গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর জো বাইডেন সবাইকে কল দিয়ে শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় করেন। কিন্তু বর্তমান সরকার শেখ হাসিনাকে একবারও কল দেননি। তাই তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য বাস পোড়ানো হয়েছে। ১৩ নভেম্বর ২০২০, শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘সরকারের সবচেয়ে বড় বন্ধু হচ্ছে সাংবাদিক। তাঁরা সব তথ্য তুলে ধরেন। আজ ওখানে তিনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সবচেয়ে বড় ভুলটা করেছেন। যত বেশি সাংবাদিকদের কথা বলতে দেবেন, তত বেশি গোয়েন্দা সংস্থা তথ্য পাবে।’ তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক দাঙ্গা, বাড়ি পোড়ানোর মতো ঘটনা গণতান্ত্রিক দেশে হতে পারে না। সংখ্যালঘু কয়েকজন নেতা আলেমদের বিরুদ্ধে অপবাদ দিয়েছেন। এটা অবশ্যই সরকারের খতিয়ে দেখা উচিত।’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, জো বাইডেন নির্বাচিত হওয়ার পরে সবাইকে ফোন দিয়েছে কিন্তু শেখ হাসিনাকে ফোন দেয় নাই। জো বাইডেনের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য গতকালের (বৃহস্পতিবার) বাস পোড়ানো। তিনি (হাসিনা) বোঝাতে চেয়েছেন এ দেশে সন্ত্রাস আছে। এই সন্ত্রাস দমন করতে হলে তাকে দরকার। শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘রুহুল আমিন গাজী মুক্তি পরিষদ’ আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে নাগরিক সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন- সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সুকোমল বড়ুয়া, কবি আবদুল হাই শিকদার, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রোকন, মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব এমএ আজিজ, ডিইউজের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন প্রমুখ।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের গণতন্ত্র কবরে শায়িত। গণতন্ত্রকে কবর থেকে ওঠাতে হলে একটামাত্র পথ হচ্ছে আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে রাস্তায় নামতে হবে। খালেদা জিয়ার প্রতি এত বড় অন্যায় সয়ে যাচ্ছে। বিএনপিও আন্দোলন করে না, আমরাও আন্দোলন করি না। যেখানে ইয়াবা ব্যবসায়ীরাও সবাই জামিন পায়। সেখানে খালেদা জিয়ার জামিন হয় না। সম্পাদক আবুল আসাদের জামিন হয় না, এরচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা আর কী হতে পারে। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের বলতে চাই- আপনারা শেখ হাসিনার কাঁধে ভর দিয়ে আর কতদিন চলবেন। আপনাদের আজ সোচ্চার হতে হবে। তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, মতিয়া চৌধুরী আপনারা কথা বলেন। আপনারা তো সবকিছুই দেখছেন, চশমা ব্যবহার করলেও আপনারাতো অন্ধ না। তা না হলে দেশের সামনে সমূহ বিপদ।
এ সময় তিনি আরও বলেন, আমার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনি এত কিছু বোঝেন, কিন্তু ওনার বন্ধুদের চেনেন না। এটাই হচ্ছে জাতির দুর্ভাগ্য। একটা সরকারের সবচেয়ে বড় বন্ধু হচ্ছে সাংবাদিক। যারা বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী এখানেই তার জীবনের বড় ভুলটা করছেন। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সাংবাদিকদের আপনি যত বেশি কথা বলতে দেবেন, আপনার গোয়েন্দাবাহিনীর চেয়েও আপনি বেশি তথ্য পাবেন। তাতে আপনি লাভবান হবেন।
সমাবেশে বক্তার বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানান। সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীসহ অবিলম্বে গ্রেফতার সব সাংবাদিকের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
আপনার মতামত জানানঃ