শুক্রবার থেকে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে নিজেদের দূতাবাস বন্ধ করে দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। তারা এক বিবৃতিতে জানায়, ক্যানবেরা দেশটিতে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা বিষয়ক অনিশ্চিত পরিবেশের জন্য তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, অন্তর্বর্তী পদক্ষেপ হিসেবে আগামী ২৮ শে মে বন্ধ করে দেয়া হবে ওই দূতাবাস। ফলে এখন আর মাত্র তিনদিন বাকি আছে। তিনি জানিয়েছেন, পরিস্থিতি যখন দূতাবাস খোলার অনুকূল হবে, তখন তা আবার খোলা হবে।
প্রধানমন্ত্রী মনে করছেন, আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। অ্যামেরিকা ও ন্যাটো বাহিনী পুরোপুরি চলে যাওয়ার পর অনিশ্চয়তা আরো বাড়বে। এই অবস্থায় তিনি কোনো ঝুঁকি নিতে চাইছেন না।
অ্যামেরিকা ইতিমধ্যেই সেনা প্রত্যাহারের কাজ শুরু করে দিয়েছে। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর প্রায় সব সেনাই আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরবেন। ওই দিন হলো অ্যামেরিকার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ও পেন্টাগনের উপর আল কায়দার আক্রমণের ২০ তম বার্ষিকী। উল্লেখ্য, আফগানিস্তান থেকে চূড়ান্ত দফায় সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং মিত্রবাহিনী। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের ইতি ঘটতে যাচ্ছে।
ফলে আফগানিস্তান ফের তালেবানদের কব্জায় যাওয়ার এক আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ, বিদেশি শক্তিগুলোর উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও দুই দশক ধরে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা সার্ভিসগুলো এবং কাবুলে নির্বাচিত সরকার এখনও রয়ে গেছে ভঙ্গুর অবস্থায়। এ অবস্থায় পশ্চিমা কূটনীতিক এবং সামরিক কর্মকর্তাদের কাজ বেড়ে গেছে। আফগানিস্তানে তালেবানের পুনরুত্থানের আশঙ্কা করছেন তারা। এ অবস্থায় কিভাবে আফগানিস্তানে ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় তা নিয়ে ভাবছেন তারা।
কাবুলে অবস্থানরত বিদেশি প্রতিরক্ষা বিষয়ক এক কর্মকর্তা বলেছেন, বিদেশি দূতাবাসগুলোকে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করতে হবে। যদি তাতেও তারা বিপদের মুখে পড়েন তাহলে সেখানে থাকার কোনো কারণ থাকবে না। তিনি আভাস দেন যে, সামনের সপ্তাহ ও মাসগুলোতে অস্ট্রেলিয়ার পথ অনুসরণ করবে আরো কিছু দেশের দূতাবাস।
এপ্রিলে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানান, ১১ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তান ত্যাগ করবে আমেরিকান সৈন্যরা। গত ২০ বছর ধরে মধ্য-দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে আমেরিকান সৈন্যরা রয়েছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর বাইডেন জানিয়েছেন, সময় এসেছে আমেরিকার দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের ইতি টানার। শক্তিশালী ন্যাটো আফগান মিশনের অংশ হিসেবে ৯৬০০ সেনাবাহিনীর মধ্যে কমপক্ষে ২৫০০ জন্য আমেরিকান সৈন্য। গত দুই বছর ধরে ধীরে ধীরে আফগানিস্তানে নিজেদের সৈন্য সংখ্যা কমিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ১৫০০-এর বেশি থেকে তা নেমে এসেছে ৮০ জনে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো আনুষ্ঠানিকভাবে সম্প্রতি জানিয়েছে, কট্টরপন্থী ইসলামি দল তালিবান আফগানিস্তানে সহিংসতা কমানোর অঙ্গীকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৬৫১
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ