কোভিড-১৯ মহামারিতে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ ঘরে বসে কাজ করতে বাধ্য হওয়ার পর সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সহজ কর্মব্যবস্থা আলোচনায় উঠে আসে। পরীক্ষামূলকভাবে ছয় মাসের জন্য বর্তমানে যুক্তরাজ্যের ৭০টি প্রতিষ্ঠান চার কর্মদিবস সুবিধা দিচ্ছে কর্মীদের। তবে এর জন্য কারও বেতন কাটা হচ্ছে না।
এদিকে গত জুলাই মাসে বাজার বিশ্লেষক মিলিউ ইনসাইটের এক জরিপে উঠে এসেছে, সিঙ্গাপুরে প্রতি ১০ জন কর্মীর মধ্যে সাতজনই সাপ্তাহিক ছুটি তিন দিন চান। আরও ভালো ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপনের জন্য সপ্তাহে সর্বোচ্চ চারদিন অফিস করার পক্ষপাতী তারা।
সোমবার (১ আগস্ট) দ্য স্ট্রেইট টাইমসের বরাতে এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ।
খবরে বলা হয়েছে, সিঙ্গাপুরের কিছু প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে সংক্ষিপ্ত কর্মদিবস চালু করেছে। নিউইয়র্কে তালিকাভুক্ত প্রোপার্টিগুরু গ্রুপের মতো বড় প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সুলতানস অব শেভের মতো সেলুন চেইনশপ, কিংবা ডিপি ডেন্টালের মতো ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মীদের বাড়তি ছুটি দিচ্ছে।
সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের নির্বাহী পরিচালক সিম গিম গুয়ান বলেছেন, তারা যুক্তরাজ্যের ফলাফলের দিকে নজর রাখবেন। তবে বিষয়টিকে অনুমোদন দেবেন না।
তিনি বলেন, এখানে ‘ওয়ান সাইজ ফিটস অল’ (সব ক্ষেত্রে সামঞ্জস্যপূর্ণ) ধরনের কাজের ব্যবস্থা নেই, যা সব কর্মক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হতে পারে।
করোনা মহামারির পর মানুষ কর্ম ও জীবনের মধ্যে একটি ভারসাম্য চায়। তারা কর্মক্ষেত্রে একটু কম সময় ব্যয় করতে চায়।
কর্মোৎপাদনশীলতা বাড়াতে যুক্তরাজ্যে সপ্তাহে তিন দিন ছুটি চালু করেছে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান।
প্রাথমিকভাবে দেশটির ৭০টি প্রতিষ্ঠানের ৩ হাজার ৩০০ কর্মী আগামী ছয় মাস এ সুবিধা পাবেন। তবে এর জন্য আগের মতোই শতভাগ বেতন পাবেন তারা।
ব্যাংক, স্বাস্থ্য, আর্থিক পরিষেবা দেয়া প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে রেস্তোরাঁ ও দোকানের কর্মীরাও রয়েছেন এই তালিকায়।
কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে অলাভজনক কমিউনিটি ফোর ডে উইক গ্লোবাল ও ফোর ডে উইক ইউকে এই ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছে।
২০২৩ সালে এই পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের ফল ঘোষণা করবে কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও বোস্টন কলেজের গবেষক দল।
কর্মীদের জীবনমান এবং প্রতিষ্ঠানে তাদের কর্মক্ষমতা বাড়ল কি না সে বিষয়ে তখন বিস্তারিত জানানো হবে বলে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
এর আগে সাপ্তাহিক ছুটি বাড়িয়ে কর্মদক্ষতা নিয়ে পরীক্ষা চালায় আইসল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের কিছু প্রতিষ্ঠান। এতে কর্মীদের সুস্থ থাকার হার ও উন্নত জীবনমানে বড় পরিবর্তন দেখা যায়।
ফোর ডে উইক ক্যাম্পেইনের প্রধান জো রাইল বলেন, করোনা মহামারির পর মানুষ কর্ম ও জীবনের মধ্যে একটি ভারসাম্য চায়। তারা কর্মক্ষেত্রে একটু কম সময় ব্যয় করতে চায়।
প্রকল্পের প্রধান গবেষক ও বোস্টন কলেজের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক জুলিয়েট স্কোর বলেন, কর্মীরা কীভাবে অতিরিক্ত একটি দিনের ছুটি কাজে লাগায় এবং এর প্রভাব কী তা আমরা দেখব।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৯৫০
আপনার মতামত জানানঃ