ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন সমাজতন্ত্রী পার্টি দেশটির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় ধরনের বিজয় লাভ করেছে। যখন আমেরিকাসহ পাশ্চাত্যের বহু সংখ্যক দেশ মাদুরো সরকারের ওপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ নানামুখী চাপ সৃষ্টি করেছে তখন তার দল এই বিজয় পেল। এ বিজয়ের মধ্যদিয়ে মাদুরো দেশটিতে তার ক্ষমতা আরো সুসংহত করতে সক্ষম হবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
মার্কিন সমর্থিত বিরোধী নেতা হুয়ান গুয়াইদো তার জোটকে নির্বাচন বয়কট করার আহবান জানিয়েছিলেন। এ সত্ত্বেও ভেনিজুয়েলার সাধারণ মানুষ ব্যাপকভাবে নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন।
ভেনেজুয়েলার দিকে সমগ্র বিশ্বের নজর ছিল। ঘটনাবলির তিনটি বড় দিক ছিল। ০১. যুক্তরাষ্ট্র সেখানকার সরকারকে সরাতে চাইছে; ০২. নিকোলা মাদুরো সরকারের বিরুদ্ধে জনরোষ বাড়ছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচার এবং ০৩. যুক্তরাষ্ট্রপন্থি দেশসমূহের চাপে দেশটি অর্থনীতি সংকটে পড়েছিল।
দেশটি ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র-হুমকি-অবরোধ বহু পুরোনো। সেখানকার খনিজ সম্পদকে নিজের নিয়ন্ত্রিত সরকারের অধীনে রাখতে যুক্তরাষ্ট্র সেখানে তার বশংবদ শাসককে আবারও ক্ষমতায় বসাতে চাইছিল। পাশাপাশি ইরান-রাশিয়া-চীনের মিত্র দেশটাকে কাবু করা গেলে সেটা বাড়তি লাভ। ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্রের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমের গণমাধ্যমের মায়াকান্নার রাজনৈতিক অর্থনীতি তাদের প্রচারিত সত্যের একেবারে উল্টো। দুনিয়ার অনেকেই সেটা জানে ও বোঝে।
দেশটির ‘সমাজতান্ত্রিক পুনর্গঠন’ প্রক্রিয়া ধ্বংস করতে চাইছিলো যুক্তরাষ্ট্র। ভেনেজুয়েলার সংকটকে ‘সমাজতন্ত্রের সংকট’ আলোচনায় অনেকের আপত্তি থাকলেও এবং মাদুরোর সমাজতন্ত্র পার্টির ‘সমাজতন্ত্র’ নিয়ে বিশ্বের বামপন্থি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের সমালোচনা থাকলেও – মাদুরো ও তার ক্ষমতাসীন সমাজতন্ত্রী দল এ পর্যন্ত গণনা করা শতকরা ৮০ ভাগ ভোটের মধ্যে ৬৭.৭ শতাংশ ভোট পেয়েছে। বয়কট ভেঙে মাদুরো-বিরোধী যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত যে জোট নির্বাচনে অংশ নিয়েছে তারা পেয়েছে শতকরা ১৮ ভাগ ভোট। এমনটাই জানাচ্ছেন ভেনিজুয়েলার জাতীয় নির্বাচন পরিষদের সভাপতি ইন্দিরা আলফোনজো।
বিপুল বিজয়ের মাদুরো সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় সংসদের বিরোধীদের চরম আধিপত্যের দিন শেষ হয়েছে।
আপনার মতামত জানানঃ