
খুলনার একটি আদালত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক রুহুল আমিনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। রোববার (১৪মার্চ) রুহুল আমিনের পক্ষে জামিন আবেদন করেন অ্যাডভোকেট বেগম আক্তার জাহান রুকু। মহানগর দায়রা জজ শহিদুল ইসলাম এই জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ২ মার্চ রুহুল আমিনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছিলেন মহানগর হাকিম চতুর্থ আদালতের বিচারক আতিকুস সামাদ। বেগম আক্তার জাহান রুকু গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রুহুল আমিনের পক্ষে তার অনুপস্থিতিতে আমি জামিন আবেদন করি। কিন্তু আদালত সেটি নামঞ্জুর করেন।’
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুলনা মহানগরীর গোয়ালখালির কার্টুনিস্ট কিশোরের বাড়ি থেকে রুহুল আমিনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময়ে একই বাড়ি থেকে শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নিয়াজ মুর্শিদ দোলনকেও তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পরের দিন ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টার দিকে নিয়াজ মুর্শিদ দোলনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও রুহুল আমিনের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন খুলনা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক মো. নাহিদ হাসান।
মামলায় তার বিরুদ্ধে ফেসবুক ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি তথা সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ণ করাসহ বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে অপপ্রচার এবং জনগণের মধ্যে শত্রুতা, অস্থিরতা, বিশৃঙ্খলা ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়।
এদিকে ১৩ মার্চ শনিবার বিকেল ৫ টায় খুলনার অশ্বিনীকুমার টাউন হল চত্বরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, শ্রমিক নেতা রুহুল আমিনসহ গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি ও কালো আইনে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে সাংস্কৃতিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তব্যে, কবিতায়, গানে অনতিবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবী তোলা হয়। বক্তারা বলেন এই আইন মূলত ফ্যাসিস্ট সরকারকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য তৈরী হয়েছে। খুন, ধর্ষণ, দুর্নীতি করা আসামীরা জামিন পেলেও এই কালো আইনে গ্রেফতারকৃতরা জামিন পাচ্ছেন না কারণ সরকার জনগনের কণ্ঠ রোধ করার জন্য এই আইনকে একটা কন্ঠরোধী হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করতে চায়।
কারাগারে লেখক মুশতাককে খুন, কার্টুনিস্ট কিশোরকে নির্যাতনের দায়ভার রাষ্ট্রকে নিতে হবে। সরকার বিরোধী মত দমন করার জন্যই এই কালো আইন তৈরী করেছে, এখন জনগণকে তার কথা বলার অধিকারের জন্য রাস্তায় নামার বিকল্প নেই। সমাবেশ থেকে এই আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৭০০
আপনার মতামত জানানঃ