বাংলাদেশে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমছে। গত কয়েক বছরে শতাধিক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, ছিনতাই, ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়, মিথ্যা মামলায় সাধারণ মানুষকে ফাঁসিয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে নারীর ওড়না ধরে টান দেয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। বনানী এলাকা থেকে ফেসবুক লাইভে এসে এক নারী এ অভিযোগ করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত দুই কনস্টেবলকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার(১৯ এপ্রিল) ইফতারের পর বনানীর শেরাটন হোটেলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত দুই কনস্টেবলের মধ্যে একজন গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনারের দেহরক্ষী ও অপরজন গাড়িচালকের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, ফেসবুক লাইভে করা অভিযোগের ভিত্তিতে দুই কনস্টেবলকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তের জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, এক নারী একটি পুলিশের পিকআপের সামনে দাঁড়ানো এক ব্যক্তিকে গালিগালাজ করে বলছেন এই ব্যক্তি তার ওড়না ধরে টান দিয়েছেন। এ সময় সেখানে সাদা পোশাকে ছিলেন দুই পুলিশ সদস্য। এসময় তাকে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে গালাগাল করতে শোনা যায়।
পাশে থাকা এক যুবককে তার স্বামী পরিচয় দিয়ে ওই নারী বলেন, এক পুলিশ সদস্য তার স্বামীর শার্ট ছিঁড়ে ফেলেছেন। ওই যুবকও পুলিশ সদস্যদের চোখ তুলে ফেলার হুমকি দিচ্ছিলেন। অপর দিকে তারা চুপ ছিলেন।
ফেসবুকে লাইভ করার আগে ওই এলাকার একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ওই নারী হেঁটে যাচ্ছেন। পেছনে তার স্বামী পরিচয়দানকারী ব্যক্তির হাত ধরে দুই পুলিশ সদস্যের টানাহেঁচড়া চলছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পুলিশের বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ার হার আশংকাজনক। প্রায় প্রতিদিনই পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে বিভিন্ন অপকর্মের। এবিষয়ে পুলিশের কর্তৃপক্ষসহ দেশের সরকাকেও নজর বাড়াতে হবে। কেননা, আইন রক্ষাকারী কর্তৃক একেরপর এক আইন বিরোধী কর্মকাণ্ডে দেশের আইনের প্রতি মানুষের অনাস্থা জন্মাবে। ফলশ্রুতিতে দেশে দেখা দিবে বিশৃঙ্খলা।
সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনের খড়্গ চালানোর আগে পুলিশের ওপর চালানো প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা। তারা বলেন, আগে পুলিশকে অপরাধমুক্তের চরিত্র অর্জন করতে হবে। নইলে সন্ত্রাসীদের নিকট পুলিশের যে ভাবমূর্তি সৃষ্টি হচ্ছে, এতে পুলিশ আর সন্তাসীদের মধ্যকার তফাৎ ঘুচে যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরদারির দুর্বলতাতেই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। তবে শুধু নজরদারি বাড়ানো নয়, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পারলে অনেকাংশে কমানো সম্ভব পুলিশ সদস্যদের অপরাধ।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৪১৭
আপনার মতামত জানানঃ