মাত্র এক সেকেন্ডেই জানা যাবে করোনা পরীক্ষার ফল। মুখের লালা কিংবা থুতু নিয়ে উদ্ভাবিত নতুন সেন্সর ব্যবহার করে দ্রুততম এই ফল পাওয়া যাবে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এসংক্রান্ত গবেষণা নিবন্ধ ‘জার্নাল অব ভ্যাকুয়াম সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বি’তে প্রকাশিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত করোনা পরীক্ষার জন্য আরটি-পিসিআর পরীক্ষা আদর্শ হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু এই পরীক্ষায় ফল পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যাওয়ায় দ্রুততম পদ্ধতি উদ্ভাবনে সারা বিশ্বেই চেষ্টা চলছে। এরই মধ্যে এক সেকেন্ডে ফল পাওয়ার এই সংবাদ সামনে এলো।
এ বিষয়ে নিবন্ধের লেখক ও ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডার কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডক্টরাল ক্যান্ডিডেট মিনঘান জিয়ান বলেন, ‘নতুন এই করোনা পরীক্ষা পদ্ধতি ব্যবহার করে সুফল পাওয়া যাবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের বায়োসেন্সর স্ট্রিপটি দেখতে হবে রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষার কিটের মতো। এর এক প্রান্তে একটি মাইক্রোফ্লুইড চ্যানেল থাকবে। এতে ইলেকট্রোড থাকবে যার মাধ্যমে নমুনা পরীক্ষা করা হবে।
এই পরীক্ষার সময় সেন্সর স্ট্রিপ একটি কানেক্টরের মাধ্যমে সার্কিট বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকে। সেন্সর স্ট্রিপে দুটি ইলেকট্রোড থাকবে। একটি ইলেকট্রোডে করোনার অ্যান্টিবডি থাকবে। পরীক্ষার সময় স্ট্রিপের ইলেকট্রোডে সামান্য পরিমাণে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। এর মাধ্যমে সংকেত সার্কিট বোর্ডে আনা হবে বিশ্লেষণের জন্য। জিয়ান বলেন, ‘আমাদের তৈরি ব্যবস্থাটি এই সংকেত বিশ্লেষণ করে স্ক্রিনে ফল জানাবে।
এই উদ্ভাবনের সঙ্গে জড়িত গবেষকেরা বলেছেন, এর ফলে করোনা পরীক্ষার খরচ কমবে। এই প্রযুক্তি শুধু করোনা পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করা যাবে এমনটা নয়। অন্যান্য রোগ পরীক্ষার জন্যও ব্যবহার করা যাবে।
ভারতীয় ধরনের বিরুদ্ধে চীনের টিকা কার্যকর
চীনের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের (কোভিড–১৯) টিকা এ ভাইরাসের ভারতীয় ধরনের বিরুদ্ধেও কার্যকর বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন দেশটির নেতৃস্থানীয় একজন রোগনিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ। খবর রয়টার্স ও হিন্দুস্তান টাইমসের।
চায়নিজ সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) বিশেষজ্ঞ শাও ওয়াইমিং বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ে বলেন, প্রাথমিক গবেষণায় দেখা গেছে, চীনে ব্যবহৃত করোনার টিকাগুলো এ ভাইরাসের সংক্রমণের বিরুদ্ধে ‘একটি নির্দিষ্ট মাত্রায়’ সুরক্ষা দিতে সক্ষম। তবে ভারতীয় ধরনের বিরুদ্ধে চীনের কোন কোন টিকা কার্যকর, সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।
গত সপ্তাহে চীনের বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভারতে প্রথমবারের মতো শনাক্ত হওয়া করোনার ধরনটিতে সংক্রমিত হওয়ার অন্তত ১৮টি ঘটনা চীনে ধরা পড়েছে। শাও বলেন, করোনার ভারতীয় ধরনের ওপর চীন বিশেষ নজর রাখছে। এ নিয়ে গবেষণা চলছে ও তথ্য–উপাত্ত সংগ্রহের কাজ চলছে।
বিশেষজ্ঞ শাওয়ের বরাত দিয়ে চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া বলেছে, এই ভাইরাসের রূপান্তর ঘটতেই থাকবে। তাই নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের উদ্ভব ঘটবে। তিনি দাবি করেন, করোনার নতুন ধরনগুলো বিদ্যমান টিকাগুলোকে অকার্যকর করে ফেললে তাঁর দেশ নতুন, কার্যকর টিকা তৈরি করতে সক্ষম হবে।
এ প্রসঙ্গে শাও আরও বলেন, করোনার রূপান্তরিত ধরন বিদ্যমান টিকাগুলোর সুরক্ষাব্যবস্থা টপকে যেতে সক্ষম হলে সে ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার সামর্থ্য চীনের আছে। কেননা, বর্তমানে চীনের টিকা উৎপাদন প্রক্রিয়া যথেষ্ট পরিপক্ব। রূপান্তরিত ধরনের বিরুদ্ধে কার্যকর নতুন টিকা উৎপাদন করতে এই প্রক্রিয়ায় তেমন পরিবর্তন আনতে হবে না।
ভারতে করোনার সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করলেও গত সপ্তাহ পর্যন্ত টিকা আমদানির ব্যাপারে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর শরণাপন্ন হয়নি দেশটি। গত শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হিন্দুস্তান টাইমসকে এ তথ্য জানায়।
বার্তা সংস্থাগুলোর খবর অনুযায়ী, চীনে করোনার সংক্রমণ রোধে পাঁচটি টিকা ব্যবহার করা হচ্ছে। বুধবার পর্যন্ত প্রায় ৪৫ কোটি ডোজ টিকা ব্যবহার করা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে চীনের সিনোফার্ম কোভিড–১৯ টিকার জরুরি ব্যবহারের সবুজ সংকেত দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ফলে বিশ্বব্যাপী এই টিকা সরবরাহের বিষয়টি অনুমোদন পাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে এই প্রথম পশ্চিমা দেশের বাইরের কোনো দেশের উৎপাদিত করোনার টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমর্থন পেতে যাচ্ছে। যদিও চীন এরই মধ্যে তার দেশের কোটি কোটি মানুষকে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত টিকা দিয়ে ফেলেছে। দেশের বাইরেও এই টিকার সরবরাহ করেছে তারা।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৩৪৫
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ