হঠাৎ করেই টিকার যে সংকট দেখা দিয়েছে, তা মোকাবেলায় বিভিন্ন দেশ থেকে ভ্যাকসিন আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সব সোর্স ব্যবহার করে টিকা আনা হবে, এমনই জানিয়েছেন সরকারের সিনিয়র মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বলেছেন, যতো টাকা লাগুক, টিকার ব্যবস্থা করা হবে।
সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, এই প্রেক্ষাপটে দেশেই টিকা উৎপাদনের নীতিগত সিদ্ধান্ত সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে। দেশের তিনটি কোম্পানি শুরু থেকেই জানান দিয়েছে, তাদের টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা আছে। কোম্পানিগুলো হলো ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালষস লিমিটেড, পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস ও হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।
দেশে করোনার টিকা উৎপাদনের জন্য প্রাথমিকভাবে তিনটি ওষুধ কোম্পানির সক্ষমতা যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা সংগ্রহ ও বিতরণবিষয়ক আন্তমন্ত্রণালয়সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির গতকাল বুধবার (৫ মে) সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। কমিটি এই তিনটি কোম্পানির উৎপাদন সক্ষমতার ভিত্তিতে স্কোরিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে চূড়ান্ত সুপারিশ করতে বলেছে।
কমিটির প্রধান স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব বলেন, টিকার চাহিদা নিরূপণ, নিরাপদ ও কার্যকর টিকা নির্বাচন, টিকা সংগ্রহ, বিতরণ, দর-কষাকষির মাধ্যমে যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের বিষয়ে কার্যপরিধির আলোকে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৈঠকে রাশিয়ার টিকা স্পুটনিক–ভি কেনার সরবরাহ চুক্তির জন্য বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতে সম্ভাব্য পর্যবেক্ষণ সমন্বিত করে দ্রুত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এবং দর–কষাকষি করে সরবরাহ চুক্তি চূড়ান্ত করার কথা বলা হয়। আপাতত ৬ কোটি টিকা (প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ) দ্রুত সংগ্রহের পরিকল্পনা এবং একক উৎসের পরিবর্তে বহুমাত্রিক উৎস থেকে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য কম ও যৌক্তিক মূল্যে টিকা সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত হয়।
তবে এর আগে গত ১২ এপ্রিল পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে দেওয়া এক চিঠিতে জানিয়েছিলেন, রাশিয়া স্পুটনিক-ভি টিকা বাংলাদেশে পাঠানো, এ দেশে উৎপাদন ও ব্যবহারের বিষয়ে কিছু তথ্য জানতে চায়। তার মধ্যে ছিল বাংলাদেশে টিকার চাহিদা কত এবং কোন কোন প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে সক্ষম।
তারপর ১৩ এপ্রিল ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে টিকা উৎপাদন করতে পারে, এমন ৩ প্রতিষ্ঠানের নাম পাঠান। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ও পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের স্পুটনিক-ভি উৎপাদনের অবকাঠামো ও প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। প্রতিষ্ঠান ৩টি এক থেকে দুই মাসের মধ্যে উৎপাদনে যেতে পারবে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৫১১
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ