রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে প্রভাবশালী দুই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে রোববার রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় ওই দুই নেতাসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
অভিযুক্ত দুই নেতা হলেন- গোয়ালন্দ পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নজরুল ইসলাম মণ্ডল (৪২) এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী মোল্লা (৪৫)। মামলার অপর আসামিরা হলেন- নজরুল ইসলাম মণ্ডলের মামাতো ভাই মাসুদ মোল্লা (২৫), কাশেম আলী খাঁ (৩৫), নজরুলের ছোট ভাই মোস্তফা মণ্ডল (৩৬) এবং ভাতিজা শাওন মণ্ডল (২৮)।
মামলার বাদী রাজবাড়ী সদর উপজেলার বানীবহ ইউনিয়নের ঘিমোড়া গ্রামের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম জানান, তিনি দৌলতদিয়া ৬নং ফেরিঘাটের বিপরীত পাশে ব্যক্তি-মালিকানাধীন জমি লিজ নিয়ে কয়লা, পাথর, বালুসহ নির্মাণসামগ্রীর ব্যবসা শুরু করার উদ্যোগ নেন। এ লক্ষ্যে এক মাস আগে সেখানে কাজ শুরু করলে অভিযুক্তরা তার কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এক মাসের মধ্যে নির্ধারিত চাঁদা পরিশোধ না করলে প্রাণনাশের হুমকি ও ব্যবসা করতে দেয়া হবে না বলে তাকে শাসায়। তিনি বলেন, গত ৩১ অক্টোবর বেলা ১১টার দিকে বলগেট থেকে বালু নামানোর সময় আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চাঁদার দাবিতে এক শ্রমিককে মারধর করে। বিষয়টি জানতে পেরে আমি আমার মামা ছবদুলকে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। এ সময় উল্লেখিত আসামিরা আমাকে বলেন- ‘এক মাসের মধ্যে চাঁদার টাকা পরিশোধ করার কথা ছিল, তা না দিয়ে কাজ করছিস কেন।’
শরিফুল ইসলাম বলেন, আমি চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে নজরুল ইসলাম মণ্ডল ও মোহাম্মদ আলী মোল্লা তাদের কাছে থাকা পিস্তল আমার মাথায় ও বুকে ঠেকিয়ে আমার পকেটে থাকা ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং অবশিষ্ট ৯০ হাজার টাকা সাত দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে বলেন। এ সময় আমাকে ও মামাকে মারপিট করে চলে যায়।
জানা যায়, গোয়ালন্দ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) নজরুল ইসলাম মণ্ডল দেবগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আবু হত্যা মামলার প্রধান আসামি। চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে তাকে ইতোপূর্বে গোয়ালন্দ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় যুবলীগ।
এ প্রসঙ্গে কথা বলতে নজরুল মণ্ডলের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে মোহাম্মদ আলী ফোন রিসিভ করে দাবি করেন, আমাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ইন্ধনে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাদীকে আমরা চিনিও না। তারা পলাতক নন বলেও দাবি করেন।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আবদুল্লাহ আল তায়াবীর জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু তারা মামলার পর আত্মগোপনে রয়েছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা যাবে।
খবর : যুগান্তর, পৃষ্ঠা ১৬ / ০৩ নভেম্বর ২০২০
আপনার মতামত জানানঃ