দূরপাল্লার নয়, আন্তঃজেলা পরিবহন সীমিত পরিসরে চলাচলসহ ১৬ দফা সুপারিশ করা হয়েছে। রোববার (২ এপ্রিল) আন্তঃমন্ত্রণালয়ের ভার্চুয়াল বৈঠকে এসব সুপারিশ করা হয়।
করোনার বিস্তার রোধে সারাদেশে চলমান বিধিনিষেধ পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণে এই সভা আহ্বান করা হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সভাপতিত্বে সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সুপারিশগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হবে, কর্মহীন পরিবহন শ্রমিকদের প্রণোদনা নিশ্চিতকরণের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া, মাস্কের ব্যবহার শতভাগ নিশ্চিত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে জেল-জরিমানা, গার্মেন্টসসহ সব কলকারখানার কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান নিশ্চিত করা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঈদের ছুটিতে কর্মস্থলে অবস্থান নিশ্চিত করা।
এদিকে বাংলাদেশ বাস ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলেন, ১৪ এপ্রিল থেকে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সারাদেশে ৫০ লাখ পরিবহন শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। দিনের আয়ে দিন চলা এই শ্রমিকদের পরিবারগুলো এখন অভুক্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে যত সিট তত যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন পরিচালনার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, বাস ছাড়া সবই তো চলছে। বাস চলাচল না করায় সাধারণ মানুষ বিকল্প পথে মাইক্রোবাস ভাড়া করে, ট্রাকে গাদাগাদি করে চলাচল করছে। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়ছে। এর চেয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চলাচল করা ভালো।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস রোধে সরকার প্রথম ১৪ থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে। এতে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা কমে না আসায় ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ ফের বাড়ানো হয়। পরে ফের আগামী ৫ মে পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার। এতে ব্যবসায়ীরা বৈশাখী উপলক্ষে ব্যবসা করতে পারেনি। এতে লোকসানে পরে। লকডাউনের মধ্যে আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরে ব্যবসা করতে ব্যবসায়ীরা সরকারের কাছে দাবি তোলেন। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শর্তসাপেক্ষে দোকানপাট ও মার্কেট খোলার অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
৪ মে’র পর গাড়ি নামাতে বাধ্য হবেন মালিক-শ্রমিক
স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী দুই দিনের মধ্যে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দিতে সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছে চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ। রোববার (২মে) চট্টগ্রামের আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির কনফারেন্স হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান মালিকরা।
এ সময় চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু বলেন, মালিক ও শ্রমিকদের চার তারিখ পর্যন্ত গণপরিবহন চলাচলের বিষয়ে অনুমতির জন্য অপেক্ষা করতে বলেছি আমরা। চার তারিখের পরে যদি মালিক শ্রমিকরা নিজ উদ্যোগে গাড়ি চলাচল শুরু করে দেয়, তাহলে মালিক সমিতির কিছু করার থাকবে না। তাদের পেটের তাগিদে আমাদের অনুরোধ তারা নাও রাখতে পারেন। তাই চার তারিখের আগেই সরকারকে একটা ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করব। ৪ মে’র পরে মালিক-শ্রমিকরা রাস্তায় গাড়ি চালাতে বাধ্য হবেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি খোরশেদ আলম। এ সময় পরিবহন মালিকরা বলেন, বিনা সুদে সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপকে ঋণ প্রদান করতে হবে। করোনাকালীন সময়ে এক বছরের জন্য ব্যাংক ঋণ ও কিস্তির সুদ মওকুফ করতে হবে। এছাড়া করোনা মহামারি সমাপ্ত হওয়া পর্যন্ত ডকুমেন্ট হালনাগাদ করার সময় বৃদ্ধি করতে হবে। সকল পরিবহন শ্রমিকদের বেঁচে থাকার মতো আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করতে হবে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৩৪০
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ