জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর কাছাকাছি একই আকারের একটি গ্রহ খুঁজে পেয়েছেন। গ্রহটির নাম ‘এইচডি ৬৩৪৩৩ডি’। এটি এখন পর্যন্ত পাওয়া পৃথিবীর আকারের গ্রহের মধ্যে সবচেয়ে কাছের এবং সবচেয়ে কমবয়সী।
গবেষকরা আশা প্রকাশ করেছেন, এর অবস্থান কাছাকাছি হওয়ার বিষয়টি বেশ কাজের হতে পারে। গ্রহটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা যাবে, যা একটি তরুণ পৃথিবীর মতো হতে পারে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
উদাহরণ হিসেবে, গবেষকরা গ্রহটিকে কাছ থেকে দেখতে পারবেন। এ ছাড়াও, এর ভেতর থেকে গ্যাস বেরিয়ে আসছে কিনা বা কীভাবে এর চৌম্বক ক্ষেত্র কাজ করে সেগুলোও খতিয়ে দেখতে পারবেন।
‘এটি অনেকটা আমাদের সৌর জগতের উঠানের মতো, যা বেশ উত্তেজনার বিষয়।’ – বলেছেন জ্যোতির্পদার্থবিদ সোয়ারেস-ফুর্তাদো।
‘এতো কাছাকাছি একটি নক্ষত্র, এর চারপাশের জনাকীর্ণ ব্যবস্থার সঙ্গে কী ধরণের তথ্য দিতে পারে? এটি আমাদেরকে কীভাবে সাহায্য করতে পারে, যখন এতো তরুণ নক্ষত্রমণ্ডলীর চারপাশে আমরা এর অনুরূপ সম্ভাব্য অন্য ১০০টি নক্ষত্রের মধ্যে গ্রহগুলো খুঁজবো?’
তবে, পৃথিবীর সঙ্গে গ্রহটির মিল খুব কম। নতুন আবিষ্কৃত গ্রহটি তার নক্ষত্রের সঙ্গে ‘টাইডালি-লকড’, অর্থাৎ যখন একটি গ্রহ এমন অবস্থায় পৌঁছায় যেখানে কক্ষপথে চলাকালীন তার ঘূর্ণনের আর কোনো পরিবর্তন হয় না। এ কারণে, গ্রহটির একটি দিক সবসময় তারাটির মুখোমুখি থাকে।
সেই দিকের তাপমাত্রা ১ হাজার ২৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে, এবং এর জমি ফুটন্ত লাভার মতো প্রহাবিত হতে পারে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
গ্রহটির নামের কারণ এটি ‘এইচডি ৬৩৪৩৩’ নামের নক্ষত্রের চারপাশে পাওয়া তৃতীয় গ্রহ। নক্ষত্রটি সূর্যের মতোই একটি তারা ও প্রায় একই আকারের, তবে বয়সে অনেক ছোট। গ্রহটির অবস্থান মাত্র ৭৩ আলোকবর্ষ দূরে এবং একজোড়া দুরবিনের সাহায্যেই দেখা যায়।
নতুন পাওয়া গ্রহটি নাসা’র মহাকাশযান ‘ট্রানজিটিং এক্সোপ্ল্যানেট সার্ভে স্যাটেলাইট’, বা টিইএসএস-এর সাহায্যে আবিষ্কার করা হয়। এটি সৌরজগতের বাইরে বিপুল সংখ্যক গ্রহের খোঁজ দিয়েছে, যার মধ্যে নতুন পাওয়া এই গ্রহমণ্ডলের আরও দুটি গ্রহ রয়েছে।
গবেষণাটি ব্যাখ্যা করা হয়েছে, ‘টিইএসএস হান্ট ফর ইয়াং অ্যান্ড ম্যাচিউরিং এক্সোপ্ল্যানেটস (থাইম) ডট এক্সআই (রোমান হরফ ১১) ডট অ্যান আর্থ-সাইজড প্ল্যানেট অর্বিটিং আ নিয়ারবাই, সোলার-লাইক হোস্ট ইন দ্য ৪০০ মির উরসা মুভিং গ্রুপ’ শীর্ষক নতুন নিবন্ধে, যা প্রকাশ পেয়েছে ‘অ্যাস্ট্রোনোমিকাল জার্নাল’-এ।
আপনার মতামত জানানঃ