চট্টগ্রাম মহানগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার রুবি গেইট এলাকার এক হেফজখানার ১১ বছর বয়সী এক ছাত্রকে ধর্ষনের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক মিজানুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার (১৯ মে) রাতে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বায়েজিদ জোনের (এসি) সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. শাহ আলম। মিজানুর কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার টেংবাজার এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে।
ভুক্তভোগী শিশুটির বাবা বলেন, আমি হতদরিদ্র একজন রিকশাচালক। ছেলেকে হাফেজ বানানোর স্বপ্ন নিয়ে সাড়ে ৩ হাজার টাকা খরচ দিয়ে হেফজখানায় ভর্তি করেছি। ঈদের পরে ছেলেকে হেফজখানায় দিয়ে আসি।
গতকাল সকালে আমি রিকশা নিয়ে বের হলে বাড়ি থেকে খবর আসে আমার ছেলে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে বাসায় চলে এসেছে। সে অসুস্থ হয়ে গেছে। ছেলের পায়ুপথ ফুলে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। পরে তাকে জিজ্ঞেস করলে সে আমাকে হুজুরের নির্যাতনের বিষয়টি জানায়। তা ছাড়া হুজুরের অনৈতিক কাজের কথা কাউকে না বলার জন্য ওয়াদা করানো হয়। বললে আমাকে ও ছেলের মাকে মামলা দেওয়ার ভয় দেখানো হয়েছে। আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার জানান, শিশু ধর্ষণের অভিযোগে মিজানুর রহমানকে আটক করা হয়েছে। শিশুর বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে শিশুটিকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই শীলব্রত বড়ুয়া জানান, শিশুটিকে গতকাল বিকেল সোয়া ৫টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়েছিলো। বর্তমানে ওয়ান -স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) চিকিৎসাধীন রয়েছে।
সংশিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলেন, এলাকার মানুষ মনে করেন এরা আদব কায়দা শিক্ষা দেন। নৈতিকতা শিক্ষা দেন। সে কারণে ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে হোক বা নিরাপত্তার কথা ভেবে অনেকে ছেলেমেয়েদের মাদ্রাসায় পড়াতে দেন। কিন্তু বাস্তবতায় দেখা যাচ্ছে, যে নিরাপত্তার কথা ভেবে মাদ্রাসায় ছেলেমেয়েদের পড়াতে দেয়া হয় সেখানে আদৌ নিরাপদ নয়। দেখা যায় ছেলেরাও নিরাপদ নয় এসব তথাকথিত হুজুরদের কাছে। একটা সময়ে হয়তো এসব কুকর্মের কথা বাইরে প্রচার হতো না। কিন্তু এখন সময় পাল্টেছে।
তারা মনে করেন, জনসচেতনতা, সামাজিক প্রতিরোধ, আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ, দ্রুত বিচার নিশ্চিতকরণ এবং প্রকৃত দোষী ব্যক্তিরা যাতে বিচার থেকে রেহাই পেতে না পারে, সে ব্যবস্থা করা গেলে শিশুদের অনেকাংশে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব। তবে এসবের বাইরেও কিছু ভাবতে হবে। ভাবতে হবে আমাদের মাথা বিক্রির কথা। সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে না চাওয়ার কথা। দেশ, সমাজ আর শিশুদের আপন না ভাবার আত্মপ্রতারণার কথা।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৯১৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ