অদ্ভুত এক যুবকের নাম রডরিগো ব্রাগা। ব্রাজিলের সাও পাওলোতে তার নিবাস। ৩২ বছর বয়সি রডরিগো বর্তমানে সারা পৃথিবীতে পরিচিত ‘কুকুর-মানব’ নামে। কারণ তার চেহারাটাই ছিল কুকুরের মতো।
অথচ কয়েক বছর আগেও আর পাঁচটা মানুষের মতো স্বাভাবিক চেহারা সম্পন্ন ছিলেন তিনি। সুদর্শন হিসেবে সুনামও ছিল তার। কিন্তু সব কিছুই বদলে যায় রডরিগোর প্রিয় পোষা কুকুরটির মৃত্যুর পরে। নিজের পোষ্যকে নিজের প্রাণের চেয়েও বেশি ভালবাসতেন রডরিগো।
সেই কুকুরটির আকস্মিক মৃত্যুকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না তিনি। তিনি ভাবছিলেন কীভাবে নিজের পোষ্যের স্মৃতিকে জীবিত করে রাখবেন। ভাবতে ভাবতেই এক দুঃসাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিনি। স্থির করেন, নিজের চেহারাটিকেই গড়ে নেবেন নিজের মৃত চারপেয়ে সঙ্গীটির আদলে।
নিজের পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে ব্রাজিলের সেরা প্লাস্টিক সার্জেনদের দ্বারস্থ হন রডরিগো। ডাক্তাররা জানান, রডরিগো যা চাইছেন, তা করা সম্ভব, কিন্তু তার ঝুঁকি রয়েছে যথেষ্ট। নিজের পোষ্যের প্রতি ভালবাসার জোরে মন শক্ত করে রাজি হয়ে যান রডরিগো।
তারপর শুরু হয় অপারেশন টেবিলে রডরিগোকে শুইয়ে ডাক্তারদের আশ্চর্য প্রচেষ্টা। নিজের পরিকল্পনার কথা ভেবে মৃত কুকুরটির দেহটিকে সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন রডরিগো। সেই কুকুরেরই মুখের বিভিন্ন অংশ আলাদা আলাদাভাবে তুলে নিয়ে অপারেশন করে ডাক্তাররা বসাতে শুরু করেন রডরিগোর মুখে। রডরিগোর নাক, চোখ, ভুরু, চোয়াল সবকিছুই একটু একটু করে সেই মৃত চতুষ্পদের আদলে হয়ে উঠতে থাকে।
পর পর বেশ কয়েকটি অপারেশনের পরে রডরিগোর চেহারা হয়ে ওঠে অবিকল সেই কুকুরটির মতো। অপারেশনের পরে নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা ভোগ করতে হয় রডরিগোকে। কিন্তু সবকিছু হাসিমুখে সহ্য করেন রডরিগো। নিজের শরীরের মধ্যে দিয়ে তিনি বাঁচিয়ে রেখেছেন তার পোষ্যকে সেটাই রডরিগোর শান্তি। আজ সারা পৃথিবীতে তিনি পরিচিত ‘কুকুর-মানব’ হিসেবে।
উল্লেখ্য, রডরিগোর এই কুকুর-রূপ ছিল নিতান্তই সাময়িক। ওই বিচিত্র সাজের কয়েক ঘন্টা পরেই তিনি ফিরে আসেন তার পুরনো অবয়বে। বর্তমানে একেবারে স্বাভাবিক চেহারায় সুস্থ দেহে সাও পাওলোয় বসবাস করছেন ‘কুকুর-মানব’ নামে খ্যাতি পাওয়া রডরিগো ব্রাগা।
এসডব্লিউ/এসএস/২০৫৫
আপনার মতামত জানানঃ