প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কথা বলায় কথিত কটূক্তির অভিযোগে তাওহীদ ইসলাম নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ (সিটিটিসি)।
শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) গ্রেপ্তার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া সিটি ইন্টেলিজেন্স অ্যানালাইসিস বিভাগের সাইবার ইন্টেল টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) অমিত কুমার দাশ গণমাধ্যমে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বিভিন্ন অনলাইন মনিটরিং করার সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি আইডি থেকে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি এবং সুনাম ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর ও দেশের বিভিন্ন সংবেদনশীল ও সার্বভৌমত্বকে আঘাত করে এমন মন্তব্য করা পোস্ট চোখে পড়ে। তখন এটি নিয়ে কাজ শুরু করে সিটি সাইবার পুলিশ।
সাইবার এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ওই ফেসবুক আইডিটি শনাক্ত করে তার অবস্থান নিশ্চিত করা হয়। এরপর রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকা থেকে তাওহীদ নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইলফোন ও একটি সিম জব্দ করা হয়।
রমনা মডেল থানার মামলায় গ্রেপ্তার তাওহীদকে রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান সাইবার পুলিশের এই কর্মকর্তা।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দী লেখম মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর পর বাংলাদেশে এ আইন নিয়ে বিতর্ক এবং সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে। অনেকেরই অভিযোগ এ আইন অধিকাংশ ক্ষেত্রে হয়রানির এবং অপব্যহারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এসবের মধ্যেই প্রতিনিয়ত গ্রেপ্তার হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, সরকারের সমালোচনা করলেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হচ্ছে। এই আইনে মামলা ও গ্রেপ্তারের যেসব ঘটনা ঘটছে, পরিষ্কারভাবে তা গণমাধ্যম ও বাকস্বাধীনতার জন্য মারাত্মক হুমকি।
তারা বলেন, যে নিরাপত্তা আইন তৈরি করা হয়েছে, সে আইন নিয়ে বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে— এ আইন কার জন্য করা হয়েছে? আইন তো তৈরি করা হয় সাধারণ জনগণের জন্য। এই আইন আসলে কার নিরাপত্তা দিচ্ছে? এ আইনে যারা বাদী হয়েছেন, তাদের অধিকাংশই ক্ষমতাসীন দলের কর্মী, এমপি, মন্ত্রী ও প্রশাসনের লোকজন। আর যারা আইনের শিকার হয়েছেন তারা সাংবাদিক, লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট। আমাদের সাধারণ মানুষের প্রতিবাদের সাহস গড়ে তোলেন একজন লেখক, সাহিত্য, অ্যাক্টিভিস্ট ও সাংবাদিক। তারা যেন মুক্তভাবে কথা বলতে পারে সেজন্য তাদের সমর্থন করুন। আর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো একটি নিপীড়নমূলক আইন গণতন্ত্রের দেশে থাকতে পারে না।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৯৪৭
আপনার মতামত জানানঃ