আজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আবদুস সোবহানের মেয়াদের শেষ দিন। শেষদিন বিভিন্ন পদে ১২৫ জনকে অ্যাডহকে নিয়োগ দিয়ে গেছেন তিনি। অভিযোগ উঠেছে, তিনি তার শেষ কার্যদিবসে নিয়মবহির্ভূত অ্যাডহকে নিয়োগ দিয়েছেন। এনিয়ে সকাল থেকেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হুলস্থুল কাণ্ড চলছে।
নিয়োগ নিয়ে সহিংসতা
এদিকে সকাল থেকেই প্যারিস রোড, প্রশাসন ভবন, শহীদুল্লা কলা ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছিলেন। সকাল থেকে সবার মুখে মুখে অ্যাডহকে নিয়োগের কথা ছড়িয়ে পড়ে।
সকালে ক্যাম্পাসে রটে যায়, উপাচার্যের বাসভবনে পরিষদ শাখার দপ্তরপ্রধান সহকারী রেজিস্ট্রার মামুন-অর-রশীদকে নতুন রেজিস্ট্রার নিয়োগ দিয়ে অ্যাডহকে শতাধিক কর্মকর্তা, কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। এ বিষয়ে ‘দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকবৃন্দ’-এর মুখপাত্র অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘আমরাও জেনেছি, উপাচার্য এম আব্দুস সোবহান শেষ দিনে শতাধিক নিয়োগ দিয়েছেন। তবে এখনো নিয়োগপত্র দেননি বলে শুনেছি।’
দুপুর ১২টার দিকে মহানগর ছাত্রলীগের শতাধিক নেতা-কর্মী শেখ রাসেল স্কুলের মাঠ থেকে প্যারিস রোডে শোডাউন দিয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে আসেন। এরপর তারা প্রশাসন ভবনের পাশে শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে অবস্থান নেন। এ সময় সেখানে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, মাস্টাররোলের কর্মচারীর মুখোমুখি অবস্থায় চলে যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টায় উপাচার্যের বাসভবন থেকে সহকারী রেজিস্ট্রার মামুন-অর-রশীদ এবং রেজিস্ট্রার দপ্তরের সহকারী রেজিস্ট্রার তরিকুল আলম বেরিয়ে আসেন। এ সময় মহানগর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা প্যারিস রোডেই মামুন-অর-রশীদকে ঘিরে ধরেন। তাকে মারধর শুরু করলে হবিবুর রহমান হলের সেকশন অফিসার আবদুল্লাহ আল মাসুদ এগিয়ে যান। মহানগর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মাসুদকে মারধর করে তার জামা ছিঁড়ে ফেলেন। তিনি রাস্তার পাশের ড্রেনে জমা পানিতে পড়ে যান। শরীরচর্চা শিক্ষা বিভাগের সহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান চঞ্চলও তাদের মারধরের শিকার হন।
এ সময় সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিপ্রত্যাশী ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতা-কর্মীরাও এগিয়ে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সেখানে পুলিশ ও ডিবির সদস্যরা লাঠিপেটা করে মহানগর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টার করেন। শেষ পর্যন্ত মহানগর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মমতাজউদ্দিন কলা ভবনের সামনে দিয়ে দৌড়ে ও মোটরসাইকেলে নিয়ে পালিয়ে যান।
মহানগর ও রাবি ছাত্রলীগের সংঘর্ষ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) নিয়োগ নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ মে) দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে বিশ্ববিদ্যালয় ও মহানগর ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপাচার্য ভবনের সামনে অবস্থান করছিলেন। সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও এসে অবস্থান নেন। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে।
রাবির সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সেকশন অফিসার কামরুজ্জামান চঞ্চল জানান, আজ রাবি ভিসি আব্দুস সোবহানের মেয়াদের শেষ দিন। তিনি চাকরি প্রত্যাশী ১২৫ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে নিয়োগ দিয়েছেন বলে প্রচার হলে মহানগর ছাত্রলীগের চাকরি প্রত্যাশীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়। এ সময় তারাও চাকরি দাবি করে এবং তাদের এমন ভাব যেন এখনই তাদের নিয়োগ দিতে হবে। এ নিয়ে সেকশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা হামলা চালায়। এ সময় আমি এগিয়ে গেলে তারা আমাকেও লাঞ্ছিত করে।
তিনি বলেন, ঘটনার সময় রাবি ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী সেখানে ছিল। তারা এগিয়ে আসলে তাদের উপরও হামলা করা হয়। পরে রাবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সংগঠিত হয়ে তাদের ধাওয়া দেয়। এ সময় পুলিশ এসে লাঠিচার্জ শুরু করলে দুইপক্ষই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়
মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি সিয়াম আহমেদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে নতুন রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে অ্যাডহক নিয়োগের ব্যবস্থা চলছে শুনে আমরা ক্যাম্পাসে নিয়োগ প্রতিহত করতে আসি। সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মামুন-অর-রশীদের সঙ্গে আমরা এটা নিয়ে কথা বলতে গিয়েছিলাম। আমরা তাকে মারিনি, কিন্তু সেখানে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।’
দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকবৃন্দের মুখপাত্র অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘উপাচার্য শেষ দিনে নিয়োগ নিয়ে একটা রক্তাক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে বিদায় নিচ্ছেন।’
রাবি উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান তার মেয়াদের শেষ সময়ে নিয়ম বহির্ভূত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এমন অভিযোগ তুলে গত রোববার উপাচার্য ভবন এবং দুটি প্রশাসন ও সিনেট ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। ওই দিন উপাচার্য ভবনে ফাইনান্স কমিটির সভা হওয়ার কথা ছিল।
সে সময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ইলিয়াস হোসেন জানিয়েছিলেন, বর্তমান উপাচার্য ২০১৭ সালের ৭ মে নিয়োগ পেয়েছিলেন। চলতি মাসের ৬ তারিখে তার মেয়াদ শেষ হবে। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি অভিযোগ উঠেছে। মেয়াদের শেষ সময়ে যেন তিনি অতীতের মতো আর দুর্নীতি করতে না পারেন সে জন্য আমরা অবস্থান নিয়েছি।
এরপর থেকে তারা লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
একই আশঙ্কায় গত মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের ‘দুর্নীতিবিরোধী’ শিক্ষকরা সিন্ডিকেট সভা স্থগিতের দাবিতে অবস্থান নেন। তাদের বাধার মুখে সিন্ডিকেট সভা স্থগিত হয়ে যায়।
চলতি বছরের শুরুতে চাকরির দাবিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রাবি উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহানকে তার বাসভবনে অবরুদ্ধ করেছিলেন। এরপর তিনি ছাত্রলীগ কর্মীদের আশ্বাস দিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে ‘সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’ পাবেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি ছাত্রলীগ কর্মীদের ‘মিস হবে না’।
‘নথি চুরির’ অভিযোগে অভিযুক্ত ভিসির জামাতার জিডি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য এম আবদুস সোবহানের জামাতা এ টি এম শাহেদ পারভেজ নিজের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। গতকাল বুধবার রাতে নগরের মতিহার থানায় তিনি জিডি করেন বলে নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এস এম সিদ্দিকুর রহমান।
এ টি এম শাহেদ পারভেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) প্রভাষক। গত সোমবার রাত ১০টার পর তিনি বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট ভবনের তালা ভেঙে নিয়োগসংক্রান্ত নথিপত্র চুরি করেছিলেন বলে পরের দিন মঙ্গলবার দুপুরে অভিযোগ করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজ।
সেদিন সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি এবং দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক সুলতান-উল-ইসলাম অভিযোগ করেন, অবৈধভাবে নিয়োগপ্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে উপাচার্যের জামাতা বহিরাগত ক্যাডার বাহিনী নিয়ে রাতের আঁধারে সিনেট ভবনে যান। ভবনের তালা ভেঙে তিনি নিয়োগসংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে আসেন।
এ ঘটনাকে জঘন্য অপরাধ আখ্যা দিয়ে তার শাস্তির দাবি করে বলেছিলেন, সিনেট ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ও গোপনীয় নথিপত্র থাকে। সেখানে তালা ভেঙে ঢুকে নথি বের করে আনা একটি বড় ধরনের অন্যায়।
এ অভিযোগকে মিথ্যা দাবি করে জিডি করলেন এ টি এম শাহেদ পারভেজ।
মতিহার থানায় দায়ের করা জিডিতে শাহেদ পারভেজ উল্লেখ করেন, ‘আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) একজন শিক্ষক এবং রাবির প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সদস্য। গত ৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে রাবির দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকবৃন্দের ব্যানারে কিছু স্বার্থান্বেষী শিক্ষক প্রকাশ্যে দিবালোকে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সামনে আমার বিরুদ্ধে রাবির সিনেট ভবনের তালা ভেঙে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র চুরির মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ উত্থাপন করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৪ মে বিকাল থেকে ৫ মে পর্যন্ত বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় আমার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত হয়।’
রাবির দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকবৃন্দের ব্যানারে আন্দোলনরত প্রতগিশীল শিক্ষক সমাজের সদস্যদের বিপথগামী ও স্বার্থান্বেষী উল্লেখ করে আরও বলা হয়, ‘কতিপয় শিক্ষকের ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় আমারসহ সমগ্র শিক্ষক সমাজের সম্মানহানি ঘটেছে। এছাড়া প্রকাশ্য দিবালোকে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তাই আমি ভবিষ্যতে ষড়যন্ত্রকারী, এবং মিথ্যা, বানোয়াট অভিযোগকারীদের দ্বারা আমার জানমালের ওপর হুমকি ও ক্ষতির আশঙ্কা করছি।’
সার্বিক বিবেচনায় আবেদনটি সাধারণ ডায়েরি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানানো হয়।
মতিহার থানার ওসি বলেন, শিক্ষকের জিডি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
বিদায় নিলেন উপাচার্য
২০১৭ সালের ৭ মে দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান। আজ তার শেষ কার্যদিবস ছিল। শেষদিন বিভিন্ন পদে ১২৫ জনকে অ্যাডহকে নিয়োগ দিয়ে গেছেন তিনি।
আজ সকাল থেকেই উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকটি গাড়ি দেখা যায়। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেলা সোয়া দুইটার দিকে উপাচার্যের বাসভবন ছেড়ে চলে যান।
এসময় তার গাড়ির সামনে ও পেছনে ৩টি পুলিশের গাড়ি ছিল। উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অদূরে বিশ্ববিদালয় হাউজিং সোসাইটিতে (বিহাস) তার বাসায় উঠেছেন।
উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান বলেন, আজ রাত ১২টা পর্যন্ত আমার নিয়োগ আছে। তার আগেই সরকারি বাড়ি ছেড়েছি। আমি পুলিশি পাহারা চাইনি, তারাই দিয়েছে।
তবে তার সময়ে শত বির্তকের পরও নিজেকে সফল দাবি করে তিনি বলেন, আমি মনে করি সফলভাবে দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি। এই চেয়ারটি অনেক চ্যালেঞ্জের। সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই কাজ করতে হয়।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৭২৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ