করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতির মধ্যেই নাইজেরিয়ায় কলেরার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যেই কলেরায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে নাইজেরিয়া। চলতি বছর দেশটিতে কলেরায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৭০ হাজার মানুষ। এর মধ্যে মারা গেছেন ২৩শ’র বেশি। খবর আনাদোলু
গত কয়েক বছরের মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ কলেরায় আক্রান্তের সংখ্যা। ৩৬ রাজ্যের মধ্যে ২৫টিতে কলেরা ছড়িয়ে পড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। দেশটিতে কলেরায় মৃতের হার করোনার প্রায় দ্বিগুণ।
পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো বন্যা কবলিত হওয়ায় সংক্রমণ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বর্তমানে করোনার তৃতীয় ঢেউ চলছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে। করোনার পাশাপাশি কলেরার সংক্রমণ ঠেকাতে হিমশিম অবস্থা কর্তৃপক্ষের। চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা জানিয়েছেন স্বাস্থ্যবিদরা।
বোর্নো রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এরইমধ্যে কলেরাকে মহামারি ঘোষণা করেছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, মহামারি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দারিদ্র্যপীড়িত বোর্নো রাজ্যে দুর্বল পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা আর অপ্রতুল স্বাস্থ্যসেবাকে কলেরা ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ মনে করা হয়। এ ছাড়া নাইজেরিয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাবও রয়েছে।
স্বাস্থ্য বিষয়ক স্টেট কমিশনার কাবিরু গেতসো কানো নগরীতে সাংবাদিকদের জানান, পদক্ষেপগুলোর মধ্যে মহামারি প্রবণ সকল এলাকা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি কারো বমি অথবা ডায়রিয়া হচ্ছে কিনা তারও সন্ধান চালানো হচ্ছে।
জাতিসঙ্ঘের এক রিপোর্টে বলা হয়, নাইজেরিয়ার লেক শাদ এলাকায় ২০১৮ সালে পাঁচ শতাধিক মানুষ কলেরায় মারা গেছেন। গত চার বছরের মধ্যে এটাই অঞ্চলটিতে কলেরার সবচেয়ে বড় সংক্রমণ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, দুর্বল স্যানিটেশন ব্যবস্থা সম্পন্ন গরীব দেশগুলোতে প্রতিবছর ২১ হাজার থেকে এক লাখ ৪৩ হাজার মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
সম্প্রতি নাইজেরিয়ার নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক ওলে সোয়িঙ্কা দেশটিতে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করেছেন। বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি সতর্ক না হই, কৃষকেরা যদি খামারে না যায়, তাহলে দুর্ভিক্ষ হতে পারে।’
বিষয়টি সংকটজনক বলে মন্তব্য করেন ওলে সোয়িঙ্কা। তিনি বলেন, ‘খাদ্য উৎপাদকদের জীবিকা আমরা নষ্ট করে দিচ্ছি।’ তিনি অভিযোগ করেন, খামারিদের অপহরণ করা হয়েছে এবং হত্যা করা হয়েছে।
ওলে সোয়িঙ্কা বলেন, কমিউনিটি পুলিশ খামারিদের সংকটের সমাধান করতে পারে।
সরকার গবাদিপশুর আলাদা বিচরণক্ষেত্রে নেওয়ার প্রস্তাব করেছে। তবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি রাজ্যের গভর্নর এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা তাদের নিজস্ব নিরাপত্তাব্যবস্থা চালু করেছে। এর নাম অ্যামোটিকাম।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৬২৮
আপনার মতামত জানানঃ