ইয়েমেনের মারিব শহরে সরকার-সমর্থক সেনা ও হুতি বিদ্রোহীদের তুমুল লড়াই হয়েছে। এতে উভয় পক্ষ মিলে প্রায় ৫০ জন নিহত হয়েছেন। আজ রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) একাধিক সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
গত ৪৮ ঘণ্টায় খনিজ তেলসমৃদ্ধ মারিবের পশ্চিমে ৪৩ জন হুতি বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন বলে এএফপিকে জানিয়েছে একটি সূত্র। তাদের বেশির ভাগেরই মৃত্যু হয়েছে সৌদি-সমর্থিত ইয়েমেন সরকারপন্থী সামরিক জোটের বিমান হামলায়। এদিকে সংঘাতে সাতজন সরকারপন্থী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আরেকটি সামরিক সূত্র।
এর আগে ইয়েমেনের তেলসমৃদ্ধ উত্তরাঞ্চলে সরকারের শেষ ঘাঁটি মারিব অঞ্চলেই সরকারি বাহিনী এবং ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের মধ্যে তীব্র লড়াইয়ে অন্তত ৬৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। তুরস্ক ভিত্তিক গণমাধ্যম ডেইলি সাবাহ এর খবরে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে উভয় পক্ষের যোদ্ধা ছিলেন।
এএফপি জানায়, ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা কৌশলগত এই শহরটির দক্ষিণে সরকারপন্থী অবস্থান লক্ষ্য করে প্রথমে হামলা চালায়। এরপর বিমান হামলা চালায় সরকার সমর্থিত জোট বাহিনী। তারপরও বিদ্রোহীরা অগ্রগতি করতে সমর্থ হয়।
ওই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার জন্য শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গত জুনের পর মারিবে সেটিই বিদ্রোহী হুতিদের প্রথম বড় ধরনের কোনো আক্রমণ। জুনে মারিবে টানা তিন দিনের এক সংঘর্ষে উভয়পক্ষের মোট ১১১ জন যোদ্ধা নিহত হয়েছিলেন।
মারিব শহরে চলতি সেপ্টেম্বর মাসে ইরান-সমর্থিত হুতিরা নতুন করে হামলা শুরু করেছে। এতে উভয় পক্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটছে। মারিবের নিয়ন্ত্রণ নিতে শুধু সেপ্টেম্বরেই সৌদি-সমর্থিত সামরিক জোটের সঙ্গে হুতিদের লড়াইয়ে কমবেশি ৪০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে শহরটির দখল নিতে হামলা শুরু করে হুতি বিদ্রোহীরা।
২০১৪ সাল থেকে ইয়েমেনে সরকার ও হুতিদের মধ্যে লড়াই চলে আসছে। সে সময় রাজধানী সানা আক্রমণ করে মানসুর হাদির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেন হুতি বিদ্রোহীরা। পরে ২০১৫ সালের মার্চে হাদি সরকারকে পুনরায় ক্ষমতায় আনতে দেশটিতে সামরিক হস্তক্ষেপ করে সৌদির নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট।
ইয়েমেনে চলমান লড়াইয়ে অনেক মানুষ হতাহত হয়েছেন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, সংঘাতজর্জর দেশটিতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। যতদিন যাচ্ছে ততই ইয়েমেন সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। আর বিশ্ব অবাক হয়ে তাকিয়ে রয়েছে। ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধের ফলে দেশটি বর্তমানে ইতিহাসের চরম মানবিক বিপর্যয়ে পড়েছে। অচিরেই এই যুদ্ধ থামানো না গেলে বিশ্ব একটি মানব সভ্যতাকে চিরতরে হারিয়ে ফেলবে।
এসডব্লিউ/ডব্লিউজেএ/১৯৩০
আপনার মতামত জানানঃ