ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে ডিজেল জ্বালানি কেনার জন্য বিদেশি সহায়তার অংশ হিসেবে পাঠানো ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে।
ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং তার দোসররা কমপক্ষে ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আত্মসাৎ করেছেন বলে মার্কিন সাংবাদিক সেমুর হার্শের ওয়েবসাইটের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে রাশিয়ার বার্তাসংস্থা তাস। এই অর্থ মূলত ডিজেল জ্বালানি কেনার জন্য তার দেশে পাঠানো হয়েছিল।
বেশ কয়েকটি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে হার্শ তার ওয়েবসাইটে দাবি করেছেন, ‘ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এবং তার সঙ্গীদের অনেকেই ডিজেল জ্বালানি অর্থ পরিশোধের জন্য নির্ধারিত মার্কিন ডলার থেকে অগণিত মিলিয়ন অর্থ সরিয়ে ফেলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার বিশ্লেষকদের অনুমান, গত বছর আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ অন্তত ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।’
হার্শের সূত্র অনুসারে, কিয়েভে দুর্নীতির মাত্রা ‘আফগান যুদ্ধের কাছাকাছি, যদিও ইউক্রেন থেকে কোনও পেশাদার অডিট রিপোর্ট আসবে না’।
এছাড়া হার্শের সূত্র মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভানকে মার্কিন সরকারের চলমান সংকটের জন্য দায়ী করেছে। মূলত হোয়াইট হাউস এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে মতবিরোধের সম্মুখীন হয়েছে মার্কিন সরকার।
হার্শের সূত্রের বরাত দিয়ে রাশিয়ান টেলিভিশন আরটি জানিয়েছে, শীর্ষ এই দুই মার্কিন পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক কর্মকর্তা ইউক্রেন সংঘাতের বিষয়ে ‘কঠোর মতাদর্শ এবং রাজনৈতিক দক্ষতার অভাব’ দেখিয়েছেন।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। আর তারপর থেকেই ইউক্রেনকে সহায়তা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা ইউক্রেনকে আরও ৩৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অস্ত্র ও সরঞ্জাম পাঠাবে। ইউক্রেনের বাখমুত শহরের নিয়ন্ত্রণের জন্য রাশিয়ান বাহিনীর সাথে যুদ্ধ অব্যাহত থাকায় এই সহায়তা দেওয়া হবে।
গত সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেনের দেওয়া কর্তৃত্বে আমি ইউক্রেনের জন্য ৩৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের মার্কিন অস্ত্র ও সরঞ্জামের ৩৪তম সহায়তার অনুমোদন দিচ্ছি।’
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এই সামরিক সহায়তা প্যাকেজে মার্কিন-প্রদত্ত হিমারস এবং হাউইৎজারগুলোর জন্য আরও গোলাবারুদ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যা ইউক্রেন নিজেকে রক্ষা করার জন্য ব্যবহার করছে। একইসঙ্গে পদাতিক যুদ্ধ যান ব্র্যাডলি, এইচএআরএম ক্ষেপণাস্ত্র, অ্যান্টি-ট্যাংক অস্ত্র, নদীপথের নৌকা এবং অন্যান্য সরঞ্জামগুলোর জন্য গোলাবারুদও’ এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করার জন্য সহায়তা দিতে ৫০ টিরও বেশি দেশ একত্রিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এটিকে সাধুবাদ জানায়।
বিবৃতিতে ব্লিংকেন বলেন: ‘রাশিয়া একাই আজ তার যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারে। যতদিন না রাশিয়া সেটি করে, ততদিন আমরা ইউক্রেনের সাথে ঐক্যবদ্ধ থাকব।’
এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের জন্য নতুন নিরাপত্তা প্যাকেজ পরিকল্পনা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। যার মধ্যে ৪২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের নিরাপত্তা সহায়তার অনুমোদনও দেওয়া হয়।
একইসঙ্গে ইউক্রেন সিকিউরিটি অ্যাসিসটেন্স ইনিশিয়েটিভ (ইউএসএআই) তহবিলে ১.৭৫ বিলিযন মার্কিন ডলারও সেসময় অনুমোদন দেওয়া হয়।
এসডব্লিউ/এসএস/১৬৫০
আপনার মতামত জানানঃ