প্রথম কোন মুসলিমকে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক দূত হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে দেশটির সিনেট। নাম রাশেদ হোসেন। এর আগে জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাশেদকে এ পদের জন্য মনোনয়ন দেন। খবর আনাদোলুর।
খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সিনেটে এ বিষয়ে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাশেদের নিয়োগের বিষয়টি পাস হয় ৮৫-৫ ভোটে। এ পদের দায়িত্ব পাওয়া প্রথম কোনো মুসলিম ব্যক্তি হতে যাচ্ছেন রাশেদ।
সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়ে ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাশেদ হোসেনের চূড়ান্ত অনুমোদনের খবর জানিয়ে অফিস অব ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম এক বিবৃতিতে জানায়, ‘আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে সিনেট রাশেদ হুসেনকে নিশ্চিত করেছে। আমরা এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই। শিগগিরই আমরা তাকে স্বাগত জানাতে উন্মুখ!’
সিনেটের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে মুসলিমদের অধিকার নিয়ে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সংস্থা দ্য কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন্স (সিএআইআর)।
সংস্থাটির উপ নির্বাহী পরিচালক অ্যাডওয়ার্ড আহমেদ মিচেল এক বিবৃতিতে বলেন, রাশেদের নিয়োগ পাওয়ার দিনটি আমেরিকার মুসলিম ও আমাদের জাতির জন্য ঐতিহাসিক দিন।
আমরা আশাবাদী, তিনি চীনা কমিউনিস্ট পার্টির হাতে নির্যাতিত উইঘুর মুসলিমসহ বিশ্বজুড়ে সব ধর্মের অনুসারীদের স্বাধীনতা রক্ষায় কাজ করবেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক কমিশন রাশেদের নিয়োগের প্রশংসা করেছে।
রাশেদ হোসেন এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসনের সময় তিনি অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি)-তে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়াও স্ট্র্যাটেজিক কাউন্টার টেরোরিজম কমিউনিকেশনসে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত এবং হোয়াইট হাউসের উপ-সহযোগী হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন।
৪২ বছর বয়সী রাশেদ হোসেন আমেরিকার ওয়াইমিংয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা প্রকৌশলী মুহাম্মদ আকবর হুসাইন ও মা রুকাইয়া ছিলেন ভারতীয় মুসলিম প্রবাসী।
রাশেদ যুক্তরাষ্ট্রের চ্যাপেল হিলের ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলিনা থেকে দর্শন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। নিউ হ্যাভেন সিটির ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন। সেখানে তিনি ইয়েল ল জার্নালের সম্পাদক ছিলেন।
এরপর তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক ও প্রশাসন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এ সময় তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি বিষয়েও ডিগ্রি নেন।
রাশেদ জর্জটাউন ল সেন্টার এবং জর্জটাউন স্কুল অফ ফরেন সার্ভিসে আইন বিষয়ক অধ্যাপক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি উর্দু, আরবি ও স্পেনিশ ভাষায় দক্ষতার সঙ্গে কথা বলতে পারেন। ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিভিন্ন এজেন্সিকে অসামান্য সেবা দেওয়ায় রাশিদ হুসাইনকে বিশেষ সম্মাননা দেয়া হয়।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, ‘রাশেদ হোসেন একজন দক্ষ আইনজীবী ও হোয়াইট হাউসের বিশ্বস্ত কর্মী। কায়রোতে আমি যে অংশীদারিত্বের আহ্বান করেছিলাম তিনি এর উন্নয়নে প্রধান ভূমিকা পালন করেন। তাছাড়া পবিত্র কোরআনের একজন হাফিজ হিসেবে তিনি আমেরিকান মুসলিম সম্প্রদায়ের একজন সম্মানিত সদস্য। গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করায় আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই।’
এসডব্লিউ/এসএস/২০৫০
আপনার মতামত জানানঃ