করোনা টিকা বাধ্যতামূলক না করা ও অন্যান্য বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার দাবিতে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী কানাডার অন্টারিওর পার্লামেন্ট হিলে জড়ো হয়েছেন। নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ায় ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাড়ি ছেড়ে সপরিবারে আত্মগোপনে চলে গেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
করোনা টিকা বাধ্যতামূলক করাকে কেন্দ্র করে কানাডায় বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর জাস্টিন ট্রুডো পরিবারসহ গা ঢাকা দিয়েছেন বলে দেশটিতে সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্ট রোববার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে তৃতীয় বারের জন্য কানাডার প্রধানমন্ত্রী হন জাস্টিন ট্রুডো। তাঁর বাসস্থান রিডিউ কটেজ। এই মুহূর্তে তিনি আর সেখানে নেই। কেননা আন্দোলনের ভরকেন্দ্র থেকে তা মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে। তাই নিরাপত্তার দিকে নজর রেখেই ট্রুডো ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের অন্যত্র স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার এক সন্তান করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর অবশ্য ট্রুডো আইসোলেশনেই ছিলেন।
ইন্ডিপেন্ডেন্টের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডায় করোনার বিধি নিষেধ তুলে দেওয়া এবং করোনা টিকা বাধ্যতামূলক না করার দাবিতে ট্রাকচালকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। মার্কিন সীমান্ত পেরোনোর জন্য করোনার টিকা নেয়া বাধ্যতামূলক করা যাবে না বলে দাবি করেন তারা।
এই বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি ট্রাক চালক। যারা ট্রুডোর বাড়ি ঘেরাও করে ক্রমাগত হর্ণ বাজিয়ে প্রকাশ করেন নিজেদের বিরক্তি।
প্রায় ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ কনভয় তৈরি করে এই বিক্ষোভে আসেন এই ট্রাক চালকরা। স্বাধীনতার দাবিতে পতাকা নাড়তে নাড়তে নিজেদের এই কনভয়ের নাম তারা দিয়েছেন ‘ফ্রিডম কনভয়’।
এই বিক্ষোভের জেরে রাস্তায় যানজট এবং শব্দদূষণে একদম অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন অটোয়াবাসী। এদিকে ট্রাকচালকরা এই আন্দোলন শুরু করলেও শিশু, বয়স্ক এবং প্রতিবন্ধীরাও এতে অংশ নেন।
কেউ কানাডার প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেন, কেউ আবার ট্রুডোকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজও করেন।
এ সময় কানাডার শীর্ষ সেনা জেনারেল ওয়েইন আয়ার এবং কানাডার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অনিতা আনন্দের তীব্র নিন্দা করে বিক্ষোভকারীদের ওয়ার মেমোরিয়ালের উপর নাচও করতে দেখা যায়।
চরম ঠাণ্ডাকে উপেক্ষা করেই রাস্তায় নামেন বহু মানুষ। ক্রমেই বাড়ে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা। ধীরে ধীরে জনজোয়ার সংসদ ভবনের কাছে পৌঁছে যায়। এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আগে থেকেই সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে পুলিশকে।
আর বিক্ষোভের হাত থেকে বাঁচতেই জাস্টিন ট্রুডো সপরিবারে আত্মগোপনে চলে গেছেন বলে জানা গেছে। এমনকি তার অবস্থান সম্পর্কেও কিছু জানা যায়নি।
তবে আত্মগোপনে থেকে এই বিক্ষোভের নিন্দা জানিয়েছে ট্রুডো বলেছেন, ট্রাক চালকরা বিজ্ঞানকে মানতে চাইছেন না। তারা নিজেদের পাশাপাশি অন্যদেরও ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। অন্যদিকে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী অনিতা আনন্দও এই বিক্ষোভের নিন্দা জানিয়েছেন।
এসডব্লিউ/এসএস/১৪২৫
আপনার মতামত জানানঃ