের ভার নিতে পারলে কৃষি ভালো করবে; কিন্তু সেটি হওয়ার জন্য দরকার ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ, যা এখন ১৬ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। আর বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি মোদি সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৮৪২
আপনার মতামত জানানঃ