বর্ষা মৌসুমে সেতুটির বেশিরভাগ অংশ তলিয়ে যায় পানির নিচে। আর শুকনো মৌসুমে মই ছাড়া ওঠা অসম্ভব হয়ে পড়ে। মই ছাড়া উঠতে না পারা এই সেতুটি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের হযরতপুর এলাকায় অবস্থিত। লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতুটি নির্মাণ করা হলেও দুই পাশে ভরাট রাস্তা না থাকায় তা কাজে আসছে না। সেতু দিয়ে চলাচল করতে প্রয়োজন হচ্ছে মইয়ের।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের অর্থায়নে ২০১৯-২০ অর্থবছরে মিঠাপুকুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের হযরতপুর গ্রামে ২৯ লাখ ১৭ হাজার ৪শত টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
সেতুর এক পাশে আছে বসতবাড়ি, আরেক পাশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দোকানপাট। প্রতিদিনই শত শত মানুষ মই বেয়ে সেতুতে উঠে খাল পাড়ি দেয়। এর দুই পাশে মাটি ভরাট না থাকায় বর্ষায় চলাফেরায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানালেন, প্রকল্প এখনও শেষ হয়নি। নির্মাণাধীন প্রকল্প বলে স্থানীয়দের এই ভোগান্তি হচ্ছে।
মই দিয়ে সেতু পার হওয়ার সময় স্থানীয় বাসিন্দা লোকমান মিয়া এক জাতীয় দৈনিককে বলেন, ‘জানি না এ সেতুটা কেন বানাইছে। উপকার তো দূরের কথা দূর্ভোগের স্থান হয়ে দাড়াইছে সেতুটা। দুপাশে রাস্তা করে দিলেই তো মানসের কাজে লাগতো ভালো কইরা।’
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা আফসার আলী বলেন, ‘সেতুর দুপাশে রাস্তা করা প্রয়ােজন। রাস্তা না হওয়ার কারনে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসীদের চরম দূর্ভোগ নিয়ে চলাচল করতে হয়। রাস্তা না হলে এই সেতু কোনও কাজে আসবে না।’
মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মিয়া বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সময়ে ওই স্থানে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। তবে সেতুর দুই পাশে রাস্তায় মাটি কেটে রাস্তাটি দৃশ্যমান করে না তােলায়, যাতায়াতের ক্ষেত্রে কিছুটা দূর্ভোগ হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদে রাস্তা নির্মাণের জন্য সরকারী বরাদ্দ পাওয়া গেলে সেতুর দুপাশে রাস্তা নির্মাণের কাজ করা হবে।’
মিঠাপুকুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মােশফিকুর রহমান বলেন, ‘সেতুর দুই পাশে অবশ্যই রাস্তায় মাটি ভরাট করে দেওয়া হবে। মাটি না পাওয়ার কারনে সেতুর দুই পাশে ভরাট করা সম্ভব হয়নি। দ্রুত রাস্তায় মাটি দিয়ে চলাচলে উপযুক্ত করা হবে।’
দূর থেকে সেতুটি দেখলে চমকে উঠবে যে কেউ। দুপাশে দুটো মই রাখা আছে। এই মই বেয়ে পার হতে হয় সবাইকে। কিন্তু বয়স্ক, নারী ও শিশুরা আছে বিপাকে। অনেকেই এটি পার হতে গিয়ে আহত হয়েছেন।
গ্রামবাসীকে এমন ভোগান্তিতে ফেলার বিরোধিতা করে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যেকোনো প্রকল্প শুরু করার আগে প্রাথমিক পরিকল্পনাগুলোর দায়িত্ব যোগ্য মানুষকে দেয়া উচিৎ। কোন প্রকল্প তৈরী করতে কতটা সময় দরকার, সঠিক সময়ের মধ্যে প্রকল্প শেষ করা সম্ভব কি না, সঠিক স্থানে প্রকল্প নিশ্চিতকরণসহ প্রতি ক্ষেত্রেই সুষ্ঠু পরিকল্পনার জন্য দরকার যোগ্য লোকবল। নয়তো এভাবে ভোগান্তি কখনোই দেশের মানুষের পিছু ছাড়বে না।
এসডব্লিউ/এমএন/ডব্লিউজেএ/২২২২
আপনার মতামত জানানঃ