পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করাসহ সেতু বাস্তবায়নের পথে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দায়ী করে বিভিন্ন সময়ে বক্তব্য দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেতুর উদ্বোধন ঘিরে প্রসঙ্গটি আরও বেশি আলোচিত হয়।
তবে এতদিন অনেকটা মুখ বুজে থাকলেও বুধবার (২৯ জুন) রাতে এ বিষয়ে নিজের মতামত লিখিত আকারে তুলে ধরেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ইউনূস সেন্টার থেকে পাঠানো জবাবের শিরোনাম দেয়া হয়েছে: ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রফেসর ইউনূসের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহের জবাব’।
ইউনূস সেন্টারের বিবৃতিতে পদ্মা সেতুর বিরোধিতা কিংবা ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে অস্বীকার করে ড. ইউনূস নিজেকে পদ্মা সেতুর স্বপ্নে বিশ্বাসী হিসেবে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি এ ঐতিহাসিক সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দনও জানান।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘এই অভিযোগগুলোর অনেকগুলো কয়েক বছর আগেও করা হয়েছিল। আমরা তখন জবাবও দিয়েছিলাম। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী একই অভিযোগ আবারও করছেন এবং এর সঙ্গে নতুন আরও অভিযোগ যুক্ত করেছেন তাই আবারও জবাব দেওয়ার প্রয়োজন হয়েছে।’
৬০ বছরের বেশি বয়সে দায়িত্বে থাকা প্রসঙ্গে এতে বলা হয়েছে, ‘শুরুতেই পরিষ্কার করা প্রয়োজন যে, গ্রামীণ ব্যাংক এমন একটি ব্যাংক যার ৭৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক এর ঋণগ্রহীতারা। একটি আলাদা আইনের মাধ্যমে কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্য সন্নিবেশ করে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। ফলে অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকেরসঙ্গে এর পার্থক্য আছে। গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয় এর পরিচালনা পরিষদ কর্তৃক নির্ধারিত শর্তে একটি চুক্তির অধীনে। এই নিয়োগের জন্য কোনও বয়সসীমা আইনে বা পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তে উল্লেখ ছিল না।’
‘প্রফেসর ইউনূস ৬০ বছর বয়সে পদার্পণ করলে তিনি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পরিচালনা পরিষদকে জানান যে, যেহেতু তার বয়স ৬০ বছর হয়েছে তারা একজন নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন। পরিচালনা পরিষদ অন্য কোনও সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকেই দায়িত্ব পালন করে যেতে বলেন। পরিচালনা পরিষদ তার বর্তমান নিয়োগের মেয়াদ শেষ হবার পর তাকেই ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে পুনঃনিয়োগ প্রদান করেন। সে সময় তার বয়স ছিল ৬১ বছর ৬ মাস। বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের নিয়মিত পরিদর্শন প্রতিবেদনগুলির একটিতে এ বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দিলে গ্রামীণ ব্যাংক বিষয়টি ব্যাখ্যা করে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরবর্তী প্রতিবেদনে এ বিষয়ে আর কোনও পর্যবেক্ষণ করা হয়নি’।
ড. ইউনূসের বিদেশ ভ্রমণের বিষয়ে বলা হয়, বিদেশ ভ্রমণের জন্য তাকে কখনও জিও নিতে হয়নি, কারণ তিনি সরকারি কর্মচারী ছিলেন না। এ ব্যাপারে সরকার কোনও সময় আপত্তি তোলেনি।
ইউনুস সেন্টারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রফেসর ইউনূস তার চাকরি রক্ষার জন্য মরিয়া হয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শত্রুভাবাপন্ন আচরণ করেছেন বলে প্রধানমন্ত্রী যে অভিযোগ করছেন- বিষয়টি মোটেই তা নয়। প্রফেসর ইউনূস যা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন তা ছিল— ব্যাংকটির আইনি মর্যাদা রক্ষা। কেননা তিনি সবসময় বিশ্বাস করতেন যে আইনি কাঠামোয় তিনি বিগত সকল সরকারের সহায়তায় গ্রামীণ ব্যাংক গড়ে তুলেছিলেন তা দারিদ্র নিরসনে একটি কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে ব্যাংকটিকে সফল করে তুলতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও দাবি করা হয়, ‘২০১০ সালে প্রফেসর ইউনূস তার একজন উত্তরসূরি খোঁজার প্রক্রিয়া শুরু করতে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিতকে অনুরোধ করেছিলেন। যেহেতু তিনি নিজেই একজন যোগ্য উত্তরসূরির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ ছেড়ে দিতে চাইছিলেন। অর্থমন্ত্রী মুহিতকে লেখা প্রফেসর ইউনূসের এই চিঠি সে সময়ে দেশের সকল সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছিল। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, প্রফেসর ইউনূসের বয়স ৬০ বছর অতিক্রম করে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম মেয়াদে ২০০১ সালে। কিন্তু সে সময়ে সরকার তার বয়স নিয়ে কোনও প্রশ্ন উত্থাপন করেনি। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকও এ-নিয়ে কোনও প্রশ্ন করেনি।’
মামলায় হেরে হিলারি ক্লিনটন, টনি ব্লেয়ারের স্ত্রী শেরি ব্লেয়ারকে দিয়ে ফোন করানোর অভিযোগের প্রসঙ্গে ড. ইউনূসের বক্তব্য, ‘গ্রামীণ ব্যাংক থেকে প্রফেসর ইউনূসের অপসারণের সংবাদটি বিশ্বব্যাপী সংবাদে পরিণত হয়েছিল। তবে তা এ কারণে নয় যে তিনি এ পদে থাকতে চেয়েছিলেন। বরং এ কারণে যে বিশ্বব্যাপী গ্রামীণ দর্শন ও এর কর্মপদ্ধতির অনুরাগী ও অনুসরণকারীদের বিশাল কমিউনিটির কাছে এটি ছিল অত্যন্ত অবিশ্বাস্য ও হতবুদ্ধিকর একটি ঘটনা। তারা বিভিন্নভাবে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করছিলেন। তারা প্রফেসর ইউনূসকে তার পদে ফিরিয়ে আনার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছিলেন না, তারা এটা দেখতে চাইছিলেন যে, গ্রামীণ কর্মসূচিগুলির অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক। দরিদ্রদের আশার স্থল হিসেবে বিশ্বজুড়ে গ্রামীণকে দৃষ্টিতে দেখা হয় এটি ছিল তারই একটি বহিঃপ্রকাশ মাত্র। প্রফেসর ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে অপসারণের ঘটনায় বিশ্বব্যাপী যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় তা একটি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র বিষয়। দুর্নীতির কারণে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধে বিশ্ব ব্যাংকের সতর্ক সংকেতের ঘটনা একই সময়ে ঘটেছিল।’
এতে আরও বলা হয়, ‘পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধে প্রফেসর ইউনূস চাপ প্রয়োগ করেছেন এ বিষয়টি প্রথমবার যখন উল্লেখ করা হয় তখনই প্রফেসর ইউনূস এ বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট বক্তব্য দেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সকল মানুষের দীর্ঘদিনের একটি স্বপ্ন। তিনিও এ স্বপ্নে বিশ্বাসী। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টির কোনও প্রশ্নই আসে না।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, আজ পদ্মা সেতুর নির্মাণ সমাপ্ত হওয়ায় দেশের মানুষ আনন্দে উদ্বেলিত। দেশের সকল মানুষের সঙ্গে আমিও প্রধানমন্ত্রীকে এই ঐতিহাসিক সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভিযোগ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিদ্বেষপরায়ণ হয়ে প্রফেসর ইউনূস পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধে তার ‘বিশাল প্রভাব’ কাজে লাগিয়েছেন। প্রফেসর ইউনূস বিশ্ব ব্যাংকের ওপর সরাসরি চাপ প্রয়োগ না করলেও তিনি তার বন্ধু হিলারি ক্লিনটনের মাধ্যমে তা করিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন যে, একটি নামকরা সংবাদপত্রের এক সম্পাদক অর্থায়ন বন্ধে বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্টকে প্ররোচিত করতে বিশ্ব ব্যাংক কার্যালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। আন্তর্জাতিক সিদ্ধান্ত-গ্রহণের কঠিন জগৎ দুই বন্ধুর খেয়াল-খুশি বা একজন পত্রিকা সম্পাদকের সাক্ষাৎ করতে যাওয়ার ওপর নির্ভর করে না। প্রফেসর ইউনূস যত ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ব্যক্তিই হন না কেন, তার যত ‘প্রভাবশালী বন্ধুই’ থাকুক না কেন, একটি ৩০০ কোটি ডলারের প্রকল্প শুধু এ-কারণে বন্ধ হয়ে যেতে পারে না যে, তিনি চাইছিলেন এটা বাতিল হয়ে যাক। প্রফেসর ইউনূস পদ্মা সেতু বিষয়ে বিশ্বব্যাংক বা অন্য কোনও সংস্থা বা ব্যক্তির কাছে কখনও কোনও অভিযোগ বা অনু্যোগ জানাননি। সুতরাং বিষয়টি নিতান্তই কল্পনা প্রসূত।’
‘প্রফেসর ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের কোনও টাকা খেয়ে ফেলেননি। গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তার কর্মকালীন সময়ে বেতনের বাইরে তিনি আর কোনও অর্থ ব্যাংক থেকে গ্রহণ করেননি।
গ্রামীণ ব্যাংকের ৪৭ ভাগ সুদের বিষয়ে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য মোটেই সঠিক নয়। ব্যবসা ঋণের ওপর গ্রামীণ ব্যাংকের সুদ বরাবরই ২০ শতাংশ। যা একটি ক্রমহ্রাসমান সরল সুদ। এটা কখনও বাড়ানো হয়নি। বলা বাহুল্য মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি মাইক্রোক্রেডিটের সর্বোচ্চ সুদের অনুমতি দিয়েছে ২৭ শতাংশ। গ্রামীণ ব্যাংক বরাবরই সরকার নির্ধারিত সুদের হার থেকে অনেক কম সুদে ঋণ দিয়ে গেছে। এছাড়া অন্যান্য সুদের হার আরও অনেক কম। তাছাড়া যেকোনও ব্যাংকের সুদ আয়ের ওপর যে লাভ হয় তার ভাগীদার হন মালিকরা। গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক ২৫ শতাংশ সরকার আর ৭৫ শতাংশ গরিব সদস্যরা। তাই সরকার ও সদস্যরা নিয়মিত লাভ পেয়ে আসছেন। প্রফেসর ইউনূসের এতে একটা শেয়ারও নেই। তাই ৪৭ শতাংশ সুদ নিয়ে কাউকে ঠকানোর কোন সুযোগই তার নেই! প্রফেসর ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অপসারণের পরও এই ঋণ-নীতির কোনও পরিবর্তন হয়নি।’
‘গ্রামীণ ব্যাংকের যত টাকা, সব কিন্তু সে (ইউনূস) নিজে খেয়ে গেছে। নইলে একজন ব্যাংকের এমডি এত টাকার মালিক হয় কীভাবে? দেশে-বিদেশে এত বিনিয়োগ করে কীভাবে?’—প্রধানমন্ত্রীর এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউনূস সেন্টার বলছে, ‘প্রফেসর ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের কোনও টাকা খেয়ে ফেলেননি। গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তার কর্মকালীন সময়ে বেতনের বাইরে তিনি আর কোনও অর্থ ব্যাংক থেকে গ্রহণ করেননি। আন্তর্জাতিক ভ্রমণের জন্যও কোনও সময় তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের টাকা খরচ করেননি। দেশে ও দেশের বাইরে বিনিয়োগ করতে তিনি ব্যাংকের টাকা নিয়েছেন বলে যে দাবি করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ অসত্য।
বর্তমান সরকার দেশের সমস্ত ব্যাংকের সকল শাখা থেকে তার ব্যাংক হিসাবগুলো তদন্ত করে দেখতে আদেশ দিয়েছিল। মিডিয়াতে এই আদেশ ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছিল। তার ট্যাক্স রিটার্নসমূহ বহুবার পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ এসব তদন্তে কোনরূপ অনিয়ম কোনও কর্তৃপক্ষ খুঁজে পেয়েছে এরকম কোনও সংবাদ আমরা কখনও পাইনি। গ্রামীণ ব্যাংকের অনিয়ম খুঁজে বের করার উদ্দেশ্যে সরকার গঠিত একটি রিভিউ কমিটি ও একটি কমিশন বহু চেষ্টা করেও এ ধরনের অর্থ অপসারণের কোনও তথ্য বের করতে পারেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিতভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের সকল হিসাব ও আর্থিক বিষয়াদি নিরীক্ষা করে দেখে। এর কোনও রিপোর্টে প্রফেসর ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক থেকে কোনও টাকা সরিয়েছেন এমন কথা বলা হয়নি। প্রফেসর ইউনূস নিয়মিতভাবে তার কর পরিশোধ করেন এবং ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেন।’
এতে আরও বলা হয়, প্রফেসর ইউনূসের আয়ের উৎস তিনটি। এগুলো হলো বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সম্মেলনে বক্তা হিসেবে প্রদত্ত ভাষণের জন্য লেকচার ফি। তিনি পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশী ফি প্রাপ্ত বক্তাদের অন্যতম। পৃথিবীর ২৫টি ভাষায় প্রকাশিত তার বইগুলোর রয়্যালটি। তার বইগুলোর মধ্যে কোনও কোনওটি নিউইয়র্ক টাইমস-এর বেস্ট সেলার তালিকাভুক্ত। তৃতীয় উৎস প্রথম ও দ্বিতীয় উৎস থেকে প্রাপ্ত অর্থ স্থায়ী আমানত হিসেবে রেখে তা থেকে আয়। প্রথম ও দ্বিতীয় উৎস থেকে প্রতিটি প্রাপ্তির তথ্য কর কর্তৃপক্ষের নিকট নিয়মিত জমা দেওয়া হয়। সুতরাং তার আয়ের উৎস সম্বন্ধে কিছু না জানার কোনও প্রশ্নই উঠতে পারে না। তার লেকচার ও বই থেকে প্রাপ্ত সমস্ত আয় তিনি প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে গ্রহণ করেন। ব্যাংকগুলি থেকে পাওয়া এ সংক্রান্ত ডকুমেন্ট কর কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দেওয়া হয়। ফলে তার আয়ের উৎস সরকারের অজানা একথা একেবারেই সত্য নয়।
ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে ৩ লাখ ডলার অনুদানের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে বলা হয়, প্রফেসর ইউনূস কখনোই ক্লিনটন ফাউন্ডেশনকে কোনও অনুদান দেননি। অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। প্রধানমন্ত্রীকে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে।
গ্রামীণফোনের একটি টাকাও সে গ্রামীণ ব্যাংকে দেননি বলে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে গ্রামীণ ব্যাংককে লভ্যাংশ প্রদান করার কোনও কথা ছিল না। গ্রামীণ ব্যাংক এই জয়েন্ট ভেঞ্চারের কোনও পক্ষ ছিল না। এই জয়েন্ট ভেঞ্চার গ্রামীণফোনের প্রধান অংশীদার নরওয়ের কোম্পানি টেলিনর, যা নরওয়ে সরকারের মালিকানাধীন। প্রফেসর ইউনূস কোনওকালেই গ্রামীণফোনের কোনও শেয়ারের মালিক ছিলেন না। এখনো কোনও শেয়ার নেই। শেয়ার কেনার ইচ্ছাও তার ছিল না। গ্রামীণ টেলিকম দরিদ্র নারী উদ্যোক্তাদের কাছে গ্রামাঞ্চলে ফোন সার্ভিস বিক্রি করতে ‘পল্লী ফোন কর্মসূচি’ চালু করেছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে গ্রামীণ টেলিকমই প্রথম কোম্পানি যা দরিদ্র মানুষের কাছে, বিশেষ করে দরিদ্র মহিলাদের কাছে এবং গ্রামাঞ্চলে টেলিফোন সেবা পৌঁছে দিয়েছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস কোনও একটি ফাউন্ডেশনে ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ দিয়েছিলেন- এক আওয়ামী লীগ নেতা ও সংসদ সদস্য সম্প্রতি এমন বক্তব্য দিয়েছেন। এ বিষয়ে তদন্ত হবে কি না- এমন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা সাংবাদিক। আপনারাও তো তদন্ত করতে পারেন।
এই প্রসঙ্গ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোনও ট্রাস্ট থেকে ৬ কোটি টাকা বা অন্য কোনও অঙ্কের টাকা ২০২০ সালে বা অন্য কোনও সময় প্রফেসর ইউনূসের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়নি। তিনি কোনও ফাউন্ডেশনে ৬ মিলিয়ন ডলার অনুদানও দেননি। এটা সম্পূর্ণ একটা কল্পনাপ্রসূত এবং মানহানিকর অভিযোগ। আগেই বলা হয়েছে, সরকার ইতোমধ্যে ব্যাংকগুলো থেকে প্রফেসর ইউনূসের ব্যাংকিং বিষয়ক তথ্য সংগ্রহ করেছে তাই সকল তথ্যই সরকারের কাছে আছে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৫৫২
আপনার মতামত জানানঃ