আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা বা আইএইএ দাবি করেছে, পরমাণু সমঝোতায় যে পরিমাণ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদের কথা বলা হয়েছিল ইরান তার ১৬ গুণ বেশি ইউরেনিয়াম মজুদ করেছে। সংস্থার নির্বাহী বোর্ডের সদস্য দেশগুলোর কাছে ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে এ দাবি করেন আইএইএ’র মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি। পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানে বর্তমানে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদের পরিমাণ ৩,২৪১ কিলোগ্রাম।
২০১৫ সালে ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের পরমাণু সমঝোতা সই হওয়ার পর থেকে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সম্পর্কে প্রতি তিন মাসে একটি করে প্রতিবেদন নির্বাহী বোর্ডের কাছে হস্তান্তর করছে সংস্থাটি। ওই সমঝোতায় ইরানকে সর্বোচ্চ ৩০০ কিলোগ্রাম সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদ করার অনুমতি দেয়া হয়েছিল।
ইরান ২০১৮ সালের মে মাস পর্যন্ত ওই সমঝোতা মেনে চললেও একই মাসে মার্কিন সরকার পরমাণু সমঝোতা থেকে জোরপূর্বক বেরিয়ে যাওয়ার পর ইরান কয়েক দফায় ইউরোপকে সতর্ক করে শেষ পর্যন্ত এই সমঝোতার ধারাগুলো বাস্তবায়নের মাত্রা কমিয়ে দেয়।
ইরান বলছে দেশটির ওপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে এবং যুক্তরাষ্ট্র এই সমঝোতায় ফিরে এলে ইরান আবার পরমাণু সমঝোতায় নিজের দেয়া প্রতিশ্রুতি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করবে।
ডুবে গেল ইরানি নৌবাহিনীর দ্বিতীয় বৃহত্তম রণতরী
এদিকে গালফ অব ওমানে ইরানি নৌবাহিনীর সবচেয়ে বড় জাহাজ আগুন লাগার পর ডুবে গেছে। খার্গ নামের জাহাজটিতে ইরানের জাস্ক বন্দরের কাছেই আগুন লাগে। আগুন নেভাতে ২০ ঘণ্টারও বেশি সময় চেষ্টা করা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি খার্গকে, বলে জানিয়েছে দেশটির নৌবাহিনী। আজ বুধবার এ তথ্য জানানো হয়।
জানা গেছে, জাহাজটি একটি প্রশিক্ষণ মিশন পরিচালনা করছিল। আগুনে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। খার্গের নাবিকরা নিরাপদেই বের হতে পেরেছেন। এখনো পর্যন্ত জাহাজে আগুন লাগার কারণ নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। এছাড়া জাহাজটি কী কারণে ডুবেছে তা-ও জানা যায়নি।
ইরানি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ২০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়। একটি ছবিতে দেখা যায়, লাইফ জ্যাকেট পরে জাহাজের ক্রুরা ছোটাছুটি করছে। জাহাজটিতে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। আরেক ছবিতে দেখা যায়, সেখানে আকাশে কালো ধোঁয়া উড়ছে এবং তখনও আগুন জ্বলছে।
ইরানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এই জাহাজ ‘প্রশিক্ষণ জাহাজ’ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আগুন লাগার সময় জাহাজটি ৪০০ ক্রু ছিল বলেও জানিয়েছে তারা। তবে তাদের সবাইকে নিরাপদেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় একজন সেনা কর্মকর্তা আধাসরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিমকে জানিয়েছে, ২০ জন সামান্য আহত হয়েছে।
জানা গেছে, টনের দিক থেকে ইরানিয়ান নৌবাহিনীর সবচেয়ে বড় জাহাজ খার্গ। যুক্তরাজ্যে তৈরির পর ১৯৭৭ সালে জাহাজটি পানিতে নামে। খার্গ যেখানে ডুবেছে তার কাছেই হরমুজ প্রণালী যা বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিপিং লেন। এটি ইরান ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে ক্রমবর্ধমান বৈরিতার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/২০৩৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ