দেশে ভারতসহ চার দেশ থেকে আসা প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের চারটি ধরন শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি আইইডিসিআর, আইসিডিডিআর,বি ও ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং হেলথ সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভ (আইদেশি) যৌথভাবে প্রায় ২০০ কোভিড-১৯ নমুনার সিকোস্লেপিংস করে বাংলাদেশে বি.১.১.৭ (যুক্তরাজ্য ভ্যারিয়েন্ট), বি.১.৩৫১ (সাউথ আফ্রিকা ভ্যারিয়েন্ট), বি.১.৫২৫ (নাইজেরিয়া ভ্যারিয়েন্ট) ও বি.১.৬১৭.২ (ভারত ভ্যারিয়েট) শনাক্ত করেছে। এতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ সালে সার্স-কভ-২ প্রথম শনাক্তের পর থেকে এখন পর্যন্ত এর অনেকগুলো ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে করোনার ভারত ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি শনাক্তে আইইডিসিআর করোনাভাইরাস মহামারির শুরুর পর্যায় থেকে অ্যাকটিভ কন্স সার্চ, করোনা শনাক্তকরণ, কনটাক্ট ট্রলিং ও জিনোম সিকোয়েন্সিং করছে। সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে করোনায় বিশ্বের সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
আইইডিসিআর ভারত থেকে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে রোগতাত্ত্বিক তদন্ত ও সন্দেহজনক রোগীদের জিনোম সিকোয়েন্সিং করছে। এরই ধারাবাহিকতায় আইইডিসিআর এপ্রিল মাসে ভারত থেকে আসা ২৬ সন্দেহজনক করোনা রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করে। এতে ৬ জনের নমুনায় বি.১.৬১৭.২ (ভারত ভ্যারিয়েন্ট) শনাক্ত করা হয়।
ভ্যারিয়েন্টটিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভ্যারিয়েট অফ কনসার্ন বা উদ্বেগের ভ্যারিয়েন্ট হিসেবে ঘোষনা দিয়েছে। এ ভরিয়েন্ট বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৪৪ টি দেশে শনাক্ত হয়েছে।
এদিকে দেশে আরো দুজনের দেহে করোনার ভারতীয় ধরন শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে ভারতীয় ধরনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আটজনে। গতকাল গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডাটার (জিআইএসএআইডি) ডাটাবেজে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা যায়, ভারতফেরতদের মধ্যে দুজনের শরীরে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যায়। তারা রাজধানীর অস্থায়ী ডিএনসিসি করোনা হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রয়েছে। তাদের জিনোম সিকোয়েন্সিং এখনো শেষ হয়নি।
ডিএনসিসি হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে ভারতফেরত দুই নাগরিকের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। তাদের শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। দুজনকেই আলাদা রাখা হয়েছে। তাদের এখনো অক্সিজেন সাপোর্ট লাগছে না। তাদের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে তাদের বিষয়ে চূড়ান্ত তথ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হবে।
গত সপ্তাহে করোনার ভারতীয় ধরনে আক্রান্ত ছয়জন সুস্থ হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে। ভারত থেকে আসা সবাইকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে। তাদের মধ্যে যাদের করোনা পজিটিভ পাওয়া গিয়েছিল, তাদের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়। এদিকে চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারতফেরত নাগরিকদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। তবে তারা ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৩০৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ