চট্টগ্রামে একের পর এক দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে দুর্নীতিবাজদের ভিত কাঁপিয়ে দেওয়া আলোচিত দুদক কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিনকে চট্টগ্রাম থেকে পটুয়াখালীতে বদলির পর এবার তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
বুধবার দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তার চাকরিচ্যুতির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া হয়েছে।
আদেশে বলা হয়, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধি ৫৪ (২) তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মো. শরীফ উদ্দীন, উপ-সহকারী পরিচালক, দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যক্রম, পটুয়াখালীকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো। তিনি বিধি মোতাবেক ৯০ দিনের বেতন এবং প্রযোজ্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন।’
এই আদেশ ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
এর আগে তিনি দুদক চট্টগ্রাম, সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। চট্টগ্রামে কর্মরত থাকাকালীন চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে দুদকের মামলা তদন্তের নামে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে। এমনকি মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনের মাননীয় বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ গত বছরের ২৬ জুন বলেন যে, আদালতের অনুমতি ব্যতীত দুদক কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিন কর্তৃক ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছেন অবৈধভাবে। বিচারপতিদ্বয়ের বেঞ্চ এমনও বলেন যে, দুদক কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিনের এমন তদন্ত উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও ক্ষমতার অপব্যবহার।
জানা গেছে, দুদকের এই বিতর্কিত কর্মকর্তা ভূমি অধিগ্রহণের দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার, সরকারবিরোধী বলয়ের প্ররোচনায় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা, মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ জালিয়াতিপূর্বক বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদানে অনীহা প্রদর্শন, নিজ হেফাজতে থাকা তদন্ত প্রতিবেদন ফাঁসসহ নানা অভিযোগে নিজেই ফেঁসে গেলেন।
দুদক, সজেকা, চট্টগ্রাম ২ (কক্সবাজার) এর মামলা নম্বর-০১ তারিখ ১০/০৩/২০২০ এর বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে উপসহকারী পরিচালক জনাব মো. শরীফ উদ্দিন কক্সবাজার জেলার ভূমি অধিগ্রহণে অনিয়মের তদন্তকার্য শুরু করেন। অভিযোগ রয়েছে, মামলার বিষয় মানি লন্ডারিং হলেও এবং এজাহারে শুধুমাত্র ৩ জনের নাম থাকলেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি উচ্চপদস্থ প্রশাসন ও পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তা, বর্তমানে বিদেশি মিশনে কর্মরত সাংবাদিক নেতা, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ অনেককে ফাঁসাতে চেয়েছিলেন। তবে এ প্রচেষ্টায় তিনি সফল হতে না পেরে বরং নিজেই অসদাচরণ, আইনের ব্যত্যয় ও ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে অভিযুক্ত হয়ে গেলেন।
সহকর্মীদের মানববন্ধন
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পটুয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণের আদেশ বাতিলের দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছেন দুদকের কর্মকর্তারা। একই দাবিতে তারা দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রথমে দুদক সচিবকে দাবি-দাওয়া সংবলিত স্মারকলিপি দেন তারা। পরে দুপুর ১২টার পর দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘কোনোরূপ আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে এবং তিনি কোনোরূপ অপরাধ করেছেন কি না, তা অবহিত না করে ১৬ ফেব্রুয়ারি ৫৪(২) বিধি প্রয়োগের মাধ্যমে উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়, যা অসাংবিধানিক, বেআইনি ও সাধারণ আইনের আওতায় মানবাধিকার পরিপন্থি। আদালতে বিচারাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন কর্মচারী (চাকরি) বিধিমালা, ২০০৮-এর বিতর্কিত ৫৪(২) ধারা মোতাবেক শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণের আদেশ বাতিলের দাবি জানান দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মচারীরা।’
‘দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মচারী হিসেবে আমরা দুদকের মিশন-ভিশন বাস্তবায়নের জন্য দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করি, যার নজির রয়েছে দুদক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন ও তার পরিপ্রেক্ষিতে বিচার চলমানও রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের চাকরি বিধিমালা (কর্মচারী)-২০০৮-এর ৫৪(২) বিধিতে বলা হয়েছে, এ বিধিমালায় ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ না দর্শাইয়া কোনো কর্মচারীকে ৯০ দিনের নোটিশ প্রদান করিয়া অথবা ৯০ দিনের বেতন পরিশোধ করিয়া তাহাকে চাকরি হইতে অপসারণ করিতে পারবে।’
এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ১৩৫(২) অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে, ‘অনুরূপ পদে (প্রজাতন্ত্রের অসামরিক পদে) নিযুক্ত কোনো ব্যক্তিকে তাহার সম্পর্কে প্রস্তাবিত কোনো ব্যবস্থাগ্রহণের বিরুদ্ধে কারণ দর্শাইবার যুক্তিসঙ্গত সুযোগ দান না করা পর্যন্ত তাহাকে বরখাস্ত, অপসারিত বা পদাবনমিত করা যাইবে না।’
বাংলাদেশের সংবিধানের ১৩৫(২) অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে, ‘অনুরূপ পদে (প্রজাতন্ত্রের অসামরিক পদে) নিযুক্ত কোনো ব্যক্তিকে তাহার সম্পর্কে প্রস্তাবিত কোনো ব্যবস্থাগ্রহণের বিরুদ্ধে কারণ দর্শাইবার যুক্তিসঙ্গত সুযোগ দান না করা পর্যন্ত তাহাকে বরখাস্ত, অপসারিত বা পদাবনমিত করা যাইবে না।’
‘দুর্নীতি দমন কমিশন কর্মচারী (চাকরি) বিধিমালা, ২০০৮-এর ৫৪ বিধি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন নং-১৪২৪/২০১১ দায়ের করা হলে ২০১১ সালের ১৭ অক্টোবর হাইকোর্ট বিভাগ দুদক চাকরি বিধিমালার ৫৪ বিধিকে অসাংবিধানিক হিসেবে ঘোষণা করেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে আদালত ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর আপিল খারিজ করে হাইকোর্ট বিভাগের ৫৪ বিধি অসাংবিধানিক ঘোষণাটি বহাল রাখেন। অর্থাৎ ৫৪ বিধি অনুযায়ী দুদকের কোনো কর্মচারীকে সংবিধানের ২৭, ২৯, ২১ ও ৪০ অনুচ্ছেদবলে প্রদত্ত মৌলিক অধিকারের ভিত্তিতে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ হিসেবে ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগ না দিয়ে কাউকে ৯০ দিনের বেতন দিয়ে স্থায়ী রাজস্ব খাতভুক্ত চাকরি থেকে অপসারণের অবকাশ ছিল না। কিন্তু কমিশন আপিল বিভাগের ওই সিদ্ধান্তের বিপরীতে ৩২/২০১৭ সিভিল রিভিশন করলে একতরফা (রিটকারীর প্রতিনিধির অনুপস্থিতিতে) শুনানি করে ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর হাইকোর্টের আদেশটি স্থগিত করেন এবং বিষয়টি উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগে বিচারাধীন। দুর্নীতি দমন কমিশন চাকরি বিধিমালা ২০০৮-এর ৫৪ বিধির কার্যকারিতার বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় দুদকে ২০১৪ সালে যোগদান করা একজন কর্মকর্তাকে কোনোরূপ আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে এবং তিনি কোনোরূপ অপরাধ করেছেন কি না, সে বিষয়টি তাকে অবহিত না করে ১৬ ফেব্রুয়ারি ৫৪(২) বিধি প্রয়োগের মাধ্যমে উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়, যা অসাংবিধানিক, বেআইনি ও সাধারণ আইনের আওতায় মানবাধিকার পরিপন্থি।’
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ‘মো. শরীফ উদ্দিন চট্টগ্রামে দক্ষ ও পরিশ্রমী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত। তিনি তার চট্টগ্রাম অফিসে কর্মরত থাকাকালীন ৫২টি মামলা করেন। এছাড়া তিনি আদালতে বিচারের জন্য ১৫টি অভিযোগপত্র (চার্জশিট) প্রস্তুত ও দাখিল করেন। শরীফ উদ্দিন কক্সবাজারে ভূমি অধিগ্রহণের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা উদ্ঘাটনসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান ও তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। শরীফ উদ্দিনের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানের কারণে সংক্ষুব্ধ পক্ষগুলো বিভিন্ন সময়ে তাকে নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। অথচ ৫৪(২) বিধি প্রয়োগের মাধ্যমে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে, যা প্রকারান্তরে দুর্নীতিবাজদের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ারই সমার্থক।’
‘এমতাবস্থায় মো. শরীফ উদ্দিনকে অসাংবিধানিক ও অমানবিক অপসারণ আদেশ প্রত্যাহার ও দুর্নীতি দমন কমিশন কর্মচারী (চাকরি) বিধিমালা, ২০০৮ এর ৫৪(২) বিধি বাতিলপূর্বক কমিশনের কর্মকর্তাদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
জীবননাশের হুমকি পেয়ে শরীফ উদ্দিনের জিডি
গত ৩০ জানুয়ারি দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন চট্টগ্রামের খুলশী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন, যার নম্বর ১৬৪৫। জিডিতে তিনি পেট্রোবাংলার অধীনস্থ ‘কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (পিআরএল) মো. আইয়ুব খান চৌধুরী ও তার সহযোগীর নাম উল্লেখ করেন। নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জীবননাশের শঙ্কায় রয়েছেন জানিয়ে জিডিতে তিনি নিরাপত্তা চেয়েছেন।
শরীফের দুর্নীতিবিরোধী আলোচিত যত অভিযান
চট্টগ্রাম দুদক কার্যালয়ে দায়িত্ব পালনের সময় শরীফ উদ্দিন ২০২১ সালের ১৬ জুন হালনাগাদ ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে অর্ন্তভুক্ত করার অভিযোগে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পরিচালকসহ ইসির চার কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
ওই বছর ১৫ জুন রোহিঙ্গা নাগরিকদের অবৈধ উপায়ে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদান ও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তকরণের ঘটনায় ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সরফরাজ কাদের রাসেলসহ ৬ জন এবং ১২ জুন ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইসমাইল বালিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
১০ জুন দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ প্রদান করায় সাবেক প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলামের (বিএসসি) বড় ছেলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মো. মুজিবুর রহমান, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. সারওয়ার হোসেন, সাবেক ব্যবস্থাপক মো. মজিবুর রহমান, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, সার্ভেয়ার মো. দিদারুল আলমের বিরুদ্ধে মামলা করে আলোচনায় আসেন শরীফ উদ্দিন।
এ মামলায় মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. সারওয়ার হোসেন, সাবেক কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান ও সার্ভেয়ার মো. দিদারুল আলমকে গ্রেপ্তারও করে দুদক। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়াও ২০২১ সালে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার হাইওয়ে সংলগ্ন কলাতলী বাইপাস রোড এলাকায় পিবিআই অফিস তৈরির জন্য এক একর জমি অধিগ্রহণে জালিয়াতির ঘটনা উঠে আসে শরীফ উদ্দিনের তদন্তে।
এ ঘটনাসহ কক্সবাজারের মেগা উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর জমি অধিগ্রহণের দুর্নীতিতে জড়িত বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি ও রাজনীতিকের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তার করা হয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্তে চট্টগ্রামে নামে দুদক। পরে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার ও বেশ কয়েকটি মামলাও করেছিলেন শরীফ উদ্দিন।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে খালাসি পদে ১৯ জনকে নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে এক কোটি ২ লাখ ৪৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে পূর্বাঞ্চলের সাবেক মহাব্যবস্থাপকসহ চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। একই মামলায় দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত খালাসি, ঠিকাদার, স্কুল শিক্ষক, পিয়ন, রেলের ড্রাইভারসহ আরও ৮ জনকে আসামি করা হয়। গত বছরের জানুয়ারিতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় দুর্নীতি ও নানা অনিয়মে জড়িত থাকা একজন শীর্ষ দালাল ও সাবেক একজন সার্ভেয়ারকে আটক করেছিলেন তিনি।
এভাবে নানা আলোচিত অভিযান পরিচালনা করে আলোচনায় আসে শরীফ উদ্দীনের নাম। কিন্তু এসব আলোচিত অভিযান তার জন্য কাল হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
গত বছরের ১৬ জুন দুদক পরিচালক মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে মো. শরীফ উদ্দিনকে চট্টগ্রাম থেকে পটুয়াখালীতে বদলি করা হয়। শরীফের রহস্যময় এমন বদলি জন্ম দেয় নানা প্রশ্নের।
আলোচিত দুদক কর্মকর্তা মো. শরীফের এ বদলিকে স্বাভাবিক চোখে দেখেননি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলকারী সংগঠকসহ বিশিষ্টজনরা। তার আকস্মিক বদলি নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনা ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৭০৩
আপনার মতামত জানানঃ