‘রাশিয়া ও আমেরিকার ন্যাটো বাহিনীর মধ্যে যদি এভাবেই বিরোধ বাড়তে থাকে, তবে তার অর্থ হলো পৃথিবী তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে একধাপ দূরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আশাকরি এই যুদ্ধে কেউ আগ্রহী হবেন না।’ জয়ের পর প্রথম বক্তব্যে এভাবেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুমকি দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
বিপুল ভোট পেয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসাবে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন তিনি । ১৯৬২ কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের পর থেকে ইউক্রেন যুদ্ধ পশ্চিমের সাথে মস্কোর সম্পর্কের গভীরতম সঙ্কটের সূচনা করেছে। পুতিন প্রায়ই পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন কিন্তু বলেছেন যে তিনি কখনোই ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজন অনুভব করেননি।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ গত মাসে বলেছিলেন যে তিনি ভবিষ্যতে ইউক্রেনে স্থল সেনা মোতায়েনের সম্ভাবনার কথা এখনই উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না, অনেক পশ্চিমা দেশ এটি থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছে যখন অন্যরা, বিশেষ করে পূর্ব ইউরোপে সমর্থন প্রকাশ করেছে।ম্যাক্রোঁর মন্তব্য এবং রাশিয়া ও ন্যাটোর মধ্যে সংঘর্ষের ঝুঁকি সম্পর্কে রয়টার্স পুতিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আধুনিক বিশ্বে সবকিছুই সম্ভব।
সোভিয়েত-পরবর্তী রাশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয়ের পর পুতিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এটা সকলের কাছে পরিষ্কার যে বিষয়টি একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্বযুদ্ধ থেকে এক ধাপ দূরে। আমি মনে করি এই যুদ্ধ দেখতে চাইবেন না কেউ।
১৫-১৭ মার্চের রাশিয়ান নির্বাচনের আগে, ইউক্রেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে আক্রমণ বাড়িয়েছে, সীমান্ত অঞ্চলে গোলাবর্ষণ করেছে এবং এমনকি রাশিয়ার সীমানা ভেদ করার চেষ্টা করার জন্য প্রক্সি ব্যবহার করেছে। তিনি ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চল দখলে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় বলে মনে করেন কিনা জানতে চাইলে পুতিন বলেন, হামলা অব্যাহত থাকলে রাশিয়া তার ভূখণ্ড রক্ষার জন্য ইউক্রেনের ভূখণ্ডের বাইরে একটি বাফার জোন তৈরি করবে।
তিনি এবিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে না চাইলেও বলেছিলেন যে রাশিয়ার ভূখণ্ডে বিদেশী অস্ত্রশস্ত্র পৌঁছাতে বাধা দেওয়ার জন্য এই ধরনের একটি বাফার জোন প্রয়োজন।
পুতিনের পুনরায় নির্বাচন প্রসঙ্গে পশ্চিমাদের দাবি ছিল ‘এই ভোট অবাধ ও সুষ্ঠু ছিল না’। যদিও সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তিনি মার্কিন নির্বাচন নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলে ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহারের অভিযোগ তোলেন ।
১৬ ফেব্রুয়ারি আর্কটিকের একটি রাশিয়ান কারাগারে মারা যাওয়া বিরোধী নেতা আলেক্সি নাভালনির ভাগ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, পুতিন এই প্রকাশ্যে শুধু একটি কথাই বলেছেন, স্বাভাবিক নিয়মেই নাভালনির মৃত্যু হয়েছে।
রয়টার্স ফেব্রুয়ারিতে রিপোর্ট করেছিল যে, তার মৃত্যুর কিছুদিন আগে নাভালনির জন্য একটি বন্দী বিনিময় চুক্তি হয়েছিল। পুতিন বন্দি বিনিময়ে রাজি ছিলেন বলে জানান সংবাদমাধ্যমকে। তবে তার একটাই শর্ত ছিল, নাভালনি যেন আর কখনোই রাশিয়ায় ফিরে না আসে।
আপনার মতামত জানানঃ