ডেঙ্গুর বিস্তার মহামারির মত ছড়াতে শুরু করেছে। প্রতি ঘন্টায় গড়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে প্রায় ১২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ২৭৫ জন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ২২০ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৫ জন। এ নিয়ে দেশে ডেঙ্গু শনাক্তের সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, সবমিলিয়ে এই বছরে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ৫২ জন মানুষ। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অধিকাংশ রোগীই রাজধানীর বাসিন্দা।
আজ সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সারাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের নিয়মিত ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন ২৭৫ জন ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ভর্তি থাকা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৩৩ জনে।
ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১ হাজার ৭৪ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৫৯ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আজ (৬ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত হাসপাতালে সর্বমোট রোগী ভর্তি হয়েছেন ১২ হাজার ৯১ জন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ১০ হাজার ৮০৬ জন রোগী। ডেঙ্গুতে এ বছর ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে আজ সোমবার আজ সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ব্যক্তিগত উদ্যোগে মানববন্ধনের আয়োজন করেন শিশু সাহিত্যিক ও চিত্রাঙ্কন শিল্পী সাইফুল্লাহ নবীন। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, ঢাকার ঘরে ঘরে ডেঙ্গু ছড়িয়েছে। তিনি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিতে সিটি করপোরেশনের প্রতি সুদৃষ্টি চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানিয়েছেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শনির আখড়ার অন্যান্য বাসিন্দারা বলেন, সিটি করপোরেশনের কোনও কাজ দেখা যাচ্ছে না। এ সময়ে এডিস মশা ধ্বংস করুন, না হলে আমাদের কেউ এই রোগ থেকে রেহায় পাবো না। আমরা এডিস মুক্ত বাংলাদেশ চাই, ডেঙ্গু থেকে আমাদের বাচাঁন।’
স্বাস্থ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ছয়টি হাসপাতালকে ডেঙ্গুর জন্য ডেডিকেটেড (বিশেষায়িত) বলে দেওয়া হলেও হাসপাতালগুলোর সবক’টি এখনও চিকিৎসা শুরু করতে পারেনি। জনবল সংকটের সঙ্গে রয়ে গেছে যন্ত্রপাতির অভাব ও অবকাঠামোগত সমস্যা। এমনকি ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা শুরু করতে সরকারি অর্ডারই পায়নি ডেডিকেটেড ঘোষিত হাসপাতালগুলো।
তারা বলেন, বর্তমান সময়ে যারা স্বাস্থ্যের দায়িত্বে কাজ করছেন তারা কোনোভাবেই এর যোগ্য নন। তারা যা বলেন, তার সঙ্গে বাস্তবতার যোগ নেই। গণমাধ্যমের সামনে এলেই একটা কিছু বলতে হবে, তারা এমনটা ভেবে বসে আছেন বলেই আজ এ অবস্থা।
তারা বলেন, সরকার স্বাস্থ্যের জন্য টাকা ঢালছেন ঠিকই কিন্তু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে যারা আছেন তাদের জন্য কোনো কাজেই আসছে না। এ জন্য সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানান তারা।
এসডব্লিউ/এমএন/ডব্লিউজেএ/২২৩৭
আপনার মতামত জানানঃ